হঠাৎ বজ্রপাতে দেশের ৪ জেলায় ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে ।সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জে এসব মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে স্কুলছাত্র, কৃষক, মাদ্রাসাশিক্ষক ও কলেজছাত্র রয়েছেন।
কুমিল্লায় চারজনের মৃত্যু-কুমিল্লার বরুড়া ও মুরাদনগর উপজেলায় বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে বরুড়া ও মুরাদনগরে পৃথক দুটি ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাজমুল হক ও বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দুই স্কুলছাত্র হলো, বরুড়া উপজেলার পয়ালগচ্ছ গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে মো. ফাহাদ হোসেন (১৩) ও একই এলাকার বিলাল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ জিহাদ (১৪)। তারা বড়হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
বাকি দুজন হলেন, মুরাদনগর উপজেলার দেওরা গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া (৩৫) ও কোরবানপুর পশ্চিম পাড়া (কালীবাড়ী) গ্রামের মৃত বীরচরণ দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬০)।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়,দুপুর ১২টার দিকে মুরাদনগরের কোরবানপুর পূর্বপাড়ার একটি মাঠে নিখিল দেবনাথ ও জুয়েল ভূঁইয়া পাশাপাশি জমিতে ধান কাটছিলেন। এক পর্যায়ে হঠাৎ বজ্রপাত শুরু হলে ঘটনাস্থলে দুজনের মৃত্যু হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা নাজির (৪০) নামে আরও এক কৃষক আহত হন। তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগচ্ছ গ্রামের কয়েকজন শিশু মাঠে ঘুড়ি উড়াচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে ফাহাদ, জিহাদ ও আবু সুফিয়ান নামে তিনজন মারাত্মকভাবে আহত হয়। পরে স্বজনরা দ্রæত তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ফাহাদ ও জিহাদকে মৃত্যু ঘোষণা করেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য আবু সুফিয়ানকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কিশোরগঞ্জে তিনজন নিহত-কিশোরগঞ্জের মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মিঠামইনের শান্তিগঞ্জ হাওরে খড় শুকাতে গিয়ে ফুলেছা বেগম (৬৫) নিহত হন। অষ্টগ্রামে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মারা যান কৃষক ইন্দ্রজীত দাস (৩৬) ও কিশোর স্বাধীন মিয়া (১৪)।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মিঠামইন উপজেলার শান্তিগঞ্জ হাওরে ও সকাল ১০টার দিকে জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার হালালপুর হাওরে এসব ঘটনা ঘটে। মিঠামইন থানার উপপরিদর্শক অর্পন বিশ্বাস জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ির পাশে ধানের খড় শুকাচ্ছিলেন ফুলেছা বেগম। এসময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
অষ্টগ্রাাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন জানান, সোমবার সকাল ১০টার দিকে কৃষক ইন্দ্রজীত দাস বাড়ির পাশে হালালপুর হাওরে ধান কাটছিলেন। এসময় বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই কৃষক ইন্দ্রজীত দাসের মৃত্যু হয়। একই সময় উপজেলার খয়েরপুর হাওরে কৃষক স্বাধীন মিয়া ধান কাটার সময় বজ্রপাতে নিহত হন।
নেত্রকোনায় শিশু ও শিক্ষক নিহত-নেত্রকোনার মদন ও খারনৈ এলাকায় বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন। ভোরে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে বজ্রপাতে মারা যায় ১০ বছর বয়সী শিশু আরাফাত। আগের রাতে বৃষ্টির মধ্যে খারনৈ ইউনিয়নে বজ্রপাতে প্রাণ হারান মাদ্রাসাশিক্ষক দিদারুল হক (২৫)।সুনামগঞ্জে কলেজছাত্রের মৃত্যুসুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কালিকোটা হাওরে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন কলেজছাত্র রিমন তালুকদার। নিহতের সঙ্গে তার একটি গরুও মারা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :