শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

২০২৪ সালের মধ্যে ৮০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় অর্জনের লক্ষ্য

প্রকাশিত: ১০:৪২ এএম, জানুয়ারি ১৩, ২০২২

২০২৪ সালের মধ্যে ৮০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় অর্জনের লক্ষ্য

ডেইলি খবর ডেস্ক: দেশের প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা দিয়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও ফরোয়ার্ড লিংকেজ প্রতিষ্ঠা এবং প্রচ্ছন্ন রপ্তানি খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে সার্কুলার ইকোনমি গড়ে তুলে ২০২৪ সালের মধ্যে ৮০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়,যা চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেশি। গত বুধবার অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি 'খসড়া রপ্তানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪'-এর নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন শেষে এটি কার্যকর হবে।নতুন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের তুলনায় আগামী তিন বছর ৭৬ শতাংশ বাড়তি রপ্তানি করতে হবে বাংলাদেশকে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর আগে বিদ্যমান শুল্কমুক্ত সুবিধাগুলোর সদ্ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।চলতি (২০১৮-২১) রপ্তানি নীতিতে ২০২১ সালের মধ্যে ৬০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু কোভিড মহামারীর সময় লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২৫ শতাংশ পিছনে থেকেই শেষ হয়েছে সময়সীমা। গত অর্থবছরে পণ্য ও সেবা রপ্তানিতে বাংলাদেশ আয় করেছে ৪৫ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার।নতুন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনযোগ্য বলে মনে করছেন রপ্তানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা। এজন্য ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমিয়ে অন্তত ৯০ টাকা নির্ধারণ করা উচিত। তবে এতে আমদানি পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। একইসঙ্গে ফিসক্যাল ও মানিটারি পলিসির সমন্বয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগও থাকতে হবে।তারা বলছেন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের সুদহার কমানো এবং দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা জরুরি। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো, ঢাকা-চট্টগ্রাম কন্টেইনার ট্রেন সার্ভিস বাড়ানোর উপর জোর দেন তারা।তারা বলছেন, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৩০০০ ডলারে উন্নীত হবে। সেইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ ভোগও বাড়বে। ওই সময় নাগাদ জিডিপির প্রবৃদ্ধি দুই অংকে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা সরকার নির্ধারণ করেছে।বাংলাদেশের রপ্তানিখাত যেহেতু কাঁচামাল আমদানি নির্ভর, তাই ৮০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় অর্জন করতে হলে আমদানি ব্যয়ও প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে। আমদানি ব্যয়ে লাগাম টানতে ব্যাকওয়ার্ড ও ফরোয়ার্ড লিংকেজ গড়ে তোলার যে লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া, হাইভ্যালু তৈরি পোশাক রপ্তানিতেও জোর দিতে হবে।৮০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যা যা করণীয়, তার সবই করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে ডলারের দাম খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।বর্তমানে কার্ব মার্কেটে ডলার ৯০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে, আন্তঃব্যাংক এক্সচেঞ্জ রেট বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছেছে। ডলারের দাম বাড়িয়ে ৯০ টাকা করার সরকারের পরিকল্পনা আছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'কার্ব মার্কেটের সঙ্গে ইন্টারব্যাংক এক্সচেঞ্জ রেটে পার্থক্য আছে। তবে আমাদের মূল্যস্ফীতিতে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতিই বেশি।''কোভিড-পরবর্তী সময়ে রপ্তানি বাড়ার কারণে আমদানিও বাড়ছে। ট্রেড ডেফিসিটের কারণে আমদানির জন্য ফিন্যান্সিং করতে হয়। তাই মার্কেটে ডলারের দর ওঠানামা করে। তবে সেটা অনেক বেশি ওঠানামা হবে না। আমাদের এখন যে রেট আছে, তা বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই,' যোগ করেন তিনি। ৮০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির কৌশল-দেশের রপ্তানি আয়ের ৯০ শতাংশের উৎস তৈরি পোশাক খাত। এ খাতে বিনিয়োগ ও রপ্তানি বাড়াতে সরকার যেসব নীতিসহায়তা ও প্রণোদনা দিচ্ছে, আরএমজি-বহির্ভূত রপ্তানিমুখী খাত---খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পজাত পণ্য,চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা, হাল্কা প্রকৌশল পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, কৃষিপণ্য, পাটপণ্য,প্রাণিজাত পণ্য, হালাল পণ্য ও মেরিন রিসোর্স থেকে আহরিত পণ্য রপ্তানিতেও একই ধরনের সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে আমদানি নীতিতে।রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ম্যানমেইড ফাইবার, হালাল পণ্য ও হালাল ফ্যাশন, রিসাইকেল করা পণ্য, মেডিকেল ও ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী এবং সেবাখাতে বিপিও, ফ্রিল্যান্সিং, সফটওয়্যার ও আইটি এনাবল সার্ভিসেস খাতকে অগ্রাধিকার তালিকায় নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে। রপ্তানিকারকদের গ্রিন ও অর্গানিক পণ্য উৎপাদনে সার্বিক সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এতে।এসব খাতে বিনিয়োগে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শুল্ক কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া, স্বল্পসুদে ও সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করা এবং পণ্যের মান নিশ্চিত করতে সরকার আন্তর্জাতিক মানের টেস্টিং সার্টিফিকেশন ও অ্যাক্রিডিটেশন ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।আন্তর্জাতিক বাজারে ম্যানমেইড ফাইবারে তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। তবে বাংলাদেশে এ ধরনের ফাইবার উৎপাদন হয় না। এ খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্ধারণ করা এবং ম্যানমেইড ফাইবারের ভ্যাট কটন সুতার মতো সমহারে নির্ধারণ করা হবে।দেশের সকল রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার জন্য বিভিন্ন দেশের ও বিভিন্ন ধরনের ক্রেতাদের চাহিদা সমন্বয় করে ন্যূনতমভাবে পালনযোগ্য একটি স্ট্যান্ডার্ড ইউনিফাইড কোড অব কমপ্লায়েন্স প্রণয়ন করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মহাদেশভিত্তিক ক্রেতাদের রুচি ও চাহিদা, ডিজাইন ও ফ্যাশন ট্রেন্ড অনুযায়ী পণ্য উন্নয়ন ও ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতামুলক সক্ষমতা বাড়াতে গবেষণা ও উন্নয়নে সহায়তা দেবে সরকার।বাণিজ্যবান্ধব ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলে রপ্তানি খাতের জন্য ঋণের সুদহার আরও কমানো ও ঋণপ্রাপ্তি সহজ করা এবং রপ্তানি বাণিজ্যে অর্থায়নের ক্ষেত্রে ফ্যাক্টরিং সার্ভিস উৎসাহিত করবে সরকার। প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা প্রতিযোগী দেশ চীন, ভিয়েতনাম, ভারত ও পাকিস্তানের মুদ্রামান বিবেচনায় নিয়ে টাকার অবমূল্যায়ন করে আন্তঃব্যাংক এক্সচেঞ্জ রেট বাড়ানোর কথা বললেও এ বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত নেই প্রস্তাবিত রপ্তানি নীতিতে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে,স্বল্প সুদে জামানতবিহীন ঋণসুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।রপ্তানিখাতের টেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড বা টেকনোলজি আপগ্রেডেশন ফান্ডের আকার আরও বাড়ানো হবে। আর রপ্তানিমুখী সকল শিল্পের জন্য বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা দেওয়ার জন্য এনবিআর প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে। সার্কুলার ইকোনমি গড়ে তুলতে রিডিউস, রিইউজ ও রিসাইকেল (থ্রি-আর) নীতি অবলম্বন করবে সরকার।ওষুধ শিল্পের রপ্তানি বাড়াতে মুন্সিগঞ্জের মতো চট্টগ্রামে আরেকটি অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস ইনগ্রেডিয়েন্ট পার্ক প্রতিষ্ঠা করে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে রপ্তানি নীতিতে। এছাড়া, ওষুধ রপ্তানি বাড়াতে সম্ভাবনাময় বাজারগুলোর সংশ্লিষ্ট মান নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিউচুয়াল রিকগনিশন অ্যাগ্রিমেন্ট করা হবে।হালকা প্রকৌশল খাতে দীর্ঘমেয়াদি কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়াসহ কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর কথা বলা হয়েছে এতে। কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়াতে মানসম্পন্ন প্যাকেজিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। মেরিন রিসোর্স আহরণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানিতে বিশেষ সুবিধা দেবে সরকার।ই-কমার্সের মাধ্যমে রপ্তানিকে প্রত্যক্ষ রপ্তানি হিসেবে সনাক্ত করে নীতি-সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। ই-কমার্স ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে রপ্তানি আয় সরাসরি ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আনার মতো উপযোগী ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।বিদ্যমান রপ্তানি নীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মতিসাপেক্ষে ১০০ শতাংশ রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প বছরে সর্বোচ্চ ২০,০০০ ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক নমুনা হিসেবে বিদেশে পাঠাতে পারত, যা নতুন নীতিতে বাড়িয়ে ৩০,০০০ ডলার করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন-বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'বাংলাদেশের প্রতিযোগী ভিয়েতনাম ডলারের বিপরীতে তাদের মুদ্রার দাম কমিয়েছে। চীনও সুযোগমতো নিজেদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করে। কিন্তু বাংলাদেশ আমদানিনির্ভর হওয়ায় বাংলাদেশে টাকার মান কমানো হচ্ছে না।''