বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিগগিরই জিআই সনদ পাচ্ছে ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি

প্রকাশিত: ১১:৪৭ এএম, অক্টোবর ২১, ২০২১

শিগগিরই জিআই সনদ পাচ্ছে ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি

বাংলাদেশের ফজলি আম এবং বাগদা চিংড়ি খুব শীঘ্রই জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেটর বা জিআই সনদ পেতে যাচ্ছে। সরকারের পেটেন্টস, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্ক বিভাগের রেজিস্টার মো. আবদুস সাত্তার বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ির জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে গেজেট প্রকাশ করা হয়ে গেছে। আর দিন পনেরোর মধ্যে সনদ দেওয়ার কাজ শেষ হবে। তিনি জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী স্বীকৃতির জন্য আবেদন আসার পরে এ দুটি কৃষি পণ্যের ভৌগলিক নির্দেশক যাচাই করা হয়েছে, দুটি জার্নাল প্রকাশ করা হয়েছে। এসব পণ্যের নির্দেশক নিয়ে এখনো কেউ আপত্তি করেনি। জার্নাল প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে এটি নিজেদের বলে কেউ আপত্তি না করলে সনদ দেওয়া হবে। ফজলি আমের জিআই সনদের আবেদন করেছিল ফল উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র। আর বাগদা চিংড়ির জন্য আবেদন করে মৎস্য অধিদপ্তর। যে কারণে এই দুটি পণ্যে বাংলাদেশের স্বীকৃতি আমের মৌসুমের শেষের দিকে বাজারে আসা ফজলি পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও উৎপাদন করা হয়। আর লবণাক্ত পানির বাগদা চিংড়ি এশিয়ার বেশ কিছু দেশে হয়। এই কৃষি পণ্য দুটি বাংলাদেশের জিআই সনদ কেন পাবে সেটি ব্যাখ্যা করে মো. আবদুস সাত্তার বলছেন, যে পণ্য একটি অঞ্চলের ঐতিহ্যের অংশ সেটির ক্ষেত্রে এ সনদ দেওয়া হয়। আবহাওয়া, মাটি, পানি ও ভৌগলিক গঠনের ওপর যেকোনো কৃষি পণ্যের বৈশিষ্ট্য, ঘ্রাণ ও স্বাদ নির্ভর করে এবং নির্দিষ্ট অঞ্চলেই সেটা হবে। তিনি বলেন, যেমন এশিয়ার বেশ কিছু দেশে ব্ল্যাক টাইগার শ্রিম্প বা বাগদা চিংড়ি পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের এখানে যেটা হয় সেটার বৈশিষ্ট্য অন্য কোনটার সঙ্গে মিলবে না। অন্য কোথাও চাষ হলেও সেটার স্বাদ ও ঘ্রাণ মিলবে না। বাংলাদেশের মোট নয়টি পণ্য এ পর্যন্ত জিআই সনদ পেয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ইলিশ মাছ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি আম, দিনাজপুরের কাটারিভোগ ও বাংলাদেশি কালিজিরা, জামদানি, ঢাকাই মসলিন, রাজশাহীর সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি এবং নেত্রকোনার বিজয়পুরের সাদা মাটি। বাগদা চিংড়ি একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী প্রাণী। বাংলাদেশে ৮০'র দশক থেকে এর বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে। এটি বিদেশে রপ্তানিও হচ্ছে। তবে কাছাকাছি সময়ে এর রপ্তানি কিছুটা পড়ে গেছে। সাত্তার বলেন, আমরা দেখেছি যে জিআই সনদ পাওয়ার পর বিদেশের বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। জিআই ট্যাগ ব্র্যান্ডিং হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ থেকে অনেকে বাগদা চিংড়ি রপ্তানি করছে। জিআই সনদ না থাকলে এর মূল্য কম হয়। ক্রেতারা এটিকে ব্র্যান্ডেড বলে মনে করে না। বিসিকের তথ্য অনুযায়ী জামদানি জিআই সনদ পাওয়ার পর রপ্তানি এবং এর মূল্য দুটোই বেড়েছে। তিনি বলেন, জিআই সনদ পেলে বাংলাদেশ পণ্যটি উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনি সুরক্ষা পাবে। অন্য কোন দেশ আর সেগুলোকে নিজেদের বলে দাবি করতে পারবে না।
Link copied!