মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। সকালের বক্তব্যের জন্য দুপুরেই দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।
‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন,আমি মনে করি, তার (শেখ মুজিবুর রহমান) ছবি নামিয়ে ফেলা উচিত হয়নি। খন্দকার মোশতাক নামিয়েছিলেন,জিয়াউর রহমান তুলেছিলেন।পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর খন্দকার মোশতাক শেখ মুজিবের ছবি নামিয়ে নিল। জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলেন। জিয়াউর রহমান কিন্তু বঙ্গভবনে শেখ মুজিবের ছবি ফিরিয়ে আনেন।’
দুপুরে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত ওই প্রেস বিজ্ঞপিতে জানানো হয়,‘আমি মনে করেছিলাম, বঙ্গভবনের দরবার কক্ষে যেখানে সব রাষ্ট্রপতির ছবি থাকে সেখান থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো হয়েছে। মূলত, ছবিটি সরানো হয়েছিল বঙ্গভবনের অন্য একটি অফিস কক্ষ থেকে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে শেখ মুজিবের ছবি রাখার বাধ্যতামূলক আইন করা হয়ে। ফ্যাসিবাদী আইনের কোন কার্যকারিতা থাকতে পারে না। অফিস-আদালত সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিৎ নয়। অনাকাঙ্খিত বক্তব্যের জন্য আমি দুঃখিত।
এদিকে সকালে তিনি যা বলেছের-
বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন,১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্টের পর খন্দকার মোশতাক বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু শহীদ জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তিনি আবার শেখ মুজিবের ছবি পুনঃস্থাপন করেছিলেন। বিএনপি আওয়ামী লীগের মত সংকির্ন মনা নয়।
তিনি বলেন,আজকে আমি খবরে পড়েছি, বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো হয়েছে। দেখুন সময় তো সবসময় একরকম যায় না। ইতিহাসে যার যতটুকু অবদান আছে, সেটা থাক। আমরা স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমানের অনেক অন্যায়,দুঃশাসন দেখেছি। তারপরও তো সে ছিল। তার ছবিটা ছিল। আমি মনে করি,তার ছবিটা নামিয়ে ফেলাটা উচিত হয়নি।
রিজভী বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনে,জাতীয় ইতিহাসের আন্দোলনে তার কতটুকু অবদান,সেটা স্বীকার করা হোক। আমরা আওয়ামী লীগের মতো সংকীর্ণ নই। আমরা ছোট মনের না। সেজন্যই বলছি, শেখ মুজিবের ছবি নামানো উচিত হয়নি। এর আগে রবিবার (১০ নভেম্বর) অন্তর্র্বতীকালীন তিন উপদেষ্টার শপথগ্রহণের সময় পেছনে বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকায় অনেকে সমালোচনা করেছিলেন। এরপর সোমবার দুপুর ১২টার দিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুকে নিজের একটি ছবি শেয়োর করে লেখেন,দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমান,৭১ পরবর্তী ফ্যাসিস্টের ছবি সরানো হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে আমরা ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তার ছবি সরাতে পারিনি। ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু, মানুষের জুলাইয়ের চেতনা বেঁচে থাকা পর্যন্ত তাকে কোথাও দেখা যাবে না।’
আপনার মতামত লিখুন :