বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশটির সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। বুধবার ১৫ মে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘আমরা সামনে তাকাতে চাই। পিছনের দিকে নয়। এর আগেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাংবাদিকদের ডোনাল্ড লু বলেন, সম্পর্ক পুনর্গঠনে আমি ঢাকা এসেছি। আমরা আস্থা পুনর্র্নিমাণ করতে চাই।হাছান মাহমুদের সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠক করেন লু। সংবাদ সম্মেলনে মুখে ছিলো স্বভাবসুলভ হাসি। তবে এবার আর নির্বাচনের আগের মতো কড়া বার্তা নয়, এসেছেন সহযোগিতার কথা বলতে।লিখিত বক্তব্যে ডোনাল্ড লু জানান, সম্পর্কে টানাপোড়েন থাকতে পারে। তবে তা আর সামনে আনতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র। তিন দিনের সরকারি সফরে মঙ্গলবার ১৪ মে ঢাকায় এসেছেন ডোনাল্ড লু। গত জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার এটিই প্রথম সফর।ঢাকা আসার পর লু রাতেই যোগ দেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসভবনের নৈশভোজে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সরকারের বেশ কয়েকজন নীতি নির্ধারক।
জো বাইডেনের হয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্বে আসার পর থেকেই বাংলাদেশে আলোচিত ডোনাল্ড লু। ভিসা নীতি, মানবাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে এর আগে সরব দেখা গেছে তাকে।তবে এবারের সফরের শুরু থেকেই সরকার ঘনিষ্ঠ হিসেবে মনে করা হচ্ছে লুকে; নির্বাচনের আগে যখন একাধিকবার ঢাকা সফর করেছিলেন, তখন অবশ্য এমনটি দেখা যায়নি। তাকে নিয়ে তখন সরকারবিরোধীরাই বেশি মাতামাতি করেছিল।এবার অবশ্য চিত্র পাল্টেছে। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রকাশ্যেই বলা হয়েছে যে, ডোনাল্ড লুর সফর নিয়ে তারা উৎসাহী নয়।
এদিন সাংবাদিকদের কাছে ডোলান্ড লু নিজেও আগের সেই অবস্থানের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বলেছেন, আমরা সহিংসতামুক্ত নির্বাচন চেয়েছিলাম। তাই অস্বস্তি ছিলো, যা হতেই পারে।মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত বছর আমাদের মধ্যে অনেক টেনশন ছিলো। আমরা অনেক কঠোর পরিশ্রম করেছি; একটি মুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য, যেন কোনো সহিংসতা না হয়।ঢাকায় এসে ফুচকা খেয়ে লু বললেন ‘বেস্ট’ঢাকায় এসে ফুচকা খেয়ে লু বললেন ‘বেস্ট’
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা হিসাবে ইতিবাচক বিষয়েই আলাপ হয়েছে তাদের; যেখানে গুরুত্ব পেয়েছে বিনিয়োগ,বাণিজ্যসহ যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়গুলো। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেজের এক পোস্টে লেখা হয়েছে, সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। ১৫ মে বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আমাদের আলোচনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গড়ে তোলা,কর্মশক্তি বৃদ্ধি, নিরাপত্তা সহযোগিতার উন্নতি, জলবায়ুু সংকট মোকাবেলা এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমাদের মূল্যবোধকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের যৌথ অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করেছে,’ লেখা হয়েছে ওই পোস্টে। এর আগে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন ডোনাল্ড লু, সেখানেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার নিয়ে আলোচনা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :