মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

টিউলিপের রয়েছে বাংলাদেশের এনআইডি-পাসপোর্ট

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৫, ১২:০৬ পিএম

টিউলিপের রয়েছে বাংলাদেশের এনআইডি-পাসপোর্ট

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির একজন সংসদ সদস্য। ২০১৭ সালে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন,‘আমি বাংলাদেশি নই, আমি একজন ব্রিটিশ এমপি।’ তবে সরকারি নথি বলছে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক একজন বাংলাদেশি নাগরিক। তার নামে রয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন)। এমনকি তিনি জমা দিয়েছেন আয়কর রিটার্নও। এসব প্রমাণপত্র বলছে, তিনি একজন বাংলাদেশি নাগরিক ও ভোটার। 
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকসহ শেখ পরিবারের ১০ সদস্যের এনআইডি ‘লক’ করা হয়েছে।দুদক সূত্রে জানা যায়, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর- ৫০৬৬.....৮।
এটি ২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি ইস্যু করা হয়েছিল। এনআইডি অনুসারে তার নাম টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক (ঞটখওচ জওতডঅঘঅ ঝওউউওছ)। বাবার নাম শফিক আহমেদ সিদ্দিক এবং মাতার নাম রেহানা সিদ্দিক। জন্ম তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮২।রক্তের গ্রæপ- বি (+) পজিটিভ। ঠিকানা লেখা রয়েছে বাসা/হোল্ডিং : ৫৪, গ্রাম/রাস্তা- ০৫, ধানমন্ডি আ/এ, ডাকঘর : নিউ মার্কেট-১২০৫, ঢাকা সিটি করপোরেশন, ঢাকা। যা কিনা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনের হোল্ডিং নম্বর।
এনআইডি ছাড়াও টিউলিপ সিদ্দিক নির্বাচন কমিশনের তালিকাভুক্ত ঢাকার ভোটার। ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বরের হালনাগাদ তথ্যানুসারে তার ভোটার নম্বর ২৬১৩.......৯।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টিউলিপ সিদ্দিকের রয়েছে বাংলাদেশি পাসপোর্টও। তার বাংলাদেশি প্রথম পাসপোর্ট নম্বর- কিউ .....৯৯ (ছ .....৯৯)। ২০০১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইস্যু হওয়া প্রথম পাসপোর্টে জন্মস্থান ও পাসপোর্ট প্রদানের স্থানে লন্ডন, ইউকে (যুক্তরাজ্য) উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ লন্ডনে থাকা অবস্থায় পাসপোর্টটি করা হয়। যেখানে উচ্চতা পাঁচ ফুট, পেশা- শিক্ষার্থী, নাম রিজওয়ানা সিদ্দিক, বাবা ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক এবং মাতার নাম রেহানা সিদ্দিক উল্লেখ আছে। 
ওই পাসপোর্টের মেয়াদ ২০০৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হলে ২০১১ সালে নবায়নের জন্য আবেদন করা হয়। সেই পাসপোর্টের নম্বর- এএ ......৪ (অঅ ......৪)। এটি ইস্যু করা হয় ২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি। মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি। পাসপোর্টের টাইপ অর্ডিনারি (ঙজউওঘঅজণ) এবং পাসপোর্ট প্রদানের স্থান ছিল আগারগাঁও। অর্থাৎ বাংলাদেশে বসেই পাসপোর্টটি নেওয়া হয়েছে। সেখানে ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট পারসন হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকের নাম ও ঠিকানা দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শেখ হাসিনার শাসন আমলের নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ বড় পরিসরে তদন্ত শুরু করে দুদক। তার অংশ হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করছে সংস্থাটি।
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার পর আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’-এর পদ থেকে পদত্যাগ  করেন। প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগের মামলায় দুদকের অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার একটি আদালত।বাংলাদেশে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে লন্ডনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষগুলোর কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমার আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে তারা কখনো এর জবাব দেয়নি।’

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!