শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরিষা ফুলে হলুদ চলনবিলের মাঠ

প্রকাশিত: ০১:০৫ পিএম, ডিসেম্বর ৫, ২০২১

সরিষা ফুলে হলুদ চলনবিলের মাঠ

সরিষা ফুলের সমারোহে হলুদাভ হয়ে উঠেছে চলনবিলের মাঠগুলো। দিগন্তছোঁয়া হলুদাভ বর্ণে বদলে গেছে চলনবিলের রূপ। কৃষকরা আশা করছেন এবার বাম্পার ফলনের। এ কারণে কৃষকরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও। এ বছর চলনবিল অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস সূত্র। চলনবিলের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, শাহজাদপুর, ভাঙ্গুড়া ও সিংড়া উপজেলার মাঠগুলো ভরে উঠেছে হলুদ বর্ণের সরিষা ফুলে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর সরিষা আবাদে তেমন কোনো পোকার আক্রমণ না থাকায় কৃষকরা বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করছেন। সবাই বলছে তুলনামূলকভাবে এ বছর সরিষার আবাদ অনেক ভালো হয়েছে। তা ছাড়া সময়মতো সার-কীটনাশক ব্যবহারের কারণে সরিষার আবাদ করতে কৃষককে বেগ পেতে হচ্ছে না। পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে জেলা কৃষি অফিস থেকে আগেই বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার লুনা জানিয়েছেন, এ বছর তাড়াশ উপজেলায় ৪ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। তাড়াশ উপজেলার ভাদাস গ্রামের কৃষক শাহ আলম বলেন, চলনবিলাঞ্চলে দ্রুত বন্যার পানি নেমে যাওয়ার কারণে আগাম সরিষার চাষ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, একসময় চলনবিলের কৃষকরা শুধু ইরি-বোরোর মতো এক ফসল আবাদ করে হাজার হাজার হেক্টর জমি পতিত রাখত। কালের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ অঞ্চলের কৃষকদেরও চাষ পদ্ধতিও অনেক উন্নত হয়েছে। কৃষকরা বিগত দেড় যুগ ধরে ইরি-বোরো, আমন, ভুট্টা ও সরিষার আবাদে ঝুঁকছে। গত কয়েক বছর ধরে বন্যার পানি কম ও দ্রুত পানি মাঠ থেকে নেমে যাওয়ার ফলে সরিষার আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে বলে তিনি জানান। তাড়াশ উপজেলায় নওগাঁ ইউনিয়নে চৌপাকিয়া গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, সময়মতো বীজ ও সার পাওয়ায় এবং বন্যার পানি যথাসময়ে নেমে যাওয়ায় এ অঞ্চলে ব্যাপক হারে সরিষার আবাদ হয়েছে। তা ছাড়া এ বছর সরিষার গাছ যে সুন্দর দেখা যাচ্ছে তাতে ঘন কুয়াশা ও খুব বেশি শীত না পড়লে এবং কীটপতঙ্গের আক্রমণ না হলে সরিষার আশাতীত ফলন হবে। ৬৫ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে খুব অল্প পরিশ্রমে সরিষা ঘরে তোলা সম্ভব। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, এ বছর কৃষককে সরিষা চাষে ব্যাপকভাবে সচেতন করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মতবিনিময় সভা ও উঠান বৈঠক করা হয়েছে। সরিষা চাষের পদ্ধতি ও পোকার আক্রমণ হলে কী করণীয় সে বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করা হয়েছে। তা ছাড়া কর্মকর্তারা সবসময় মাঠ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে নিঃসন্দেহে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে।
Link copied!