বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১

ছাগলকান্ডের মতিউরকে গ্রেপ্তার করা হবে!

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৪, ০৮:৪৯ পিএম

ছাগলকান্ডের মতিউরকে গ্রেপ্তার করা হবে!

দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত ছাগলকান্ডের এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। তৃতীয় দফায় এনবিআরের কর্মকর্তা মতিউরের আরো সম্পদ জব্দ ও ফ্রিজ করার জন্য আদালতে আবেদন করেছে দুদক। প্রয়োজনে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এসময় আদালতে ১৩৭ শতাংশ জমি, বসুন্ধরায় ৮ হাজার ৭০ স্কয়ার ফিটের কমার্শিয়াল স্পেস এবং ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা মূল্যের ১৯টি কোম্পানির শেয়ার জব্দ ও ফ্রিজ করার আবেদন করেছে দুদক।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুদক সূত্র থেকে জানা যায়, অবৈধ সম্পদ এবং ব্যাংক হিসাবের টাকার অনুসন্ধানে রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা সরানোর তথ্য মিলেছে। ১১৫টি ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে দেয়া যায়, সেখানে মাত্র ৪ কোটি টাকা রয়েছে। আর ছাগলকান্ড নিয়ে হট্টগোলের মধ্যেই এসব হিসাব থেকে ৮ কোটি টাকা তুলে নেন মতিউর। এর আগে, ৩০ জুন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ক্রয় করা কোনো জমি আছে কি না, সেটি জানতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে চিঠি দেয় দুদক। এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৪, ২০০৮, ২০১৩ ও ২০২১ সালে মোট চারবার অনুসন্ধান করে দুদক। প্রতিবারই অনুসন্ধান পর্যায় থেকে শেষ হয়েছে কার্যক্রম।  তবে কোরবানি ঈদে ছেলের ছাগলকান্ডে দেশব্যাপী আলোচনায় আসার পর পঞ্চমবারের মতো মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। ২০০৪ সালের অভিযোগ ছিল হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচারের। অভিযোগ আছে, হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা টাকা প্রবাসী কোনো এক আত্মীয়ের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে তা রেমিট্যান্স বাবদ দেখিয়েছিলেন ট্যাক্স ফাইলে।
২০০৮ সালের অভিযোগ, বিলাসবহুল পণ্যের শুল্ক মাফ করিয়ে দেয়ার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের। কিন্তু তদন্ত শুরু হতে না হতেই প্রভাবশালীদের চাপে তা চাপা পড়ে যায়, ক্লিন শিট পান মতিউর। এরপর ২০১৩ ও ২০২১ সালের অভিযোগ ছিল অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তির। কিন্তু কৌশলী মতিউর অবৈধ সম্পদকে পারিবারিক ব্যবসা ও ঋণ দেখিয়ে প্রস্তুত করেন ট্যাক্স ফাইল। ফলে আবারো ক্লিন শিট।
গত ৪ জুন দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মইনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে কমিশন সভায় মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে পঞ্চম বারের মতো অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একজন উপ-পরিচালককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধানী টিম গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে সদস্যরা কাজও শুরু করেছেন। এতে মতিউরের নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য সামনে আসছে।
ঈদুল আজহার আগে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর প্রেক্ষিতেই এনবিআরের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!