শনিবার, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১

আবারও চক্রান্তের খেলা শুরু হয়েছে : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২৫, ০৮:১১ পিএম

আবারও চক্রান্তের খেলা শুরু হয়েছে : মির্জা ফখরুল

দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে আবারও চক্রান্তের খেলা শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার (০১জানুয়ারি) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মির্জা ফখরুল বলেন, যে চক্রান্তের খেলার কারণে আমাদের নেত্রীকে ৬ বছর জেলে থাকতে হয়েছে,এখনো আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দেশের বাইরে থাকতে হচ্ছে। সেই চক্রান্ত আবার শুরু হয়েছে। সেই চক্রান্ত আবার শুরু হয়েছে। যারা বাংলাদেশে বিশ্বাসী, যারা জোর গলায় বলতে পারে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ সেই দলের নেতাদের দূরে সরিয়ে রাখতে চায়। ইতিহাসে এ ঘটনা বহুবার হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এই চক্রান্তকে কখনো সমর্থন দিবে না। বিএনপিকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা বহুবার হয়েছে, কখনোই ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়নি।
অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি আশা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রশাসন সংস্কারসহ ন্যূনতম সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে অন্তর্র্বতী সরকার। যে সংকট তৈরি হয়েছে তার একমাত্র সমাধান হচ্ছে নির্বাচন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন,আমরা বিশ্বাস করি, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, মানুষের প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে সময়ের প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কার আনতে হবে। তাই বলে, সংস্কারের নাম করে আমরা এমন কিছু হতে দিতে পারি না, যেটা আমাদের গণতন্ত্রকে বিঘ্নিত করবে। অন্তর্র্বতী সরকারকে আহ্বান করে তিনি বলেন,কাল বিলম্ব না করে এ সংকট থেকে মুক্ত করতে অতিদ্রæত নির্বাচন ব্যবস্থা করুন।
ছাত্রদলকে ভ্যানগার্ড আখ্যায়িত করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমাদের সামনের যোদ্ধা তারা,ছাত্রদলকে এখন নলেজ বেস পলিটিক্স করতে হবে,জ্ঞানভিত্তিক রাজনীতি করতে হবে। আমাদেরকে একটা সাইবার ওয়ার্ক করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের অবস্থান সবচেয়ে বেশি রাখতে হবে। এটা যদি আমরা না করতে পারি তাহলে এ যুদ্ধে আমরা হারিয়ে যাব। ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাক্টিভিটিস বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন তিনি বলেন, দেশ ও দেশের বাহিরে ষড়যন্ত্র চলছে এর বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের মেধা মন দিয়ে তাদেরকে পরাজিত করতে পারব বিশ্বাস রাখি।
স্বাধীনতার পর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রদল ভূমিকা রেখেছে জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, গত ১৬ বছর বিদেশ থেকে আন্দোলনে সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমান। তার নেতৃত্বে আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে দেশছাড়া হয়েছেন। এখনো দেশে সামনে টুকটাক ষড়যন্ত্র করছে ভন্ড প্রতারকরা, বিপদ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড.আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, গণঅভ্যুত্থানে শামিল হয়েছে বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ। গণঅভ্যুত্থানের পর পৃথিবীর সব দেশের নির্বাচন হয়। সংস্কার বছরের পর বছর ধরে সংস্কার চলমান। তাই যারা উল্টোপাল্টা কথা বলেন তাদের ইতিহাস পড়া দরকার। এসময় পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার উদাহরণ দেন তিনি। গণঅভ্যুত্থান করেছে দেশের জনগণ। সুতরাং নির্বাচনের বিকল্প নেই।
অন্তর্র্বতী সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতার উদ্দেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ২৪ থেকে ২৫ পর্যন্ত এক বছর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তরুণ প্রজন্ম। গোটা দেশ তাকিয়ে আছে ছাত্রদের দিকে। কেন হঠাৎ করে মার্চ ফর ইউনিটি? আপনারতো বিএনপি মহাসচিবসহ সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় ঐক্য করেছিলেন? জাতীয় ঐক্যর আহ্বান জানিয়ে আপনার যখন মার্চ ফর ইউনিটির কথা বলেন তখন আমাদের কষ্ট লাগে? আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়ার দরকার। কার স্বার্থে মার্চ ফর ইউনিটি করছেন? আমাদের বৃহত্তর স্বার্থে শেখ হাসিনার বিচার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। আমরাও ঐক্য চাই, শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার আমরাও চাই। জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বির্নিমিত হবে।বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, কেউ কেউ বলেছে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। আরে সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া। গণতন্ত্র না থাকলে সংস্কার হয় কীভাবে? দেশের জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। নির্বাচন নিয়ে ছিনিমিনি খেললে তার পরিণাম ভয়াবহ হবে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন,শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!