টাকার মান না কমার কারণে বাংলাদেশের রপ্তানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হলেও রপ্তানিকারকদের মুনাফা হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের দাম প্রতিযোগী দেশগুলোর পোশাকের তুলনায় বেশি। এ অবস্থায় ডলারের দাম বাড়িয়ে অন্তত ৯০ টাকা নির্ধারণ করা উচিত,' যোগ করেন তিনি।ওমিক্রনের প্রভাবে রপ্তানি আদেশ কমে যাওয়ার পাশাপাশি রপ্তানি পেমেন্ট ডেফার্ড হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অবস্থায় প্রণোদনাসহ বিভিন্ন ঋণ পরিশোধে বাড়তি সময় দেওয়া প্রয়োজন।আনোয়ার-উল আলম আরও বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে ৮০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি সম্ভব। তবে এজন্য হালকা প্রকৌশল খাতে জোর দিতে হবে। কারণ, পরবর্তী শ্রম বাজারে শিক্ষিত শ্রমিকের সংখ্যা বাড়বে। তাদের তৈরি পোশাক খাত আকর্ষণ করতে পারবে না। কারণ, এখাতে মূল্য সংযোজন কম। হালকা প্রকৌশল খাতে বাড়তি মূল্য সংযোজন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে।বাংলাদেশে এগ্রি বিজনেসে বিনিয়োগ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চামড়াজাত পণ্যে বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে রিলোকেট করা শুরু করছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।রপ্তানিমুখী শিল্পের ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের সুদ হার আরও কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও তা প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় প্রতিযোগিতামূলক না।পারভেজ বলেন, '২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েশন হবে। তখন শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা থাকবে না। এই কারণে ২০২৪-২০২৫ সালে বাংলাদেশি পণ্যের ক্রেতাদের মধ্যে বিকল্প বাজার খুঁজে বের করার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। তাদের এই টেনশন কমাতে বাংলাদেশি পণ্যের প্রধান বাজারগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে।'পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকার যে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা উচ্চাভিলাষী হলেও অর্জনযোগ্য। তবে এজন্য প্রথম শর্ত হলো এক্সচেঞ্জ রেট বাড়ানো, অবকাঠামোগত সংকট দূর করা ও রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ।তিনি বলেন, '২০২৪ সালেও আমরা এলডিসি হিসেবে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাব। ওই সুবিধা কাজে লাগিয়ে উচ্চমাত্রায় রপ্তানি আয় অর্জন করার সুযোগ থাকবে। তবে বর্তমান অবস্থায় এক্সচেঞ্জ বহাল রেখে তা অর্জন করা কঠিন হবে। কারণ,প্রতিযোগী দেশগুলোর মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে।''একটি দেশে দুটি এক্সচেঞ্জ রেট থাকা এক ধরনের টেনশন। কার্ব মার্কেটে যেখানে ৯০-৯২ টাকা, সেখানে ব্যাংকে ৮৬ টাকা, এটা হতে পারে না। এক্সচেঞ্জ রেট একটিই হওয়া উচিত, এবং তা বাজার নির্ধারণ করবে। এক্সচেঞ্জ রেট কম থাকার কারণে আমাদের ইম্পোর্ট অনেক বেড়ে গেছে। আমদানি কমাতে না পারলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে,' যোগ করেন তিনি। রপ্তানির উদ্দেশ্যে আমদানি বাড়লে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক অপ্রয়োজনীয় আমদানিও হচ্ছে। তাই ডলারের দাম বাড়িয়ে আমদানিকে ব্যয়বহুল করতে হবে। তাতে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও সবাইকে সমন্বয় করে চলতে হবে বলে জানান তিনি।বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মান যৌক্তিক পর্যায়ে রয়েছে, তা বলা যাবে না। তবে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতিযোগী ও প্রতিবেশী দেশগুলোর মুদ্রার মানের সঙ্গে সমন্বয় করে এক্সচেঞ্জ রেট নির্ধারণ হওয়া উচিত। তা না হলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা লেস কম্পিটিটিভ হয়ে পড়ে। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান তাদের মুদ্রার মান কমিয়েছে।বাংলাদেশে এখন ব্যাংক রেট ও কার্ব মার্কেটে ডলারের দামের পার্থক্য ৫ টাকার মতো, যা অনেক বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করে এই পার্থক্য কমানোর চেষ্টা করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর বলেন,'বাংলাদশের রপ্তানিও আমদানি নির্ভর। রপ্তানিকারকরা কিছুটা লাভবান হলেও ডলারের দাম বাড়ালে বড় বড় কোম্পানি, যারা কাঁচামাল আমদানি করে, তারাও বিপদে পড়বে। দেশের ভেতরে শিল্প পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। খাদ্যপণ্যসহ জ্বালানির মূল্যও বেড়ে যাবে। এতে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।'টাকার মূল্য কমানোর আগে হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন আছে। টাকার দাম ৫ শতাংশ কমানো হলে রপ্তানি কতটুকু বাড়বে,তা পর্যালোচনা করতে হবে। সরকার রপ্তানিকারকদের প্রচুর প্রণোদনা দিয়ে বিকল্পভাবে পুষিয়ে দিচ্ছে। রপ্তানিকারকদের বরং উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। সুত্র-টিবিএস  
Link copied!