শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে চাপে অর্থনীতি

প্রকাশিত: ০৭:৩৩ এএম, মে ১৭, ২০২২

১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে চাপে অর্থনীতি

গত ১৩-১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে চাপে রয়েছে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি। রাজস্ব আয়ে ঘাটতির পাশাপাশি নতুন করে যোগ হয়েছে বিশ্ব সংকট। বিশেষ করে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, রপ্তানি এবং রেমিট্যান্স আয়ে ঘাটতির কারণে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে। টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে অসহনীয় হয়ে উঠছে জিনিসপত্রের দাম। মনে হচ্ছে, আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও বেসামাল হয়ে উঠবে। এ অবস্থায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, মানুষের আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিপিডির আরেকজন বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, ওয়ার্ল্ড ভিশনের পরিচালক টনি মাইকেল গোমেজ এবং কর্ডএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শাকিব নবী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ক্রমেই দেশের জাতীয় সঞ্চয় কমছে। এ অবস্থায় বাজারমুখী দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে হবে। এছাড়াও করমুক্ত আয়সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করার সুপারিশ করা হয়। ড. দেবপ্রিয় বলেন, প্রতিটি বাজেটের একটি প্রেক্ষিত থাকে। সেক্ষেত্রে এ বছরের বাজেটের তিনটি প্রেক্ষিত রয়েছে। প্রথমত, করোনার আগে সর্বশেষ অর্থবছর ছিল ২০১৮-১৯। বর্তমানে করোনা উত্তরণের কথা বলা হলেও অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকগুলো এখনো আগের অবস্থায় ফিরে যায়নি। এই ঘাটতি নিয়েই আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হচ্ছে। দ্বিতীয় বিষয় হলো-আন্তর্জাতিক বাজারে বড় ধরনের সংকট চলছে। এক্ষেত্রে জ্বালানি তেল এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক ধরনের অস্থিতিশীল ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। তৃতীয়ত, ২০০৮-০৯ সালে বিশ্ব অর্থনীতি ও ব্যাংকিং খাতে বড় সংকটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর ১৩-১৪ বছরে এবারই সবচেয়ে চাপে বা টানাপোড়েনে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি। অর্থাৎ এখনো করোনা-উত্তর পরিস্থিতিতে ফিরে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এর মধ্যেই বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতিকে বড় ধরনের চাপে ফেলেছে। তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোয় দেশের আর্থিক দায়-দেনা পরিস্থিতির কাঠামোটি সর্বদাই দুর্বল ছিল। এটি এখনো অব্যাহত রয়েছে। আর দুর্বলতার লক্ষণ হলো কর-জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) অনুপাত ১০-এর ওপরে ওঠেনি। অর্থাৎ জিডিপির আকার ১০০ টাকা হলে বর্তমানে কর আদায় মাত্র ৯ টাকা ৪০ পয়সা। দক্ষিণ এশিয়ায় যা সবচেয়ে কম। একই সঙ্গে সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে উন্নয়ন কর্মসূচির চেয়ে পরিচালন ব্যয় অনেক বেশি। তিনি বলেন, দেশে বাজেট ঘাটতিও বাড়ছে না। এর মূল কারণ হলো দুটি। প্রথমত, সম্পদের অভাব এবং দ্বিতীয়ত, সম্পদ থাকলেও এর গুণগতমান সম্পূর্ণ ব্যয় করতে না পারা। আর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এটি একটি কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা বা ব্যর্থতা। অর্থাৎ কর আদায় কম, ব্যয়ও কম এবং নিয়ন্ত্রিত বাজেট ঘাটতি। এটি কোনো অবস্থাতেই অর্থনীতির শক্তির লক্ষণ নয়। ড. দেবপ্রিয় বলেন, এবারের পরিস্থিতি আরও ভিন্ন। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শক্তির জায়গা ছিল বৈদেশিক খাত। রপ্তানি, রেমিট্যান্স, বৈদেশিক সাহায্য এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ শক্তিশালী ছিল। এতে বৈদেশিক আয়-ব্যয় বা চলতি হিসাবের ভারসাম্য শক্ত অবস্থানে ছিল। এই অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। গত বছরের মার্চ পর্যন্ত চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ৫৫ কোটি ডলার ঘাটতি ছিল। এ বছরে মার্চে ওই ঘাটতি ১ হাজার ৪০৭ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এই সংকট আরও বেশি পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে। অনেকে লেখেন বা বলে থাকেন, বাংলাদেশের রপ্তানি আয় এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে। কিন্তু আমি বলব, এখানে অর্থনীতি বোঝার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। কারণ রপ্তানির যে উল্লম্ফন, এটি আমদানীকৃত উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে হয়েছে। ফলে এত রপ্তানি বৃদ্ধির পরও দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আর গত বছর এই ঘাটতি ছিল এর অর্ধেকের কাছাকাছি। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে আমরা এত আত্মতুষ্টিতে ভুগছি; কিন্তু এটি ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে রিজার্ভ কমতে শুরু করে। এখনো এই কমা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে যে রিজার্ভ আছে (৪১ বিলিয়ন ডলার), তা নিয়ে ৪-৫ মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে না। একটি উদাহরণ থেকে এটি পরিষ্কার বোঝা যায়। বর্তমানে টাকার মান ধরে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার ছাড়ার সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৭-৮ টাকা কমে গেছে। এরপর বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়তে থাকলে রিজার্ভে বড় ধরনের টান পড়বে। ফলে টাকার মান আরও কমতে থাকবে। এক্ষেত্রে প্রতি মার্কিন ডলার ১০০ টাকার কাছাকাছি চলে যাওয়া অনেকের কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হতে পারে। অর্থাৎ এ বছরে অর্থনীতির নতুন বিষয় হলো রাজস্ব খাতের সঙ্গে বৈদেশিক খাতের দুর্বলতা বাড়ছে। সিপিডির এই বিশেষ ফেলো বলেন, আরেকটি বড় বিষয় হলো মূল্যস্ফীতি। এক্ষেত্রে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ মূল্যস্ফীতির কথা বলছে। কিন্তু এটি বাস্তবতার সঙ্গে আদৌ সংগতিপূর্ণ নয়। এক্ষেত্রে সরকারের তথ্যে আরও কৌতূহলের বিষয় হলো শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি। গ্রামে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। মোট মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি। একই সঙ্গে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের চেয়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেশি। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির তথ্য যে বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই, এর একটি উদাহরণ হলো সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবির তথ্য। ওই তথ্যে দেখা যাচ্ছে এক বছরে পাম অয়েলের দাম ৬১ শতাংশ বেড়েছে। আটা-ময়দার দাম বেড়েছে ৫৮ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৫৬ শতাংশ, মসুর ডালের দাম ৪৭ শতাংশ, অ্যাঙ্কর ৩১ শতাংশ এবং ডিমের দাম বেড়েছে ২৯ শতাংশ। টিসিবির এই তথ্যই বলে দিচ্ছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বিবিএস প্রকাশিত মূল্যস্ফীতির তথ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। ড. দেবপ্রিয়র মতে, অনেকেই বলেন বাংলাদেশের আমদানীকৃত পণ্যের দাম প্রতিবেশী দেশের তুলনায় কম। কিন্তু এই তথ্যও সঠিক নয়। কারণ বর্তমানে দেশে প্রতি কেজি পাম অয়েলের দাম ১৮৩ টাকা। ভারতের সঙ্গে তুলনা করে দেখা যায়, সেখানে দাম ১৭৩ টাকা। অর্থাৎ দেশটির চেয়ে বাংলাদেশে দাম কেজিতে ১০ টাকা বেশি। এছাড়াও আটা-ময়দায় ভারতের সঙ্গে পার্থক্য ৯ টাকা এবং মশুর ডালে ১০ টাকা। তবে বাংলাদেশের চেয়ে ভারতে জ্বালানি তেল ও ডিজেলের দাম বেশি। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে বিবিএস ২০০৫-০৬ ভিত্তিবছর ধরে। অর্থাৎ ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ভোক্তারা যে পণ্য ও সেবা ব্যবহার করতেন, একে ভিত্তি ধরে মূল্যস্ফীতির হিসাব করছে। কিন্তু গত ১৭ বছরে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ও খাদ্যাভ্যাসের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ফলে ৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির যে কথা বলা হচ্ছে, বাস্তবে এটি ১২ শতাংশ হওয়া অসম্ভব কিছু না। আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে, সেই উচ্চমূল্যের পণ্য এখনো বাংলাদেশে আসেনি। এছাড়াও মুদ্রার বিনিময় হার আরও বাড়লে তা পণ্যমূল্যে প্রভাব পড়বে। তাই সবকিছু মিলে পরিষ্কারভাবে বলছি, বিবিএস প্রকাশিত মূল্যস্ফীতির হিসাব বাস্তব ও বিজ্ঞানসম্মত নয়। ড. দেবপ্রিয় আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকার জ্বালানি তেলের দাম আরও বাড়াতে চাচ্ছে। আর সরকার এই মুহূর্তে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে তা বাস্তবসম্মত হবে না। এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হলো-সরকার যেসব খাতে ভতুর্কি দিচ্ছে, সেই ভতুর্কি