শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১

সাবেক চিফ হুইপ লিটনের বিরুদ্ধে ৯০০ কোটি টাকার দুর্নীতির খোঁজে দুদক

মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২৫, ১০:৪৫ এএম

সাবেক চিফ হুইপ লিটনের বিরুদ্ধে ৯০০ কোটি টাকার দুর্নীতির খোঁজে দুদক

ভুয়ামি করে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ৯০০ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে লিটন চৌধুরী। দলে মহাদুর্নীতিবাজখ্যাত চাদাঁবাজ শেখ হাসিনার এই মামাতো ভাই জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপও ছিলেন। পুরো নাম নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। তার বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বালু ফেলার জন্য অধিগ্রহণকৃত খাস জমির ভুয়া মালিক সাজিয়ে ৯০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের তিন সদস্যর একটি অনুসন্ধান দল কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছে অনুসন্ধানকারী দলটি। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, প্রয়োজন না হলেও নূর-ই আলম চৌধুরীর সাজানো বিক্ষোভের মুখে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রস্তাব পরিবর্তন করে চর এলাকার খাস জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন দেখিয়ে ক্রয় করে সরকার। অধিগ্রহণকৃত এই জমির অধিকাংশই এখন পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে।
দুদক সূত্র জানায়, গত ৭ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার উপ-পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-১) নারগিস সুলতানা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের বিরুদ্ধে ৯০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনার অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যর একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেন। এর দলনতা হিসেবে রয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-১) মো. খায়রুল হক ও সদস্য হিসেবে রয়েছেন মাদারীপুর দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান ও উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান অপু। গত ২০ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের এক স্মারকে উপ-পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-১) ও অনুসন্ধান কমিটির প্রধান মো. খায়রুল হক স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত চরের খাস জমির সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি ও রেকর্ডপত্র সরবরাহের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে অনুসন্ধান কমিটির সদস্য ও মাদারীপুর দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, অনুসন্ধান কমিটির সদস্য হিসেবে আমি রয়েছি। আমাদের কমিটির জেলা প্রশাসকের কাছে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের তথ্যাদি/ রেকর্ডপত্র সরবরাহের জন্য চাহিদাপত্র দিয়েছে। আমরা আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে আমাদের অনুসন্ধানের প্রতিবেদনের কাজ শেষ করব, সেভাবেই কাজ এগিয়ে নিচ্ছি।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে থাকা দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেন,তখন জমিগুলো ক্রয়ের কোনো প্রয়োজন ছিল না। ক্রয় করতে হয় সাবেক চিফ হুইপ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাইয়ের ছেলে নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের কৌশল ও চাপে। তখন আন্দোলন করে জমি কিনতে বাধ্য করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি,ওই জমির একাংশের ভুয়া মালিক সাজিয়ে ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। কারণ,চরের জমির কোনো মালিক আসলে ছিলেন না। চরের সব জমিই ছিল খাস খতিয়ানভুক্ত। এই জমির কাগুজে মালিককে ক্ষতিপূরণের কিছু টাকা দিয়ে বাকিটা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে,পাশের জেলা শরীয়তপুরের চরে স্থানীয় লোকজনকে ৩৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে বালু ফেলা হয়েছিল। মাদারীপুরেও একই প্রক্রিয়ায় বালু ফেলা শুরু হয়। কিন্তু মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনের এমপি ও চিফ হুইপ নূর-ই-আলম লিটনের ছত্রছায়ায় স্থানীয় কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের চোরম্যান কৃষকদের খেপিয়ে তোলেন। তারা জমি অধিগ্রহণ করে বালু ফেলার জন্য চাপ দেন। ২০১৭ সালে সরকারিভাবে জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে দামের তিন গুণ ক্ষতিপূরণের আইন পাস হয়। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে তখন উঠে-পড়ে লেগে যায় শিবচরের খাস জমি ভুয়া মালিক সাজিয়ে অধিগ্রহণ সিন্ডিকেট,যাদের পেছনের শক্তি ছিল নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। স্থানীয়দের পরিকল্পিত বিক্ষোভের মুখে সেতু বিভাগের বাড়তি জমি কেনা বাবদ ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা যুক্ত করে বিশেষভাবে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে পরের কয়েক বছরে ৯৬৪ হেক্টর চরের জমি কেনা হয়।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত খাস জমি ভুয়া মালিক সাজিয়ে ৯০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের দেওয়া চিঠির কথা স্বীকার করে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোসা. ইয়াসমিন আক্তার বলেন, সংশ্লিষ্ট ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এদিকে স্থানীয় সুত্রগুলো জানায় এই মহাচোর এরআগেও ১/১১ সরকারের সময়ে ভারতে পালিয়ে থেকে আবার দেশে এমে এসে নানাভাবে রুটপাটে ব্যস্ত সময পার করে। দলীয় নেতা কর্মিদেও চরম বিপদেও মধ্যে যেমন কওে ১/১১ সরকারের সময় পালিয়ে েিজ বাচেঁ এবারও একই রকম বিপদে ফেলে নিজে বাঁচতে দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। এবার কঠোর বিচার চান তারা এবং তার সমস্ত অবৈধ সম্পদ বাতির করার দাবি করেনে। স্থানীয়রা বলেন  বিপদ দেখলে লটের অর্থ নিয়ে ভারতে পালিয়ে আরাম-আয়াশে জীবন-যাপন শেষে আবার লুট করতে দেশে এসে একই কাজ করেন লিটন।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!