বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১

কমপ্লিট শাটডাউনে সারা দেশে ত্রিমুখী সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত,আহত ৭শতাধিক

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম

কমপ্লিট শাটডাউনে সারা দেশে ত্রিমুখী সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত,আহত ৭শতাধিক


কমপ্লিট শাটডাউনে সারা দেশে এখন পর্যন্ত তিমুখী সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত এবং ৭শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে রাজধানীর মালিবাগে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের অ্যাকশন। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ–যুবলীগের সংঘর্ষ চলার মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত আরও দুজনের মরদেহ এসেছে। তাঁদের বয়স ২০ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, একজনের নাম মোহাম্মদ। তাঁকে আজিমপুর থেকে আনা হয়েছে। অন্যজনের নাম নাজমুল। তাঁকে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আনা হয়েছে। মোহাম্মদের শরীরে ছররা গুলির ক্ষত দেখা গেছে। নাজমুলের শরীরে রয়েছে কোপের আঘাত।
ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নাজমুলের স্বজনেরা উপস্থিত হয়েছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, নাজমুল ব্যবসায়ী। ঘটনার ঘণ্টা দুয়েক আগে তিনি বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। সংঘর্ষের মধ্যে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে নরসিংদীতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাহমিদ তামিম (১৫) ও মো. ইমন মিয়া (২২) নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে ইমন এবং জেলা হাসপাতালে তাহমিদের মৃত্যু হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরেও সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দার হাট এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষের মধ্যে তাঁরা গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের একজন পটিয়া সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র মোহাম্মদ ইমাদ (১৮)। আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাঁর বয়স ২২ বছর।
বিকেলে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন বলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার জানিয়েছেন।
এই ছয়জনকে নিয়ে আজ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও ছাত্রলীগ–যুবলীগ নেতা–কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন।
সংঘর্ষে নিহত চারজনের মরদেহ রাজধানীর উত্তরার বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে রয়েছে। হাসপাতালটির পরিচালক মিজানুর রহমান বলেছেন, চারজনের মধ্যে দুজন শিক্ষার্থী। অপর দুজনের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
এর আগে উত্তরায় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে দুজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। তাঁদের একজনকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান এবং আরেকজন উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে মারা যান। দুই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সব মিলিয়ে উত্তরায় ছয়জনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে হাসপাতাল সূত্রে। এ ছাড়া ধানমন্ডিতে সংঘর্ষে ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের এক শিক্ষার্থী, রামপুরায় এক পথচারী, যাত্রাবাড়ীতে এক রিকশাচালক, সাভারে এক শিক্ষার্থী ও মাদারীপুরে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় সকাল থেকে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলছে। সন্ধ্যার দিকে সেখান থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় এক রিকশাচালককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন এক ব্যক্তি। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রিকশাচালকের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তাঁর বয়স আনুমানিক ৩০ বছর।
রাজধানীর উত্তরায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও র‌্যাবের সংঘর্ষ শুরু ১৮ জুলাই  বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর থেকে। ঘটনাস্থল থেকে গাজীপুর সংবাদদাতা জানান, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের সামনে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করছেন। সেখানে অনেক আহত রয়েছেন। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রামপুরা এলাকায়
সহিংসতা চলছে রাজধানীর আরও বেশ কয়েকটি এলাকায়। সকালে মেরুল বাড্ডা এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা পাশের রামপুরা ও মালিবাগ এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। রামপুরায় বিটিভি ভবনে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধরা। সংঘর্ষ চলছে শনির আখড়া এলাকায়। এদিকে সকাল থেকে রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭ নম্বর এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। দুপুরে সংঘর্ষে আহত ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র নিহত হয়েছেন।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!