বুধবার, ০৪ জুন, ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মৌলিক জায়গায় গলদ রয়েছে: আমির খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম

মৌলিক জায়গায় গলদ রয়েছে: আমির খসরু

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের মৌলিক জায়গায় গলদ রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের দেয়া বাজেট নিয়ে ৪ জুন (বুধবার) বিএনপি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেবে বলেও জানান তিনি। বলেন, ৪ জুন সকাল ১১টায় চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে আছে, বাজেটের উপরে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। এদিন বিএনপি বাজেটের উপর দলের ভাবনা জানাবে। সোমবার বিকালে রাজধানীর হোটেল সারিনায় বাজেট নিয়ে তাৎক্ষনিক এক প্রতিক্রিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। 
আমির খসরু বলেন, আগের বাজেট যেভাবে চলে আসছে, সেখান থেকে সংখ্যার তারতম্য ছোটখাটো হয়েছে, কিন্তু বাজেটের পিন্সিপাল একই রয়ে গেছে। গতানুগতিক আমি বলছি না, কিন্তু সেই জায়গা থেকে আমরা বের হতে পারি নাই। বিগত সরকারের ধারাবাহিকতা থেকে আমরা ‘অন্তর্র্বতী সরকার’ বের হতে পারি নাই। রাজস্ব আয়ের ওপর ভিত্তি করে বাজেট করা উচিত। তাহলে প্রাইভেট সেক্টরে টাকার সরবরাহ থাকবে, বিনিয়োগ থাকবে,ইন্টারেস্ট কমে আসতো, বিদেশি ঋণের পরিমাণ কমে আসতো এবং সুদের হারও কম পেমেন্ট করতে হতো। কিন্তু আমরা সেই জায়গা থেকে সরে আসতে পারিনি। আমি মনে করি, এই মৌলিক জায়গায় গলদটা রয়ে গেছে।এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাস্তবায়নের জন্য রাজস্ব আয়কে মাথায় রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে গুণগত দিক থেকে এই বাজেটে আমরা কোন পরিবর্তন দেখি নাই। কাঠামো কিন্তু একই রয়ে গেছে। সুতরাং এটা কিন্তু আগামীদিনের সরকারের জন্য খুব একটা সহজ কিছু হবে না।     
খসরু বলেন, অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা সীমিত, কারণ তাদের একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তাদের ক্ষমতায় থাকার মেয়াদের ব্যবধান রয়েছে-এটা মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত-বিগত সরকার বাজেটের আকার বাড়াতে বাড়াতে যে জায়গায় নিয়ে গেছে, সেটার সঙ্গে রাজস্ব আয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। দ্বিতীয়ত-রাজস্ব আয়ের পুরোটাই পরিচালনা ব্যয়ের মধ্যে ব্যয় হয়ে যাবে। উন্নয়ন বাজেট দেশের ভেতর বা বাইরে থেকে ঋণ নিয়ে চালাতে হচ্ছে। সরকার দেশের বাইরে থেকে ঋণ নিলে এর বোঝা বাড়তে থাকে এবং বছরের পর বছর দেশের মানুষকে এই সুদ দিতে হয়। এই কারণেই কিন্তু দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ভুগতে থাকে। আর দেশের ভেতরের থেকে নিলে আবার বেশি ক্ষতি। কারণ দেশের ব্যাংক থেকে লোন নিলে ইন্টারেস্ট বেড়ে যায়। আবার ব্যক্তিখাতে লোনও কমে যায়। এর ফলে দেশে বিনিয়োগ হয় না, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয় না, মানুষের আয় বৃদ্ধি পায় না। প্রাইভেট সেক্টর লোন না পেয়ে অনেকে বিনিয়োগও করতে পারে না। বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন,আমি মনে করি, রাজস্ব আয়ের সঙ্গে বাজেটের আকারের একটা সম্পৃক্ততা থাকা উচিত ছিল। আমি মনে করি সেটা হয়নি। রাজস্ব আয় যেটা আছে তার পুরোটাই পরিচালনা ব্যয়ের মধ্যে চলে যাবে। দেশের বাইরে ও ভেতর থেকে লোন নিতে গেলে, এসব প্রভাবের কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তিনি বলেন,বর্তমানে বৈদেশিক ঋণ ৩ দশমিক ৫ বিলিয়নের মতো। আমি মনে করি, বিদেশি ঋণ ও রাজস্ব আয়কে মাথা রাখলে এই বাজেটের আকার আরও ছোট হওয়া উচিত ছিল। গুণগত দিক থেকে এই বাজেটে কোনো পরিবর্তন হয়নি, শুধু সংখ্যায় সামন্য পরিবর্তন হয়েছে। কাঠামো কিন্তু একই রয়েছে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!