রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বিদেশ থেকে বিনা শুল্কে ২৬টি পণ্য আনা যাবে

সংসদ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৪, ০৮:৪৪ এএম

বিদেশ থেকে বিনা শুল্কে ২৬টি পণ্য আনা যাবে


অর্থবছরের এবার প্রস্তাবিত বাজেট পেশের দিন ব্যাগেজ বিধিমালায় বেশ কিছু পরিবর্তন জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে বিদেশ থেকে স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন এবং স্বর্ণের বার ও সিগারেট আনার ক্ষেত্রে কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা এতে যুক্ত করা হয়েছে। ১২ বছরের কম বয়সী যাত্রীর ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে এসব জিনিসপত্র আনার সুবিধা বাতিল করার কথা বলা হয়েছে।
ব্যাগেজ বিধিমালায় স্বর্ণালংকারের সংজ্ঞা সংযোজন করা হয়েছে। এক যুগ ধরে বিদ্যমান ব্যাগেজ বিধিমালায়, বিদেশফেরত একজন যাত্রীর বিনা শুল্কে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণালংকার আনার সুবিধা দেওয়া রয়েছে। নতুন বিধিমালায় সেই সুবিধা বহাল থাকছে, তবে এবার স্বর্ণালংকারের সংজ্ঞা সংযোজন করা হয়েছে। সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘স্বর্ণালংকার অর্থ ২২ বা তার চেয়ে কম ক্যারেটের স্বর্ণে তৈরি নকশাখচিত ও পরিধানযোগ্য অলংকার।’ ফলে ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণবার গলিয়ে যেনতেনভাবে চুড়ি বানিয়ে আনার সুযোগ আর থাকছে না।
মূলত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে কাস্টমস শুল্ক ফাঁকি দিতে স্বর্ণালংকারের মধ্যে অলংকারের মতো দেখতে অপরিশোধিত স্বর্ণ (২৪ ক্যারেট) আনার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় ব্যাগেজ বিধিমালায় স্বর্ণালংকারের সংজ্ঞা সংযোজন করা হয়েছে বলে বাজেট বক্তৃতায় জানান অর্থমন্ত্রী।
দেশে প্রতি তোলা স্বর্ণবারের শুল্ক-কর ৪ হাজার টাকা। সে হিসাবে ১০০ গ্রাম বা প্রায় সাড়ে ৮ তোলা স্বর্ণবার দিয়ে বানানো চুড়ির শুল্ক-কর ৩৪ হাজার ২৯৩ টাকা। আগের লাগেজ বিধিমালায় ১০০ গ্রাম স্বর্ণালংকার আনায় শুল্ক-কর রেয়াত দেওয়া হয়েছে, এভাবে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে স্বর্ণের বার আনলেও স্বর্ণালংকারের সংজ্ঞা না থাকায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কিছুই করার থাকত না।
বিদেশ থেকে মোবাইল ফোন আনার অনুমতির ক্ষেত্রেও নতুন বিধিমালায় একটি বিষয় সুস্পষ্ট করা হয়েছে। আগের নীতিমালায় বিদেশফেরত যাত্রী দুটি মোবাইল ফোন বিনা শুল্কে আনতে পারতেন। ফোন দুটি ব্যবহৃত নাকি নতুন, সেটি বিধিমালায় উল্লেখ ছিল না। তবে নতুন বিধিমালায় সেটি স্পষ্ট করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যাত্রী তিনটি মোবাইল ফোন আনতে পারবেন। এর মধ্যে দুটি ব্যবহৃত ফোন বিনা শুল্কে আনা যাবে। আর সঙ্গে একটি নতুন ফোনও আনা যাবে। তবে এর জন্য শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হবে।
এ ছাড়া মোবাইল আনা হলে শুল্ক-কর কত হবে, সেটিও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ফোনের দাম অনুযায়ী ৫, ১০ ও ২৫ হাজার টাকা শুল্ক-কর নির্ধারণ করা হয়েছে।
ব্যাগেজ বিধিমালার আরেকটি পরিবর্তন হলো, ১২ বছরের কম বয়সী কোনো যাত্রী স্বর্ণবার ও স্বর্ণের অলংকার আনতে পারবে না। আগের বিধিমালায় এটি সুস্পষ্ট না থাকার কারণে যেকোনো বয়সী যাত্রীই স্বর্ণ আনতে পারতেন। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, ১২ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী একজন যাত্রী ৬৫ কেজির ব্যাগেজ শুল্ক-কর ছাড়া খালাস করতে পারবেন। তবে ১২ বছরের কম বয়সীর জন্য এই সুবিধা ৪০ কেজি পর্যন্ত।
বিদেশ থেকে যা যা আনা যাবে-নতুন ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায়, শুল্ক-কর পরিশোধ করে ১২টি পণ্য এবং শুল্ক-কর ছাড়া ২৬ ধরনের পণ্য আনার সুযোগ রয়েছে। আবার বিদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী ১ লিটার মদ (অ্যালকোহল) শুল্ক-কর ছাড়া আনতে পারবেন। কিন্তু বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের সেই সুযোগ নেই। 
শুল্ক-কর পরিশোধ করে যে ১২টি পণ্য আনা যাবে তা হলো:
১১৭ গ্রাম ওজনের স্বর্ণবার। এর জন্য ৪০ হাজার টাকা শুল্ক-কর দিতে হবে।
২০ তোলা রৌপ্যবার, ৩০ ইঞ্চি ও তদূর্ধ্ব টেলিভিশন, একটি নতুন সেলফোন, হোম থিয়েটার, রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার (এসি), ডিশ অ্যানটেনা, ক্যামেরা, ঝাড়বাতি, ডিশওয়াশার, ওয়াশিং মেশিন
ক্লথ ড্রায়ার, এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে এয়ার গান আনা যাবে।
বিনা শুল্কে যে ২৬টি পণ্য আনা যাবে, ১০০ গ্রাম স্বর্ণালংকার
২০০ গ্রাম রুপার অলংকার, দুটি ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ২৯ ইঞ্চি পর্যন্ত টেলিভিশন, ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ, কম্পিউটার স্ক্যানার, প্রিন্টার, ফ্যাক্স মেশিন, ভিডিও ক্যামেরা, ডিজিটাল ক্যামেরা, ১৯ ইঞ্চি পর্যন্ত এলসিডি মনিটর, ওভেন, রাইসকুকার, সেলাই মেশিন, সিলিং ফ্যান, এক কার্টন (২০০ শলাকা) সিগারেট, টেলিফোন সেট
টোস্টার, স্যান্ডউইচ মেকার, ব্লেন্ডার, ফুড প্রসেসর, জুসার বা কফি মেকার, টাইপরাইটার, ভিসিআর/ভিসিপি, ক্যাসেট প্লেয়ার, ডিস্কম্যান/ওয়াকম্যান, বহনযোগ্য অডিও সিডি প্লেয়ার, সর্বোচ্চ চারটি স্পিকারসহ মিউজিক সেন্টার, ১৯ ইঞ্চি এলসিডি কম্পিউটার মনিটর, সর্বোচ্চ ১৫ বর্গমিটার আয়তনের কার্পেট।

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!