রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১

ভারতে তীব্র রুপি-সংকট, ১০ বিলিয়ন ডলার নিলামে

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫, ১১:২৭ পিএম

ভারতে তীব্র রুপি-সংকট, ১০ বিলিয়ন ডলার নিলামে

ভারতের ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট নিরসনে ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার নিলামে তুলছে ভারত। এর মধ্য দিয়ে তিন বছরে প্রায় ৮৭ হাজার কোটি রুপি ব্যাংকে ঢুকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) তিন বছরমেয়াদি সোয়াপ অকশনের (মুদ্রা বিনিময় নিলাম) তথ্য গতকাল শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে,ভারতের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তারল্য সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এর ফলে বাজারে নগদ অর্থের প্রবাহ কমে গেছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি আরবিআই ডলার নিলামে তোলা শুরু করবে। ৪ মার্চ পর্যন্ত প্রথম ধাপের নিলামে ১০ বিলিয়ন ডলার বাজারে ছাড়া হবে। এর বিনিময়ে প্রায় ৮৭০ বিলিয়ন রুপি সংগ্রহ হতে পারে।
চলতি বছরের শুরুতে আরবিআই ছয় মাসমেয়াদি মুদ্রা বিনিময় নিলামের মাধ্যমে ৫১০ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়। তবে এরপরও নগদ অর্থ সংকট কাটেনি। বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, মার্চ মাসের শেষনাগাদ ব্যাংক খাতে আরবিআইকে আরো অন্তত ১ ট্রিলিয়ন অর্থাৎ ১ লাখ কোটি রুপির তারল্যের জোগান দিতে হবে।
তবে এবারের তিন বছরমেয়াদি মুদ্রা বিনিময় (সোয়াপ) নিলাম আগের ছয় মাস বা দুই মাসের রেপো সুবিধার চেয়ে বেশি কার্যকর হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ব্যাংক অফ বরোদার অর্থনীতিবিদ অদিতি গুপ্তা বলেন, ‘তিন বছরমেয়াদি বিনিময় (সোয়াপ) নিলামের মাধ্যমে আরবিআই সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিল। দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাংকে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিত হলে বাজারে সুদের হার কমার প্রভাব পড়বে।’
এদিকে চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রায় পাঁচ বছর পর প্রথমবারের মতো রেপো রেট কমিয়েছে আরবিআই। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বাজারে নগদ অর্থের সংকট থাকলে সুদের হার কমানোর বাস্তব প্রভাব পড়বে না।
অর্থনীতিবিদ অদিতি গুপ্তা আরও বলেন,‘এই বিনিময়(সোয়াপ) নিলাম আরবিআইয়ের বৈদেশিক মুদ্রানীতিতেও পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এর মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রিত ও ক্রমান্বয়ে রুপির অবমূল্যায়নের ভাবনা থাকতে পারে।’
গত পাঁচ সপ্তাহে ওপেন মার্কেট অপারেশন (ওএমও) বা আন্তঃব্যাংক বিক্রির মাধ্যমে বেচাকেনা, দীর্ঘমেয়াদি রেপো ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ের মাধ্যমে ব্যাংক খাতে ৩ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন বা ৩ লাখ ৬০ হাজার কোটি রুপি তারল্য সরবরাহ করেছে আরবিআই।
ভারতের অর্থবিভাগের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তিন বছরমেয়াদি মুদ্রা বিনিময় স্বল্পমেয়াদি সরকারি বন্ডের জন্য ইতিবাচক। এটি বন্ড ইয়েল্ড কার্ভে খাঁড়া গতি আনতে পারে। অর্থাৎ বন্ড থেকে আয়ের পরিমাণ ব্যাপক বাড়তে পারে।চলতি বছরের ফেব্রæয়ারির ২০ তারিখ পর্যন্ত ভারতের ব্যাংকিং খাতে ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপিতে পৌঁছেছে। চলতি অর্থবছরের শেষ মাস মার্চ আসার সঙ্গে সঙ্গে এই ঘাটতি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!