শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মান্নার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারী ইসলামী ব্য্ংকের

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৫, ১২:০১ পিএম

মান্নার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারী ইসলামী ব্য্ংকের

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের নামে খেলাপি ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা পরিশোধে ‘কল ব্যাক নোটিশ’ জারি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এবং তার অংশীদার জুলাই গণহত্যার ৯ মামলার পলাতক আসামি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এ বি এম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরী।
গতকাল বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখা প্রধান মো. তৌহিদ রেজা স্বাক্ষরিত এ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে বলা হয়েছে, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
ঋণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ-খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও মান্না ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করেননি। বারবার নোটিশ করা হলেও টাকা পরিশোধের কোনো চেষ্টাও করেননি তিনি।
ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও, মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
ইসলামী ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না হলে তারা আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
অভিযোগ উঠেছে, প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগের একটি বড় অংশ মান্না আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে মিলে আত্মসাৎ করেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, পুলিশের বিশেষ শাখার তথ্যমতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান চৌধুরী ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান। অনেকেই বলছেন, শাহজাহান চৌধুরীর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে এ টাকা পাচার করেছেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
এদিকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর ১৬ (ঠ) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ঋণগ্রহিতা ঋণখেলাপি হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন। সে ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী ঋণখেলাপি অবস্থায় মাহমুদুর রহমান মান্না আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
মান্নার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড়-স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে আসছেন মাহমুদুর রহমান মান্না, সেই দলেরই এক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে তিনি ব্যবসায় যুক্ত। যে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার জন্য ৯টি মামলা রয়েছে বগুড়া সদর ও শিবগঞ্জ থানায় রয়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনগণ।
এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না গণমাধ্যমকে বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ আছে, এটা সঠিক। তবে চিঠির বিষয়ে তিনি এখনো কিছু জানেন না। তিনি কোনো চিঠি পাননি।
আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে ব্যবসা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি জেল খেটেছি দুই বছর, রিমান্ডে ছিলাম ৪৮ ঘণ্টা। তাহলে আমি দোসর না হলে কি শাহআলম দোসর? আমার এমডি আওয়ামী লীগ করে, সেটা ঠিক আছে। কারণ কোম্পানিটা হয়েছে ১৫ থেকে ১৬ বছর আগে। তখন তো আমিও আওয়ামী লীগ করতাম। এ কথা তো সঠিক যে গত ১০ বছরে এই কোম্পানির কাছে আমি যেতেই পারিনি। কারণ ওই ছেলে সব নিয়ন্ত্রণ করত। আমাকে সাপোর্ট দেয়নি। কিন্তু টাকাপয়সা নিয়ে সব আমেরিকা পাঠিয়ে দিয়েছে। এটাও ঠিক যে সে আমেরিকা পালিয়ে গেছে। ছবি-সংগৃহীত

 

 

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!