বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ হলো বইমেলা, সাড়ে ৫২ কোটি টাকার বই বিক্রি

প্রকাশিত: ০১:৩৩ এএম, মার্চ ১৮, ২০২২

শেষ হলো বইমেলা, সাড়ে ৫২ কোটি টাকার বই বিক্রি

মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলায় এবার প্রায় ৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমির বই বিক্রি হয়েছে এক কোটি ২৭ লাখ টাকার। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে অমর একুশে বইমেলার শেষ দিনে মূল প্রতিবেদনে বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ড. মো. জালাল আহমেদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, বইমেলায় বাংলা একাডেমিসহ সকল প্রতিষ্ঠানের বই ২৫ শতাংশ কমিশনে বিক্রি হয়েছে। ২০২০ সালে বাংলা একাডেমি মোট ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছিল। এবার ১৬ মার্চ পর্যন্ত ৩০ দিনে বাংলা একাডেমি ১ কোটি ২৭ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছে। ২০২১ সালে একাডেমি মাত্র ৪৬ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছিল। ২০২০ সমগ্র মেলায় ৮২ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেরিতে বইমেলা শুরু হলেও নির্ধারিত সময়ে বইমেলা শেষ হয়েছে আজ। এদিন নতুন বই এসেছে ২১৫টি। এরমধ্যে গল্প ২৯টি, উপন্যাস ২৭টি, প্রবন্ধ ৯টি, কবিতা ৭৩টি, গবেষণা ৫টি, ছড়া ৫টি, শিশুসাহিত্য ৮টি, জীবনী ৩টি, রচনাবলী ৩টি, মুক্তিযুদ্ধ ৪টি, নাটক ১টি, ধর্মীয় ৩টি, অনুবাদ ২টি, সায়েন্স ফিকশন ১২টি, ভ্রমণ ৩টি, ইতিহাস ৬টি, রাজনীতি ১টি, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য ২টি, বঙ্গবন্ধু ৬টি, রম্য/ধাঁধা ৩টি, বিজ্ঞান ২টি, অভিধান ১ ও অন্যান্য ৭টি। এদিকে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের কর্মসূচি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমি বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। সকাল সাড়ে ৮টায় জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিকেল ৩টায় অমর একুশের মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান। অমর একুশে বই মেলায় স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নজরুল ইসলাম, স্বদেশ রায় এবং মিজানুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলার জনগণের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও অগাধ বিশ্বাস ছিল বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ে। তিনি বিশ্বাস করতেন জনগণই ইতিহাস রচনা করে। তাই জনগণকে ইতিহাসের রূপকার হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু। এভাবেই বঙ্গবন্ধু বাঙালির হাজার বছরের স্বাধীনতার আকুতিকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন। সভাপতির বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, আমাদের শিশুদেরকে বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও ভাবনায় উদ্দীপ্ত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মানবিকবোধ শিশুদের মাঝে সঞ্চারিত করতে পারলে আলোকিত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। বিকেল ৪টায় ভাষা শহীদ মুক্তমঞ্চে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অমর একুশে বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান বিকেল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অসিম কুমার দে। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। স্বাগত ভাষণে মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, এবারের বইমেলা ছিল অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও অংশগ্রহণমূলক। পরিসর বৃদ্ধিসহ নানা উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে মেলাকে সার্থক করে তোলার যথাসাধ্য চেষ্টা আমরা করেছি। কে এম খালিদ বলেন, গত বছর করোনা মহামারির ভয়াবহতায় আমরা বইমেলা শুরু করেও নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ করতে বাধ্য হয়েছি। তবে এবার বইমেলা শুরুতে বিলম্ব হলেও সংস্কৃতিবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহ ও আনুকূল্যে ১৫ই ফেব্রুয়ারি বইমেলা শুরু হয়ে বইমেলা শেষ হচ্ছে। অমর একুশে বইমেলার প্রায় চার দশকের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী বইমেলা। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব অসীম কুমার দে বলেন, অনিশ্চয়তার মধ্যে শুর হলেও এবারের বইমেলা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে যা সবার জন্যেই অতি আনন্দের বিষয়। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও অংশগ্রহণে এবারের মেলা নিঃসন্দেহে সার্থক-রূপ লাভ করেছে। সূত্র : বাসস
Link copied!