স্টাফ রিপোর্টার: পদোন্নতি বঞ্চিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীর মাধ্যমে পদোন্নতি পাওয়ার আশায় আন্দোলন করে আসছে। ব্যাংকের গ্রাহকগণ তাদের সেবা থেকে যাতে বঞ্চিত না হন, সেজন্য তারা বন্ধের দিনে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে বেশ কয়েকবার মানববন্ধন কর্মসূচীতে অবস্থান নেন। তাদের এই যৌক্তিক দাবিতে সম্মতি জ্ঞাপন করে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থপনা পরিচালক মোঃ শওকত আলী খান অন্যান্য পদের ন্যায় ৩ বছরে পদোন্নতি প্রদান, অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ন্যায় ৪র্থ গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতিতে ভাইবা পদ্ধতি বাতিল করে বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের (এসিআর) ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রদান, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে পদোন্নতি প্রদানসহ বেশ কিছু আশ্বাস দেন।
তার এই আশ্বাসে কর্মকর্তারা মানববন্ধন কর্মসূচী প্রত্যাহার করে। কিন্তু দীর্ঘ তিন মাস পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রæত আশ্বাসের কোন প্রতিফলন না হওয়ায় কর্মকর্তারা ৩০/১১/২০২৪ ইং তারিখে পুনরায় মানববন্ধন কর্মসূচীতে এর ডাক দেয়। কোন ধরণের অপ্রীতিকর অবস্থা যেন না হয়, সেজন্য বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের দেশের প্রায় সকল শাখা থেকে আগত ১২০০ কর্মকর্তা প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অবস্থান নেন। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলীর সাথে সাক্ষাত করে পদোন্নতি সংক্রান্ত আশ্বাস নিয়ে তারা কর্মস্থলে ফিরে যায়। পদোন্নতি বঞ্চিত অফিসারদের পক্ষ থেকে দাবী করা হচ্ছে যে, কর্তৃপক্ষের সাথে এ বিষয়ে পরবর্তীতে যোগাযোগ করলে তারা জানান যে, সুপারনিউমারারি এর মাধ্যমে মার্চ ২০২৫ এর মধ্যে সকল পদোন্নতি বঞ্চিত ও পদোন্নতিযোগ্য অফিসারদের পদোন্নতি দেওয়া হবে। অথচ আপনারা দেখবেন সবগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক সুপারনিউমারারি এর মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পদোন্নতি দিয়েছে।
অগ্রনী ব্যাংক পিএলসিতে ৩০৮৪জন, জনতা ব্যাংক পিএলসিতে ৫৭৯জন, রুপালী ব্যাংক পিএলসিতে ১৩৬৮ জন এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে ২২৮৫ জন অর্থাৎ সর্বমোট ৭৩১৬ জন সুপারনিউমারারি এর মাধ্যমে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়েছেন। পদোন্নতি বঞ্চিত অফিসাররা মনে করেন যে, যেখানে অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ২-৩ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারমিউমারারি পদ্ধতিতে পদোন্নতি প্রদান করেন সেখানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এহেন উদাসীনতা তাদের কর্মীবান্ধবহীন কর্তৃপক্ষেরই বহিঃপ্রকাশ । সকল ব্যাংক এর কর্তৃপক্ষ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে তাদের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি নিশ্চিত করতে পারলেও, আমাদের ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অফিসারদের দমন পীড়নে মেতে উঠেছে। কর্তৃপক্ষ বরাবরই পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখছে, যেটি প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক অর্জনের ক্ষেত্রে অনেক বড় বাঁধা তৈরি করবে। সকল পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তারা মনে করেন যে, প্রতিষ্ঠানের মোট জনবলের প্রায় ৫২ শতাংশ অর্থাৎ সিংহভাগ কর্মকর্তা ১০ম গ্রেডের, তাদেরকে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত রেখে একটি প্রষ্ঠিান এর কখনোই সফল হওয়া সম্ভব নয়।
পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন,ব্যবস্থকপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক এবং উপ মহাব্যবস্থাপক মহোদয়দের সঙ্গে পদোন্নতির ব্যাপারে একাধিবার আলোচনা হয়, কিন্তু তারা বারবার আশ্বাস দিয়ে সুকৌশলে ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনকে দমিয়ে রাখেন। তাই তারা বাধ্য হয়ে এপ্রিল মাসের যেকোনো কর্মদিবসে পুনরায় কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে যাচ্ছেন। তারা প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী, কর্মবিরতি, শাটডাউন কর্মসূচি ও প্রধান কার্যালয় বøকেড সহ আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। পদোন্নতির ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সকল কর্মসূচি অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য চলমান থাকবে বলেও জানান তারা।
আপনার মতামত লিখুন :