বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে আইনি কাঠামোয় আনতে বা আইনি বৈধতা দিতে ‘অন্তর্র্বতীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ শিরোনামে অধ্যাদেশ জারি হতে যাচ্ছে। অধ্যাদেশে উপদেষ্টা হতে গেলে কেমন যোগ্যতা থাকা দরকার এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাদের কর্মকান্ড কী তা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের নাগরিক না হলে এবং বয়স ২৫ বছর পূর্ণ না হলে তিনি উপদেষ্টা হতে পারবেন না।
কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলেও তিনি শপথ নিতে পারবেন না।
একইভাবে ব্যক্তি যদি কোনো আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন বা দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেয়ে থাকেন, তাহলেও তিনি উপদেষ্টার পদে বসতে পারবেন না। আর নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্তত দুই বছর কারাদন্ডে দন্ডিত হলে এবং মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পার না হলে উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার পদে যেতে পারবেন না।
বাংলাদেশ কোলাবোরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার ১৯৭২-এর অধীন কোনো অপরাধের জন্য দন্ডিত হলেও তিনি উপদেষ্টা হতে পারবেন না। অর্থাৎ রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত কেউ অন্তর্র্বতীকালীন সরকারে থাকতে পারবেন না।পাশাপাশি উপদেষ্টার পদে বসতে হলে ব্যক্তিকে ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনতনিধি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না’-মর্মে সম্মতি দিতে হবে।
আগে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার কথা বলা ছিল। কিন্তু বিগত আওয়ামী শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করা হয়। বর্তমানে সংবিধানে তও¦াবধায়ক বা অন্তর্র্বতী সরকারব্যবস্থা এবং প্রধান উপদেষ্টা বা উপদেষ্টার পদ বলে কিছু আসলে নেই।
বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণ করে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকার। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি ওই সরকার গঠনের আদেশ দেন। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্র্বতী সরকারের বিষয়ে কিছু বলা নেই।
আপনার মতামত লিখুন :