সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানতে জরিপ চলছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৪, ০৭:০৯ পিএম

দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানতে জরিপ চলছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সারা বিশ্বে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণকারীরা নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছেন। এ জন্য কোভিডের এই টিকা সারা বিশ্ব থেকে তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তারই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা গ্রহণ করেছে, তারা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছে কি না, জানতে এই টিকা গ্রহণকারীদের ওপর জরিপ চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

বুধবার ‘হাই লেভেল মিটিং স্ট্রেনেথিং ইম্যুনিজাইশন প্রোগ্রাম টুয়ার্ডস অ্যাচিভিং ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিংয়ের আয়োজনে এবং ইউনিসেফ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের কৌশলগত অংশীদারত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এইটা (টিকা তুলে নেওয়ার বিষয়) আমরা শুনেছি। তবে আমাদের দেশে এ রকম কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার রিপোর্ট আমরা এখন পর্যন্ত পাই নাই। আমি এটা জানার পরে, ইতিমধ্যে ডিজি হেলথকে নির্দেশনা দিয়েছি এবং তারা এটা জরিপ করছে। মানে যাদের এই টিকা দেওয়া হয়েছে, তাদের ওপর জরিপ করে আমাকে রিপোর্ট দেবে।’

বাংলাদেশেও প্রচুর মানুষকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা দেওয়া হয়েছে। বৈশ্বিক এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে দেশের প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমি না জানব আমাদের দেশে কতটুকু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। তবে আমরা এটি নিয়ে কনসার্ন। ওরা (অ্যাস্ট্রাজেনেকা) বলছে টিকা তুলে নিতে, কিন্তু আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত প্রমাণ না পাব, ততক্ষণ পর্যন্ত কীভাবে বলব?’

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে গ্যাভির সিএসওর ভাইস চেয়ারম্যান এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির ৫০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে, বাংলাদেশের টিকাদান সাফল্যও বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। টিকাদান কার্যক্রমের সফলতার পাশাপাশি আমরা অনেক জায়গায় পিছিয়ে আছি। যার মূল কারণ টিকাদান কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত জনবল সংকট। পাশাপাশি অপর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ, টিকার সংকট, দুর্গম এলাকায় টিকা পরিবহনের জটিলতা ও সময়মতো টিকা না পাওয়াসহ অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে, কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। যা অনেক শিশুকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমস্যা সমাধান নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পাদন করা জরুরি। অবস্থান ভেদে নতুন পদ সৃষ্টি এবং সেখানে জনবল নিয়োগের মাধ্যমে টিকাদান প্রক্রিয়াকে জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এগিয়ে আসতে হবে। গ্যাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে (ইপিআই) সহায়তা করবে। ২০৩০ সালে থেকে স্ব-অর্থায়নে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনার জন্য আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ ইমা ব্রিংহাম বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) একটি গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এ কর্মসূচির ফলেই দেশে মা ও শিশুমৃত্যুর হার কমানোর পাশাপাশি পঙ্গুত্ব রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি তৃণমূলের স্বাস্থ্যকর্মী-মাঠকর্মীদের আন্তরিকতা আর কমিউনিটির জনগণ, বিশেষ করে মায়েদের সক্রিয় অংশগ্রহণেই সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে সাফল্য আনা সম্ভব হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার দেশের সকল শিশুকে শতভাগ টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনার চেষ্টা করছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিংয়ের চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—সংসদ সদস্য ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, কানন আরা বেগম, অনিমা মুক্তি গোমেজ, নাদিয়া বিনতে আমিন, ফরিদা ইয়াসমিন এবং দ্রোপদী দেবী আগারওয়াল।

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!