না দিয়ে অর্থ সমন্বয় করা হলে জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। তিনি বলেন, একটি দেশের অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা কতটা সুসংহত, তা বোঝার জন্য তিনটি সূচক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো মূল্যস্ফীতি হার, মুদ্রার বিনিময় হার এবং ঋণের সুদের হার। এই তিনটি সূচকের মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতায় যে বিষয়টি জোর দিয়ে বলতে চাচ্ছি, তা হলো মূল্যস্ফীতির সঙ্গে টাকার মূল্যমান কমে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে সুদের হার আটকে রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, সুদের হার কম থাকলে বিনিয়োগ বাড়বে। কিন্তু ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ এবং আমানতের সুদের হার ৬ শতাংশ করা হয়েছিল। এতে গত কয়েক বছরে বিনিয়োগ বেড়েছে-এমন তথ্য আমরা পাইনি। কারণ সুদ ছাড়াও বাংলাদেশে বিনিয়োগে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এগুলো দূর করতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের গড় সুদ ৪ দশমিক ০১ শতাংশ। কিন্তু মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। এর মানে হলো ব্যাংকে টাকা রাখলে অর্থের প্রকৃত মূল্য প্রতিবছর ২ শতাংশ হারে কমে যাচ্ছে। এটিকে আমরা বড় ধরনের সঞ্চয়বিরোধী নীতি বলছি। ড. দেবপ্রিয়র মতে, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য আমরা মূল্যস্ফীতিকে কেন্দ্রীয় সূচক হিসাবে বিবেচনার সুপারিশ করছি। অন্য সূচকগুলোকে সহযোগী হিসাবে বিবেচনায় নিতে হবে। কারণ অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নষ্ট হলে নিু আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর পরের বিষয় হলো বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। গত কয়েক বছরে দেখা যাচ্ছে, বিনিয়োগ কোনোভাবেই ৩৩ শতাংশের বেশি বাড়ানো যাচ্ছে না। এর মধ্যে বেসরকারি বিনিয়োগের হার হলো ২৩-২৪ শতাংশ। কিন্তু করোনার আগে ২০১৯ অর্থবছরে বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ এখনো আমরা আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারিনি। এরপরও জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। এখানেও আমরা বলছি জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। অন্যদিকে সরকার বলছে, বৃহৎ শিল্পে জিডিপির ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ বিনিয়োগ হয়েছে। এক্ষেত্রে ছোট ও মাঝারি শিল্পে ১১ দশমিক ৭১ এবং কুটিরশিল্পে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এখানেও দেখা যাচ্ছে বড় শিল্প বেশি সুবিধা পাচ্ছে। কিন্তু সাধারণ নিয়মে ছোট শিল্পে বিনিয়োগ হলে কর্মসংস্থান বাড়ে। এখানেও বৈষম্য হচ্ছে। ফলে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে দেশীয় বাজারমুখী শিল্পকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। ড. দেবপ্রিয় বলেন, আরেকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ-আমাদের সঞ্চয় কমে যাচ্ছে। করোনার মধ্যেও ২০২০ সালে আমাদের সঞ্চয়ের হার জিডিপির ৩১ দশমিক ৪২ শতাংশ, ২০২১ সালে তা কমে ৩০ দশমিক ৭৯ শতাংশে নেমে আসে। সর্বশেষ চলতি বছর তা আরও কমে ২৫ দশমিক ৪৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এ সময়ে অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় ২৭ দশমিক ০৮ শতাংশ থেকে কমে ২১ দশমিক ৫৬ শতাংশে নেমে এসেছে। এর মানে হলো-মানুষ আর্থিক কষ্টের কারণে সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। এটি অর্থনৈতিক দুর্বলতার অন্যতম লক্ষণ। তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে (এডিপি) আমরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টিকে পর্যালোচনা করেছি। এখানে আমরা দেখেছি, মোট এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪১ দশমিক ২২ শতাংশ। কিন্তু এই তিন খাতে বাস্তবায়ন ৩৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। আগের অর্থবছরও যা ছিল ৩৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ কমছে। তিনি বলেন, বর্তমানে করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা। কিন্তু সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তা সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা উচিত। পাশাপাশি দুস্থ মানুষের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে হবে। সামগ্রিকভাবে বাজেট হবে মানুষের আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানমুখী।
Link copied!