বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

দিবস ও ভুয়া বিল দেখিয়ে ৩৭৫ কোটি টাকা নেন পলক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪, ১২:৫৮ পিএম

দিবস ও ভুয়া বিল দেখিয়ে ৩৭৫ কোটি টাকা নেন পলক

রাষ্ট্রিয় জিম্মায় থাকা অর্থ নানারকম ফন্দিফিকির করে লুটে নিয়েছে পলক। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছর সময়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নেতৃত্বে দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার অভিযোগ রয়েছে, যেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশের মতো প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে।
২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ খাতে মোট ৬৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে আইসিটি বিভাগে ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের আইসিটি ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স অনুযায়ী, বাংলাদেশ ১০০ দেশের মধ্যে ৬২ নম্বরে রয়েছে, যা আশানুরূপ অগ্রগতি নয়।
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পলক বিভিন্ন দিবস পালনের জন্য ৩৭৫ কোটি টাকা বাজেট করেছেন, যেখানে প্রতি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ হয়, অথচ সরকারি কোষাগার থেকে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা তুলে নেয়া হত। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পদক বাণিজ্য ও ভুয়া সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আইসিটি বিভাগের একটি বার্ষিক ক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিভিন্ন মিডিয়া হাউসে কয়েক কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়া, জুনিয়র কর্মকর্তাদের দিয়ে ভুয়া সেমিনারে অংশগ্রহণ দেখিয়ে বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করিয়ে কোটি কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের একটি সভায় জানানো হয়েছে,প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি অত্যন্ত নিম্ন, যেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১.০২ শতাংশ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অগ্রগতি ৩.৮৪ শতাংশ। ডাক টেলিযোগাযোগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেস্টা নাহিদ ইসলাম, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে মন্তব্য করেন, প্রকল্পগুলো ঠিকমতো শেষ হলে বাংলাদেশে ইন্টারনেট এবং টেলিযোগাযোগ খাতে অগ্রগতি হবে, যা দেশের জনগণের জন্য সুফল বয়ে আনবে।
এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব শামসুল আরেফিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একইভাবে, পলক এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গঠিত কমিটির সভাপতিও পাওয়া যায়নি। এই অভিযোগগুলোর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রকৃত সুযোগ সুবিধা দেশের জনগণের কাছে পৌঁছায়নি বরং ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি ঘটেছে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!