ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

ভুটান থেকে বাংলদেশে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠকে সে দেশের ভূমি ব্যবহারে সহায়তা চান সরকারপ্রধান। ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সাক্ষাৎকালে এ সহায়তা চান তিনি। ২৫ মার্চ ভুটানের রাজার বাংলাদেশ সফরে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি স্ই হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানির জন্য এন্টি-ডাম্পিং ব্যবস্থা প্রত্যাহার করতেও ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সৈয়দপুরে রেলওয়ে ওয়ার্কশপ আধুনিকায়ন করতেও দেশটির সহযোগিতা চান তিনি। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গতিশীল হবে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাশিত বিদ্যুৎ সহজে আমদানি করতে ভারত পক্ষের সহায়তা চেয়েছেন। বাংলাদেশ ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা করছে এবং ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বৈঠকে ভারতের আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সম্ভব করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকান্ডের পর এবং ১৯৯৬ সালের আগে নির্বাচনে জয়লাভের সিদ্ধান্ত এবং কোন দল ক্ষমতায় থাকবে বা আসবে তা নির্দিষ্ট মহল দ্বারা নির্ধারিত হত। সে কারণে আওয়ামী লীগ ১৯৯১ সালে জনসমর্থন পেলেও জয়ী হতে পারেনি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিন্তু, ১৯৯৬ সালে নির্দিষ্ট মহল গণমানুষের ইচ্ছার কাছে মাথা নত করে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ প্রথমবারের মতো সে দুষ্টচক্র ভাঙে।’ প্রণয় ভার্মা উল্লেখ করেন যে,গত বছর ভারতীয় ঋণ ব্যবস্থার (এলওসি) আওতায় বাংলাদেশে মোট চারটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। ‘এবং আরও দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পাইপলাইনে রয়েছে, বলেন তিনি।
ভারতীয় হাইকমিশনার রুপি-টাকা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক লেনদেন, ডিজিটাল পেমেন্ট নেটওয়ার্ক এবং বঙ্গবন্ধু বায়োপিকের মতো দুই দেশের কিছু যুগান্তকারী উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর এই সিইপিএ সহায়ক হবে বলে উল্লেখ করে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘এলওসিকে প্রকল্প ভিত্তিক করার জন্য একটি নতুন কাঠামো তৈরি করতে নতুন চিন্তাভাবনা ও আলোচনা চলছে।’প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘ভারত থেকে ডিজেল আমদানির জন্য সৈয়দপুর থেকে নাটোর পর্যন্ত ডিজেল পাইপলাইন সম্প্রসারণের উদ্যোগ রয়েছে। কিছু বিশ্ব বিখ্যাত প্রতিরক্ষা শিল্প ভারতে তাদের কারখানা স্থানান্তর করছে। বাংলাদেশ ভারতের যৌথ উদ্যোগে এখানে একটি প্রতিরক্ষা কারখানা স্থাপন করতে পারে।’
হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে আরও জানান যে তারা রংপুরে একটি অফিস স্থাপনে আগ্রহী। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করে সরকার বিবেচনা করবে। তিনি শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রণয় ভার্মা ভারতের জাতীয় নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।