মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

দুদকের অনুসন্ধানের জালে স্বৈরাচারের ছানা-পোনাড়া

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২৫, ১০:৩১ এএম

দুদকের অনুসন্ধানের জালে স্বৈরাচারের ছানা-পোনাড়া

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের দুর্নীতিবাজ ছানা-পোনাড়া দুদকের জালে আনার কাজ জোড়ে-সোড়ে চলছে। এসব ছানা-পোনাদের অনেকেই আবার প্রবাসী। তারা লুট-পাট করতে কেউ এসেছে আমেরিকা থেকে কেউ এসছে লন্ডন থেকে আবার কেউ এসেছিল অস্ট্রেলিয়া থেকে। এভাবেই বাংলাদেশী বংশদ্ভুতরা বিদেশ থেকে এসে লুটেপুটে খাচ্ছিল,নিচ্ছিল।বিদেশী নাগরিকত্ব নিয়েও তারা বাংলাদেশে লুটের রাজস্ব কায়েম করেছিল। লুটেরা-স্বৈরাচারের পতনের পর এসবসহ দেশের হাজারেরও বেশি আওয়ামী লীগ ও তাদেও পোষ্য আওযামী হাইব্রিড ভিআইপির বিরুদ্ধে চলছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান ও তদন্ত। এরই মধ্যে দুই শতাধিক মামলা দায়ের করেছে সংস্থাটি। সম্পন্ন হয়ে এসেছে বেশ কিছু অনুসন্ধানও। অভিযোগ পাওয়া মাত্র প্রতিদিনই মামলা ও অনুসন্ধানের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নাম। সেই তালিকায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তার অফিসের পিয়নের নামও রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও ধরা পড়েছেন দুদকের জালে। রেহাই পাচ্ছেন না দুর্নীতিতে জড়িত সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
এ প্রসঙ্গে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, দুদক সাধারণত প্রাপ্ত অভিযোগ এবং নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান ও পরে মামলার পর তদন্ত করে। ৫ আগস্টের পর আমাদের কাছে যেসব অভিযোগ সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও বিভিন্ন ব্যক্তিপর্যায় থেকে এসেছে সেগুলো আমরা আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করছি। বেশ কিছু মামলাও হয়েছে। ৫ আগস্ট-পরবর্তী যাদের বিরুদ্ধে মামলা ও তদন্ত হচ্ছে তাদের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সাবেক মন্ত্রী-এমপি। অতিউৎসাহী কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যাপারে অনুসন্ধান ও তদন্ত চলছে। উচ্চাভিলাষী অপেশাদার কিছু আমলা ও সামরিক কর্মকর্তার নামও রয়েছে তালিকায়। এ ছাড়া যারা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ পাচার করেছে কমিশন সেগুলো দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করছে।
দুদক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহেনা, ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ থেকে ৫০০ কোটি ডলারের (৫৯ হাজার কোটি টাকা) বেশি আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। দুর্নীতির মাধ্যমে আশ্রয়ণ প্রকল্প, বেজা ও বেপজার আট প্রকল্প থেকে ২১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আরও ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মুজিববর্ষ পালন ও ভাস্কর্য নির্মাণ, পূর্বাচলে অনিয়মের মাধ্যমে প্লট বরাদ্দসহ বিভিন্ন অভিযোগে পৃথক তদন্ত ও মামলার মুখে পড়েছেন হাসিনা ও তার পরিবারের একাধিক সদস্য। কোনো কাজ না করে প্রকল্পের ৩১৫ কোটি টাকা লোপাট ও সরকারি আট প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সজীব ওয়াজেদ জয়,সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধেও চলছে অনুসন্ধান।
অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিগত সরকারের ৪১ জন মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে আরেকটি অনুসন্ধান চলছে দুদকে। এর অংশ হিসেবে ১৬টি মামলা হয়েছে এবং তিনজনের সম্পদ বিবরণী জারি হয়েছে। এ অনুসন্ধান ও তদন্তের আওতায় আছেন হাসানুল হক ইনু, শেখ হেলাল উদ্দিন, আনিসুল হক, দীপু মনি, টিপু মুনশি, গোলাম দস্তগীর গাজী, শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, জাহিদ মালিক, নসরুল হামিদ বিপু, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মেহের আফরোজ চুমকি, স্বপন ভট্টাচার্য্য, আবু সাঈদ আল মাহমুদ, শেখ তন্ময়ের মতো প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা। তাদের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে নানা অভিযোগে আরও একাধিক তদন্ত ও অনুসন্ধান চলমান।
বিআরটিসির ১৩৭ বাস কেনায় কারসাজির অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরীর বিরুদ্ধে। নিয়োগ ও বদলিবাণিজ্য এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ৫ মামলায় তদন্ত চলছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারসাজি ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ লোপাট এবং প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংক থেকে ৩৬ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক। নিয়ম না মেনে ৬ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা সুদ মওকুফের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে এস আলম গ্রæপ, নাসা গ্রæপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ ও এননটেক্সসহ কয়েকটি শিল্প গ্রুপের বিরুদ্ধে।
নিজ অধিদপ্তরে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হয়েছে সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানের বিরুদ্ধে। নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে তদন্ত চলছে মুন্নুজানের ভাই শাহাবুদ্দিন আহমেদ এবং দুই ভাতিজা শামীমা সুলতানা হৃদয় ও ইয়াসির আরাফাত হৃদয়ের বিরুদ্ধে।
চাঁদাবাজি-দখলবাজি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মতো অভিযোগে অনুসন্ধান কিংবা মামলা দায়েরের পর তদন্ত চলছে সাবেক এমপি মির্জা আজম, ফাহিম গোলন্দাজ বাবেল, মোহাম্মদ হাবিব হাসানের বিরুদ্ধে।টেন্ডারবাজিসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নানা অভিযোগে তিনটি মামলায় তদন্ত চলছে সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নাজমুল হাসান পাপন এবং রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, কুমিল্লার সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে সাবেক সিটি মেয়র তাহসিন বাহার সূচনার বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি মাহবুবউল-আলম হানিফের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, অর্থ পাচারসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান। রাজধানীর মিরপুরে ৭০০ একর খাসজমি দখলসহ একাধিক অভিযোগে অনুসন্ধানের মধ্যে রয়েছেন ঢাকার সাবেক এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ।
কুইক রেন্টাল বিদ্যুতে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১৫ বছরে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা লুটের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ খানের বিরুদ্ধে। ঠিকাদারি কাজে ছেলেকে সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন অভিযোগে অনুসন্ধানের মুখে পড়েছেন সাবেক মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ওরফে রিপন মিয়ার বিরুদ্ধে। ২৩৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে। আরও যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে—সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খোকন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান, জার্মান দূতাবাসের সাবেক কাউন্সিলর কাজী তুহিন রসুল, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. খায়রুল আলম, চাঁদপুর-২ আসনের মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, রংপুর-৬ আসনের মো. নূর মোহাম্মদ মন্ডল ও ময়মনসিংহ-১১ আসনের সাবেক এমপি এম এ ওয়াহেদ, ঢাকা-১০ আসনের সাবেক এমপি ডা. এইচ বি এম ইকবাল, খুলনা-৪ আসনের সাবেক এমপি ও বাফুফের সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ, সাবেক আইনমন্ত্রীর পিএস রাশেদুল কাওসার জীবন, সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব ড. কায়কাউস, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী মোনালিসা, বরগুনা-১ আসনের ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম, সাবের হোসেন চৌধুরী, বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চক্রে ঢুকে অবৈধ ব্যবসার অভিযোগে চারটি মামলার পর তদন্ত চলছে ফেনী-৩ আসনের সাবেক এমপি লে. জে (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনী-২ আসনের সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, ঢাকা-২০-এর এমপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের মেয়ে কাশমেরী কামাল ও নাফিসা কামালের বিরুদ্ধে।
বেতন-ভাতা ছাড়া বৈধ আয় না থাকার পরও ১৩৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা ৮২টি হিসাবে লেনদেনের অভিযোগে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জোন অফিসের প্রকল্প পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনপূর্বক বিদেশে পাচারের অভিযোগে তিনটি মামলার পর তদন্ত চলছে ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে।
