শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাকিবের ব্যাটে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ১১:১৫ এএম, জুলাই ১৯, ২০২১

সাকিবের ব্যাটে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

শেষ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল তিন রান। প্রথম বলেই ব্লেসিং মুজারাবানিকে চার মেরে সমীকরণ মিলিয়ে ফেললেন সাকিব আল হাসান। তার চওড়া ব্যাটেই এক যুগ পর জিম্বাবুয়ের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। রোববার হারারেতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে তিন উইকেটে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে সফরকারীরা। সিরিজ জয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগের ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়ে দলের দাপুটে জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন সাকিব। কাল বোলিংয়ের পাশাপাশি দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে উদ্ধার করেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। জিম্বাবুয়ের ২৪০ রানের জবাবে ৫০ রানে তিন ও ১৭৩ রানে সাত উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তিনে নামা সাকিব একপ্রান্ত আগলে রেখে ঠিকই জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দেন দলকে। মাত্র চার রানের জন্য প্রাপ্য সেঞ্চুরি না পেলেও আট চারে সাজানো ১০৯ বলে তার অপরাজিত ৯৬ রানের অসাধারণ ইনিংসটিই ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। অষ্টম উইকেটে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে (২৮*) নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৬৯ রানের জুটিতে জিম্বাবুয়ের মুঠো থেকে ম্যাচ বের করে নেন সাকিব। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর দেশের বাইরে এটাই সাকিবের প্রথম ফিফটি। ওয়ানডেতে নিজের ৪৯তম ফিফটির পথে বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১২ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন তিনি। এর আগে বোলিংয়ে ৪২ রানে দুই উইকেট নেন ম্যাচসেরা সাকিব। সাকিব ও সাইফউদ্দিন ছাড়া বলার মতো রান শুধু মাহমুদউল্লাহর ২৬। এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নয় উইকেটে ২৪০ রান তুলেছিল জিম্বাবুয়ে। তাদের মিডলঅর্ডারে পাঁচ ব্যাটসম্যান পেরিয়ে যান ২৫। কিন্তু ফিফটি করতে পারেন শুধু ওয়েসলি মাধেভেরে। তিনি থামেন ৫৬ রানে। বাংলাদেশ খুব ভালো বোলিং করতে না পারলেও নাগালের বাইরে যেতে দেয়নি জিম্বাবুয়েকে। সফলতম বোলার তরুণ বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। আগের তিন ওয়ানডেতে তার উইকেট ছিল মোট তিনটি। চতুর্থ ম্যাচে পেয়ে গেলেন ৪৬ রানে চার উইকেট। দলের সেরা বোলার মোস্তাফিজুর রহমান চোট না পেলে এই সিরিজে হয়তো একাদশে সযোগই পেতেন না শরিফুল। কন্ডিশন একটু কঠিন হলেও উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু জিম্বাবুয়ে পায়নি ভালো শুরু। প্রথম ওভারেই বাংলাদেশ পায় উইকেটের দেখা। যেটি মূলত উপহার। তাসকিন আহমেদের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে পয়েন্টে আফিফ হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনাশে কামুনহুকামউই। আরেক ওপেনার টাডিওয়ানাশে মারুমানি পঞ্চম ওভারে আউট হতে পারতেন তিনবার। তাসকিনের ওভারে দ্বিতীয় বলে মিডঅনে ক্যাচ নিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ, পরের বলে থার্ডম্যান বাউন্ডারিতে বল হাতে নিয়েও ফেলে দেন সাইফউদ্দিন। ওই ওভারেই আরেকবার বল অল্পের জন্য যায়নি বোলার তাসকিনের কাছে। তবে পরের ওভারে নিজের পতন ডেকে আনেন মারুমানি নিজেই। মেহেদী হাসান মিরাজের সোজা বলে বাজেভাবে স্লগ করে বোল্ড। সেই ধাক্কা অনেকটাই সামাল দেন দুই অভিজ্ঞ রেজিস চাকাবভা ও ব্রেন্ডন টেলর। ৪৭ রানের এই জুটি ভাঙেন সাকিব। বলের লাইন মিস করে চাকাবভা বোল্ড হন ২৬ রান করে। জিম্বাবুয়ের জন্য বড় হতাশা হয়ে আসে পরের উইকেট। অনায়াস ফিফটির দিকে এগোচ্ছিলেন টেলর। শরিফুলের বলে হিট উইকেট হয়ে ৫৭ বলে ৪৬ করে ফেরেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। ডিওন মায়ার্স ও মাধেভের এরপর দলকে এগিয়ে নেন একটু। মায়ার্সকে ৩৪ রানে থামান সাকিব। জিম্বাবুয়ের রান তখন পাঁচ উইকেটে ১৪৬। ইনিংসের একমাত্র ফিফটি জুটি আসে এরপরই। অভিজ্ঞ সিকান্দার রাজাকে নামানো হয় সাতে। তার সঙ্গে জুটিতে দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন মাধেভের। অষ্টম ওয়ানডেতে তৃতীয় ফিফটিতে পা রাখেন ৫২ বলে। এরপর যখন শেষ দিকে দ্রুত রান তোলার পালা, তখনই তার বিদায়। শরিফুলের স্লোয়ার উড়িয়ে মারতে গিয়ে তামিম ইকবালের দুর্দান্ত ক্যাচে তাকে থামতে হয় ৫৬ রানে। শরিফুল শেষ দিকে উইকেট পান আরও দুটি। সিকান্দার রাজাও আউট হয়ে যান ৪৪ বলে ৩০ করে। শেষ ১০ ওভারে জিম্বাবুয়ে করতে পারে মাত্র ৫৫ রান।
Link copied!