বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলা তিন-চারটির রায় হতে পারে অক্টোবরের মধ্যে

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫, ১১:৪৬ এএম

জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলা তিন-চারটির রায় হতে পারে অক্টোবরের মধ্যে

দেশে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা মামলারকয়েকটির রায় চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যেই হতে পারে। বলা হচ্ছে ৩-৪টির মামলার রায় এ সময়ের মধ্যে হবে। আদালত সুত্র জানায় মানবতাবিরোধী অপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দায়েরকৃত মামলার মধ্যে ৩/৪টি মামলার রায় অক্টোবরে হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করছেন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন,আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুরোপুরিভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে চার মাস আগে। এর মধ্যে আদালতে ৩০০টির বেশি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমাদের প্রসিকিউশন টিম যাচাই-বাছাই করে ১৬টি মামলা দায়ের করেছে। ১৬টি মামলার মধ্যে চারটি তদন্তকাজ এ মাসের মধ্যেই শেষ হবে বলে আমরা আশা করি। এরপর চার্জ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কাজ শুরু হবে। আসিফ নজরুল বলেন, আইন অনুযায়ী বিচারকাজ শুরু হওয়ার তিন সপ্তাহ সময় প্রস্তুতির জন্য ডিফেন্স আইনজীবীদের দিতে হয়। আমরা আশা করছি এই তিন সপ্তাহ সময় অতিবাহিত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষ্য গ্রহণের যে প্রক্রিয়া, যেটা আপনারা খুব ঘন ঘন দেখবেন। এই সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়াটা শুরু হবে ঈদের পরপর এপ্রিল মাস থেকে। আদালতে অব্যাহতভাবে শুনানি হয় বলে মামলার রায় পরবর্তী চার থেকে ছয় মাসের মধ্যে প্রদান করা যাবে বলে আশা করি। সেই হিসাবে অক্টোবরের মধ্যে তিন-চারটি মামলার রায় পেতে যাচ্ছি বলে আশা করি। চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে কথা বলে আমি আমার ধারণা ব্যক্ত করছি।
এদিকে ট্রাইব্যুনালের আদেশ ছাড়াই তদন্ত সংস্থা মামলার যে কোন ধরনের ডকুমেন্টেশন ও আলামত জব্দ এবং যে কোন স্থানে তল্লাশি করতে পারবেন। জব্দকৃত আলামত পরীক্ষার জন্য যেকোন স্থানে পাঠাতে পারবেন। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, ৭৩ পুনরায় সংশোধন করে তদন্ত সংস্থাকে এই ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। এই আইনের অধীনে করা মামলার আসামির সম্পত্তি ফ্রিজ করা এবং আসামির বিদেশ যাত্রার বিষয়ে যে কোন সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার ট্রাইব্যুনালকে দেওয়া হয়েছে। এই আইনে সর্বশেষ সংশোধনী এনে সোমবার এ সংক্রান্ত গেজেট জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আইন সংশোধনের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।
সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা বলেন,জুলাই হত্যাকান্ডের যে বিচার, সেই বিচারের অগ্রগতি কী হয়েছে সেটা জানতে চান অনেকে। একটা কমন অভিযোগ হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে জুলাই হত্যাকান্ড সংক্রান্ত যে মামলাগুলো সেই মামলার দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। এ ধরনের অসন্তুষ্টির কথা অনেকে বলেন। আমরা উনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার পর ইতিমধ্যে এ আদালতে বিচারের যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এ সমস্ত মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, শীর্ষস্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আসামি হিসেবে রয়েছেন। 
তিনি বলেন,যদি পুরো বিচারকার্যটা ধরি,পুরো বিচারকার্যটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের এক বছরের মতো সময় লাগছে। তিনি বলেন, আমাদের প্রসিকিউশন টিম,তদন্ত টিম প্রচন্ড নিষ্ঠার সঙ্গে দিনরাত কাজ করছেন। নিয়মিত খবর রাখছি। এখন যে বিচার হচ্ছে এটার সাক্ষ্য প্রমাণ এত বেশি আছে, যে কারণে আমরা আশা করছি এক বছরের মধ্যেই আমরা প্রথম কয়েকটি রায় পাবো। 
আগামী দু-একদিনের মধ্যে জাতিসংঘের তদন্ত টিমের প্রতিবেদন পাওয়া যাবে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, আমি এই রিপোর্টের ব্যাপারে এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলবো না। তবে একটা জিনিস বলে রাখি, তাদের এই রিপোর্ট আমাদের তদন্ত কাজটাকে, বিচারকাজটাকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও পাশাপাশি স্বচ্ছ ও সহজ করতে অনেক অবদান রাখবে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!