বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হালাল ব্যবসার কথা বলে পাবনায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ

প্রকাশিত: ০৯:১৬ এএম, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১

হালাল ব্যবসার কথা বলে পাবনায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ

ডেইলি খবর ডেস্ক: হালাল ব্যবসার কথা বলে পাবনায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ। হালাল উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে পাবনার এক স্কুলশিক্ষিকার বিরুদ্ধে। প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা দুই দিন ধরে ওই শিক্ষিকার বাড়ি অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। শত শত নারী-পুরুষ বুধবারও টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় তার বাড়ি ঘেরাও করে রাখেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে পুলিশ ওই নারী প্রতারককে আটক করে। অভিযুক্ত শিক্ষিকা মোছা. সীমা আক্তার (৪০) পাবনা শহরের পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার সহকারী শিক্ষিকা।তিনি পৌর এলাকার আটুয়া হাউজপাড়া মহল্লার মৃত হানিফুল ইসলামের স্ত্রী। প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা বলেন,শিক্ষিকা মোছা. সীমা আক্তার নিরীহ নারীদের ইসলামি শরিয়া মোতাবেক গরুর খামার ও আরও নানা ধরনের হালাল উপার্জনের কথা বলে পুঁজি বিনিয়োগ করতে বলেন। মানুষ তার কথায় বিশ্বাস করে লাভের আশায় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অর্থ বিনিয়োগ করে।লাভের অঙ্ক বেশি হওয়ায় লোভে পড়ে অনেকেই সেখানে অর্থ বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়। প্রথম পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে তাদেরকে লাভের অর্থ দেন। পরবর্তী সময়ে টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি পেলে তিনি সব টাকা আত্মসাৎ করে নানা টালবাহানা করতে থাকেন এবং এক মাস আগে গা ঢাকা দেন।ভুক্তভোগীরা বলেন,তিনি শুধু সাধারণ মানুষই নন, বোকা বানিয়েছেন নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক এমনকি পুলিশ সদস্যদেরও। এদিকে সম্প্রতি মাসিক লাভের অর্থ নিতে এসে ওই নারীকে না পেয়ে সংশ্লিষ্টরা বুঝতে পারেন তারা চরম প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগীরা তখন বিষয়টি পাবনাসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। ভুক্তভোগীরা পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগও করেন। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, মোছা. সীমা আক্তার টাকা দিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এই অভিযোগ পাওয়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই সহকারী শিক্ষক নারী প্রতারককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন। ওই নারী শিক্ষিকা অনেকের কাছ থেকে চেক ও স্ট্যাম্পের মাধ্যমেও অর্থ নিয়েছেন। এদিকে ঘটনাটি নিয়ে হইচই শুরু হলে গণমাধ্যমকর্মীরা সীমা আক্তারের বাড়িতে যান। তারা এই ব্যবসার কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি বৈধ কোনো কিছুই দেখাতে পারেননি।তবে তিনি স্বীকার করেছেন মানুষের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার বিষয়টি। তিনি বলেন,আমার কোনো বৈধ ব্যবসা নেই। একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আরেক জনকে দিয়েছি। যারা টাকা দিয়েছে,তাদেরকে সুদে অনেক টাকা লাভ দিয়েছি। আমি কারও টাকা আত্মসাৎ করিনি। মানুষ না জেনে না বুঝে আমাকে টাকা কেন দিয়েছে। তাদেরকে প্রশ্ন করুন। সম্প্রতি যারা আমাকে টাকা দিয়েছেন তাদের টাকার একটি হিসাব করেছি।সেখানে প্রায় তিন কোটি টাকা হবে। সেই টাকা আমি দিয়ে দেব। আর যারা সুদে লাভের টাকা নিয়েছেন,তাদেরটা দেব না। আর আমাকে কেন স্কুল থেকে বরখাস্ত করেছে,সেটি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানে। আমি ব্যক্তিগত কাজে বাইরে ছিলাম।পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন,এ ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। তার বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগের কারণে তাকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার প্রতারণার বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ নিয়ে এসেছিল ভুক্তভোগীরা। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। অনেকেই তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ নিয়ে এসেছেন। ভুক্তভোগীরা তার বাড়িতে তাকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।  
Link copied!