রাজধানীর ধানমন্ডিতে বুধবার ২৬ মার্চ ভোররাতে একটি বাসায় র্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট এবং ছাত্র পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে পালিয়ে যাওয়া অন্য ডাকাতেরা প্রায় ২৫ লাখ টাকা এবং কিছু স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।গ্রেপ্তার চারজন হলেন ফরহাদ বিন মোশারফ (৩৩), ইয়াছিন হাসান (২২), মোবাশ্বের আহাম্মেদ (২৩) ও ওয়াকিল মাহমুদ (২৬)। আটকের পর তাঁদের বেধড়ক মারধর করেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা।
পুলিশ জানিয়েছে, বাসার পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় অলংকার নিকেতন জুয়েলার্সের মালিক এম এ হান্নান আজাদ থাকেন। আর তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অফিস। তল্লাশির নাম করে র্যাবের পোশাক পরিহিত কয়েকজন ছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ছাত্র পরিচয়ে সেখানে ডাকাতি করা হয়।
বাসার মালিক এম এ হান্নান আজাদ রাতে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেহরির পর নিচে শব্দ শুনতে পাই। পরে সিসি ক্যামেরায় দেখি-নিচে ২০-২৫ জন দাঁড়িয়ে আছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে বাসার চারটি গেট ভেঙে আমার দরজায় চলে আসে এবং দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। ঢুকেই বলে বাসায় যত টাকা ও স্বর্ণালংকার আছে সব দিয়ে দিতে। না দিলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে এমন ভয় দেখায়।’
হান্নান আরও বলেন, ‘বাসায় কিছু নাই বলার পর তারা প্রতিটি রুম তছনছ করে খুঁজে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ও আমার স্ত্রীর ব্যবহার করা কয়েক ভরি স্বর্ণ নিয়ে যায়। পরে আমাকে নিচে নামতে বলে। এরই মধ্যে লোকজন টের পেয়ে তাদের কয়েকজনকে ধরে ফেলে। আর বাকিরা তাঁদের সঙ্গে নিয়ে আসা চারটা গাড়িতে করে চলে যায়। পুলিশকে খবর দিলে তারাও ঘটনস্থলে এসে চারজনকে আটক করে। পরে বিকেলে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করি।’ডাকাতেরা কয়েকজন র্যাবের পোশাক পরিহিত ছিলেন বলেও জানান তিনি।
বুধবার ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ডিএমপির ধানমন্ডি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান বলেন, বুধবার ভোর রাতে ধানমন্ডির ৮ নম্বর সড়কের একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ২০ থেকে ২৫ জন ওই বাসায় ডাকাতি করতে যায়। তারা সেখানে র্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট এবং ছাত্র পরিচয় দেয়। ডাকাত দলের ১০ জনের মতো র্যাবের পোশাকে ছিল। এরপর বাসায় তারা ডাকাতি শুরু করে।
তারিকুজ্জামান আরও বলেন, বাসার মালিক তাৎক্ষণিকভাবে ৯৯৯ নম্বরে কল দেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পাশেই একটি ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। সেখানকার শ্রমিকদের সহযোগিতায় চার ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় দুজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, বাসাটি জুয়েলার্সের মালিকের স্ত্রীর ব্যবহার করা কিছু স্বর্ণালংকার ও ভবনটির তৃতীয় এবং চতুর্থ তলায় একটি অফিস থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ডাকাতেরা নিয়ে গেছে বলে দাবি করা হয়েছে।এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনসহ পলাতকদের আসামি করে জুয়েলার্সের মালিক এম এ হান্নান আজাদ বাদী হয়ে ধানমন্ডি মডেল থানায় এজাহার দিয়েছেন। ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পলাতক কয়েকজন ডাকাতকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
আপনার মতামত লিখুন :