বৃষ্টির পানিতে ঢাকার রাস্তায় সমুদ্রের ঢেউ যেনো আচড়ে পড়ছে। এক নগরে দুই মেয়র থাকা সত্বেও নগরবাসীর কষ্ট দুর হয় না। ১২ জুলাই কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ এলাকার সড়ক। কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরসমান পানি। এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রয়োজনে বের হওয়া নগরবাসী ও শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।
শুক্রবার (১২ জুলাই) ভোর থেকে শুরু হওয়া মুষলধারার বৃষ্টিতে রাজধানীর গ্রিন রোড, মিরপুর, ধানমন্ডি, জিগাতলা, হাজারীবাগ, বনানী, মোহাম্মদপুর, মালিবাগ-মগবাজার, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বাংলামোটর, বনশ্রী, বাড্ডা, আজিমপুর এলাকার সড়কে কোমর পানি জমে গেছে। বড় বড় ঢেউ আচড়ে পরছে।
বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ঢাকার কল্যাণপুরের প্রধান সড়ক। দেখা যায়, কল্যাণপুর নতুন বাজার মোড় থেকে কল্যাণপুর গার্লস স্কুল পর্যন্ত আধা কিলোমিটার সড়ক পুরো পানির নিচে ডুবে আছে। রিকশার পাদানিতে পানি উঠে যাচ্ছে। পথচলতি মানুষের হাঁটু ডুবে যাচ্ছে।
ধানমন্ডি ২৭, গ্রিন রোড, মিরপুর ও মগবাজার এলাকার প্রধান সড়কসহ প্রায় সব অলিগলিতে হাঁটু সমান, কোথাও কোথাও কোমরসমান পানি জমেছে। এতে একদিকে যেমন দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারীরা। অন্যদিকে প্রাইভেটকার ও সিএনজির ইঞ্জিনে পানি ঢুকে রাস্তার মধ্যে আটকে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে গাড়ির ধীর গতির কারণে সৃষ্টি হয়েছে যানজটের।
অনেকটা পানির সঙ্গে যুদ্ধ করেই সকাল পার করতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে। আর এই সুযোগে কোথাও কোথাও রিকশা ও ভ্যান চালু হয়েছে সড়ক পারাপার করতে। মানুষও বাধ্য হয়ে এসব বাহনে বেশি ভাড়া দিয়ে পারাপার হচ্ছেন। টানা বৃষ্টিতে অনেক দোকান ও মার্কেটে পানি ঢুকে গেছে। নিউমার্কেটের নিচতলার কিছু দোকানে পানি ওঠার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় রাজধানীতে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি শুধু রাজধানীতে নয় দেশের সর্বত্রই হয়েছে। আর এমনটা চলতে পারে প্রায় সারাদিন।
আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেও রাতে পর থেকেই বৃষ্টির ধারা কমে আসবে। আগামীকাল থেকে বৃষ্টি আরও খানিকটা কমে যেতে পারে। বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা কমে আসবে।তিনি বলেন, রাজধানীতে সকাল থেকে তিন ঘণ্টায় ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে তাতে এটি আজ সকালে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। তবে সব তথ্য এখনও এসে পৌঁছায়নি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে খুলনায় ৫৫ মিলিমিটার। বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উওরাঞলের অধিকাংশ নদ-নদীতেও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :