বুধবার, ০৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১

‘ডিবিতে আয়না ঘর, ভাতের হোটেল থাকবে না’: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৫, ০৩:৫৮ পিএম

‘ডিবিতে আয়না ঘর, ভাতের হোটেল থাকবে না’: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অন্তর্র্বতী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আয়নাঘর বা ভাতের হোটেল বলে কিছুই থাকবে না। আর ডিবি সিভিল ড্রেসে কাউকে আটকও করতে পারবে না। অবশ্যই ডিবিকে জ্যাকেট পরিধান ও আইডি কার্ড দেখাতে হবে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে ডিবি কার্যালয় পরিদর্শন শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।ডিবি কার্যালয়ে আয়নাঘর ছিল বলে জেনেছি। আপনি ডিবি কার্যালয় পরিদর্শন করলেন। ডিবিতে সেই আয়নাঘর এখনো অক্ষত রয়েছে কিনা- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,আয়নাঘর বলে কিছু নেই। আমি ডিবিকে বলেছি ডিবি কার্যালয় ভেতরের এই পুকুরটা যেন আয়নার মতো পরিষ্কার থাকে। আয়নাঘর বলে কিছু থাকবে না, কোনো ভাতের হোটেলও থাকবে না।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমি ডিবিকে বলেছি, সিভিল ড্রেসে কাউকে ধরবে না,অবশ্যই জ্যাকেট পরিধান করবে। এছাড়া আইডি কার্ড শো করতে হবে। আইনের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করবে না। আমিও যদি আইনের বাইরে গিয়ে কোনো বেআইনি নির্দেশনা দিই, সেটা তারা মানবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,পুলিশ নিয়োগ,এসআই নিয়োগে আমরা কোনো সুপারিশ করিনি, এটা কেউ বলতে পারবে না। আমিও যদি কোনো দুর্নীতি করি, তা আপনারা প্রকাশ করে দেন। কিন্তু সত্যিটা প্রকাশ করেন। বলে দেন ওই জায়গায় টাকা খেয়েছি, লিখে দেন। আমার কোনো আপত্তি থাকবে না।
তিনি বলেন, আজকে ডিবি কার্যালয়ে রুুটিন ভিজিটে এসেছিলাম। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কীভাবে আরো উন্নত করা যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেশ সন্তোষজনক। তবে আরো উন্নতি কীভাবে করা যায়, সেটাই এখন মূল লক্ষ্য, সেটা নিয়েই কথাবার্তা বলেছি।ঢাকায় ছিনতাই বেড়ে গেছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছিনতাই বেড়ে গেছে, সেটা অস্বীকার করব না। কিন্তু ধরা হচ্ছে। প্রচুর ড্রাইভ হচ্ছে।
লিবিয়াতে প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষ বন্দি। সেখানে তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে বিভিন্নভাবে টাকা নিচ্ছে, লেনদেন হচ্ছে। পরিবার থানায় গেলেও মামলা নিচ্ছে না। লিবিয়াতে যারা বন্দি তাদের ফিরিয়ে আনতে কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভুক্তভোগীরা যদি আমাদের কাছে আসে তাহলে অবশ্যই আমরা অ্যাকশন নেব, যারা এসব করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনো ভুক্তভোগী যদি থাকে তাহলে তাদের আমাদের কাছে পাঠান।
লিবিয়ায় যারা আটকা তারাই আমাদের রতœ, বড় সম্পদ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যারা লিবিয়াতে গিয়ে আটকা আছে তাদের ফিরিয়ে আনতে আমাদের পক্ষ থেকে যতটা করা সম্ভব তাই করবো। এ জন্য আমাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য দরকার।
গুলশান থানায় ভুক্তভোগী পরিবার গিয়েছিল কিন্তু থানা মামলা নেয়নি- এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। তবে মামলা নিতে অনুমতির প্রয়োজন নেই। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
টেকনাফে একের পর এক অপহরণের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেকনাফে অপহরণ হয়েছে,আবার সবাইকে উদ্ধারও করা হয়েছে। সবাই বর্ডারের অবস্থা জানেন। আমাদের টেকনাফ বর্ডারের মিয়ানমারের অংশ আরাকান আর্মির দখলে চলে গেছে। সেখানে মিয়ানমার সরকারের কোনো আইনশৃঙ্খলা নাই। এখন আমাদের মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হচ্ছে। এখন তো বসার অবস্থাও নেই। মিয়ানমার সরকারের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের তো কেউ নেই,যে বসবে। আবার আরকান আর্মিও কিন্তু এখনো অথরাইজ না। এখনো অফিসিয়ালি মিয়ানমার সরকারকেই বৈধ সরকার বলছি, এটা তো সমস্যা। আমাদের লক্ষ্য আমাদের নিজস্ব বর্ডার সিকিউরিটি। তাই দুপক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছি। বর্ডার যেন শান্ত থাকে সে জন্য সজাগ আছি। আমাদের বর্ডার পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।

 

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!