আরও যাদের অনুসন্ধান চলছে তারা হলেন পারদর্শী রেঞ্জ-২-এর অতিরিক্ত কর কমিশনার সাঈদুজ্জামান ভূঁইয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কালিয়াকৈরের সাবেক ভিসি অধ্যাপক মুনাজ আহমেদ নূর, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান, আইন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা, সাবেক সিএমএম মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও রেজাউল করিম চৌধুরী, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাবেক প্রথম সচিব ইদতাজুল ইসলাম, ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মো. শাহজাহান, বিএসএমএমইউর সাবেক ভিসি মো. শারফুদ্দীন, দিনাজপুর-৫ আসনের সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক মো. ইমাম উদ্দিন শেখ, সাবেক বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, বরিশাল-২ আসনের সাবেক এমপি শাহে আলম তালুকদার, মাগুরা-১ আসনের সাবেক এমপি মো. সাইফুজ্জামান শেখর, রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক এমপি ও রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম, রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক এমপি ডা. মনসুর রহমান, হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি মাহবুব আলী, মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাবেক এমপি উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, যশোর-৪ আসনের সাবেক এমপি রনজিত কুমার রায়, পাবনা-৫-এর সাবেক এমপি গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, হোটেল রিজেন্সির চেয়ারম্যান মুসলেহ উদ্দিন ও তার স্ত্রী জেবুন্নেসা, নরসিংদী-৪ আসনের সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, রাজশাহী-৬ আসনের সাবেক এমপি শাহরিয়ার আলম, কুমিল্লা-১১ আসনের সাবেক এমপি মুজিবুল হক, ঝালকাঠি-২ আসনের সাবেক এমপি আমির হোসেন আমু, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, চট্টগ্রাম-৪ আসনের সাবেক এমপি দিদারুল আলম, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দীন চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক এমডি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক আইজিপি ও কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি নূর মোহাম্মদ ও তার স্ত্রী ইসমত আরা, দুদকের সাবেক কমিশনার মো. জহিরুল হক. বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সাবেক প্রকল্প পরিচালক মেজবাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে
প্রতারণা, জালজালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগে পৃথক চারটি মামলার পর তদন্ত চলছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেবিচকের সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মালেক, সুপারিনটেনডিং ইঞ্জিনিয়ার হাবীবুর রহমান, অ্যারোনেসের কর্ণধার লুৎফুল্লাহ মাজেদ ও মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে।
ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে আরও যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, তারা হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মিজানুর রহমান, ধীরেন্দ্রনাথ শম্ভুর ভায়রা মো. সিদ্দিকুর রহমান, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাফিনুল ইসলাম, ডিজিএফআইর সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক, ৭১ টেলিভিশনের সাংবাদিক শাকিল আহমেদ, তার স্ত্রী ফারজানা রূপা, হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, শেরপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ আতিকুর রহমান আতিক, সিরাজগঞ্জ-২-এর জান্নাত আরা হেনরী, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, দিনাজপুর-২ আসনের এমপি ইকবালুর রহিম, চুয়াডাঙ্গা-১-এর এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন, পিরোজপুর-১-এর শ ম রেজাউল করিম, নাটোর-২-এর শফিকুল ইসলাম শিমুল, মানিকগঞ্জ-১-এর নাইমুর রহমান দুর্জয়, সাবেক সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২-এর সাবেক এমপি নূরুজ্জামান আহমেদ, কৃষিমন্ত্রীর পিএস মাকসুদুর রহমান মাসুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি মো. আব্দুল ওয়াদুদ, ঢাকা-১৩ আসনের সাদেক খান, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের মৃণাল কান্তি দাস, ফরিদপুর-৪-এর মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ আসনের নুরুল ইসলাম নাহিদ, নীলফামারী-২ সাবেক এমপি ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু, বান্দরবানের বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, ঢাকার সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক রেলমন্ত্রী ও পঞ্চগড়ের এমপি নূরুল ইসলাম সুজন, কক্সবাজার-২ আসনের আশেক উল্লাহ রফিক, কুমিল্লা-৮-এর সাবেক এমপি আবু জাফর শফিউদ্দিন শামীম, ভোলা-২-এর সাবেক এমপি আলী আজম মুকুল, সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাসছুল ইসলাম টুকু, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী এ বি এম তাজুল ইসলাম, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি শেখ সেলিম, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক এমপি নূরুদ্দীন নয়নসহ বেশকিছু সংসদ সদস্যের নামে।এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী আসনের সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরা, পিরোজপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মতিন, হকি ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি শফিউল্লাহ আল মুনির, কর কমিশনার সাইফুল ইসলাম, পরিষদ বিভাগের সাবেক যুগ্ম সচিব মাজেদুর রহমান, গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামী আখতার, নৌপরিবহন মন্ত্রীর সাবেক পিএস আনম আহমাদুল বাশার, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সাবেক সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, এসবির সাবেক প্রধান ও সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু, বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) শেখ আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে চলছে পৃথক অনুসন্ধান।
রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান, আইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার শামীমা ইয়াসমিন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা, রিং আইডির সাবেক এমডি শরীফুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএর প্রকল্প প্রধান সুলতান আহমেদ, সাবেক আইজিআর এ কে এম আব্দুল মান্নান, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সাবেক ডিজি আবু সালেহ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, কাস্টমস কমিশনার মুহাম্মদ জাকির হোসেন, রাজউকের সাবেক প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম, জোন-৫/২-এর পরিচালক হামিদুল ইসলাম, বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান শাহ ইমদাদুল হক, বিসিআইসির সাবেক এমডি মিজানুর রহমান, ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার আবিদ আল হাসান, অতিরিক্ত সচিব আবু ছালেহ মো. ফেরদৌস খান, ই-পাসপোর্টের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাদাত হোসেন, উপপ্রকল্প পরিচালক লে. ক. মোহাম্মদ হোসেনসহ অনেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
দুর্নীতি অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে পাচারের অভিযোগে দুই মামলার পর তদন্ত চলছে ঢাকার সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে। চেতনা বাস্তবায়নের নামে তিন বছরে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ের অভিযোগে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুদকের বিশেষ টিম। এ ছাড়া সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল থেকে ২০০ কোটি টাকা নিজ হিসাবে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ, সাবেক ডিডি আমজাদ হোসেন নিপু ও মাহদী আহমেদের বিরুদ্ধে।
সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শত শত কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগে তদন্ত চলছে এসএসএফের সাবেক ডিজি লে. জে. (অব.) মুজিবুর রহমান ও এনএসআইর সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল টি এম যোবায়েরের বিরুদ্ধে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ে ব্যবসা পরিচালনা এবং বাড়ি ক্রয়ের অভিযোগে অনুসন্ধান ও তদন্ত চলছে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে। ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে রাজশাহী রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন এবং বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান মো. হাইয়ুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে। অপরাধ বিশেজ্ঞ ও আইনজীবীদের মতে এসব দুর্নীতিবাজদেও বিকরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে আইন সংশোধন কওে হলেও অপরাধেিদও কঠোর সাজা না হলে দেশ থেকে দুর্নীতি বন।দ হবে না। াপরাধীরা যাতে পার পেয়ে না যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে এটাই জাতির প্রত্যাশা।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!