শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

নির্বাচনের আগে আ. লীগের বিচার হতে হবে, নিষিদ্ধ করতে হবে

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ০৬:৫১ পিএম

নির্বাচনের আগে আ. লীগের বিচার হতে হবে, নিষিদ্ধ করতে হবে

সংস্কার ও নির্বাচনের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর শাহবাগে ‘শহীদি সমাবেশে’ জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের সদস্যরা এসব দাবি জানান।‘জুলাই, পিলখানা, শাপলা গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে’ এ সমাবেশের আয়োজন করে ইনকিলাব মঞ্চ।
সমাবেশে শহীদ পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম,আপ-বাংলাদেশের সংগঠক আলী আহসান জুনায়েদ, আমার বাংলাদেশ-এবি পার্টির সেক্রেটারি ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সমাবেশে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ইমাম হাসানের ভাই রবিউল আউয়াল বলেন,‘এ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কেন আমাদের রাস্তায় দৌঁড়াতে হবে। এখানে একটি প্রহসন চলছে। বাংলাদেশে সংস্কার হবে, নির্বাচন হবে; তবে তার আগে বিচার হওয়া লাগবে। সংস্কারের মূল বিষয় হওয়া উচিত বিচার।
শহীদ সাইমের মা বলেন, যাত্রাবাড়ীতে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়। আমার ছেলের কী দোষ? সে আন্দোলন করতে নেমেছিল। তার হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।তিনি বলেন, ‘আমার বুকটা শূন্য করে দিয়েছে। আমার সোনার ছেলেটাকে হত্যা করছে। ঈদ গেল, আমি ঈদ করতে পারি নাই। আমাদের বুকে রক্তক্ষরণ হয়। আমার ছেলের হত্যার বিচার পাই নাই।
এই স্বৈরাচার হাসিনাকে যেন দেশে এনে ফাঁসি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ যেন আর না আসে। তাদের নিষিদ্ধ চাই। এটাই আমাদের আকুতি। আমাদের যে কষ্ট, আমার ছেলে নাই। কখন আমার ছেলের বিচার পাব?’
শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন,‘আমার ছেলেকে আশুলিয়ায় ভ্যানের ওপর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ও তখন জীবিত ছিল। আমি যখন ওর লাশ পাই, ওর পায়ে মাংস ছিল না। আমার সন্তান মানুষ করতে কি কষ্ট হয়নি? তাকে এভাবে হত্যা করা হলো?’
তিনি বলেন,আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এদের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। নইলে কিন্তু আমি ছাড়ব না। এক সন্তান মারা গেছে। দেশে আমার শত শত সন্তান আছে, তারা ছাড়বে না।’
২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকান্ডে নিহত মেজর তানভীর হায়দার নূরের স্ত্রী তাসনূভা মাহা বলেন, ‘আজও আমার স্বামীকে পাওয়া যায়নি। একটা লাশ দাফন হয়েছে, সেটি আমার স্বামীর নয়। সেদিন আমার রুমের বাইরে তিনজন হিন্দিভাষী ছিল। আমার সন্তানদের কাপড় খুলে চেক করেছিল ছেলে নাকি মেয়ে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে এত মায়ের বুক খালি হলো। আপনারা বিচার না করতে পারলে আমরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারব না।’শহীদ সোহেল রানার ভাই বলেন, ‘যে দল আমার ভাইয়ের মতো দুই হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, আপনারা তাদের ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন! আমার ভাইকে রায়েরবাজারে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। কোনটা আমার ভাইয়ের কবর তা পর্যন্ত জানি না। অন্তর্র্বতী সরকার কেন ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে লাশ শনাক্তের উদ্যোগ নেয়নি?’
আপ-বাংলাদেশের সংগঠক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ জন্য মাঠে নামতে হচ্ছে। এটা লজ্জাজনক। আমরা বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না।’
এনসিপির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন,সংস্কার না নির্বাচন, আপনারা এই খেলা বাদ দিয়ে বিচার নিশ্চিত করুন। বর্তমান সরকারের বৈধতা হচ্ছে শহীদরা। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের হত্যাকান্ডের বিচারের আগে বাংলাদেশে কোনো কিছু প্রাসঙ্গিক হতে পারে না।’

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!