সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১

উইন্ডিজের মাটিতে ১৫ বছর পর বাংলাদেশের টেস্ট জয়

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৪, ০৯:০৪ এএম

উইন্ডিজের মাটিতে ১৫ বছর পর বাংলাদেশের টেস্ট জয়

ক্রিকেটের ইতিহাসে বাংলাদেশের নতুুন ইতিহাস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হার দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) জ্যামাইকায় কিংস্টন টেস্টে ক্যারিবিয়ানদের ১১০ রানে হারিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এতে টাইগার বাহিনী সিরিজ শেষ করেছে ১-১ সমতায়।
কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট জিততে হলে ইতিহাস গড়তে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। কেননা এই মাঠে ২১২ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। এবার উইন্ডিজের লক্ষ্য ছিল ২৮৭ রানের। 
তবে তাইজুলের ঘূর্ণিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮৫ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। টেস্ট নেতৃত্ব দিতে নেমে মাত্র দ্বিতীয় টেস্টেই জয়ের দেখা পেলেন মিরাজ।
প্রথম টেস্টে ২০১ রানের বিশাল ব্যবধানে হার। দ্বিতীয় টেস্টের শুরুতেও নড়বড়ে ব্যাটিং। মাত্র ১৬৪ রানে অলআউট। এমন পরিস্থিতিতে আরও একটি টেস্ট হারের সামনে দাঁড়িয়ে; কিন্তু বাংলাদেশের বোলারদের কৃতিত্বে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৪৬ রানে অলআউট করে প্রথম ইনিংসেই ১৮ রানের লিড পেল বাংলাদেশ।
এরপর ব্যাট করতে নেমে ব্যাটাররা মোটামুটি দৃঢ়তার পরিচয় দিলেন। সাদমান ইসলাম (৪৬), শাহাদাত হোসেন দিপু (২৮) মেহেদী হাসান মিরাজ (৪২) ও লিটন দাসের (২৫) পর জাকের আলী অনিক। বিশেষ করে জাকের আলি অনিক দারুণ ব্যাটিং করলেন। তার ৯১ রানের ওপর ভিত্তি করেই দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬৮ রান হলো এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের জন্য ২৮৭ রানের বড় লক্ষ্য বেঁধে দিতে পেরেছে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলাদেশের বোলাররা রীতিমতো আতঙ্ক হয়ে দেখা দিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারদের সামনে। প্রথম ইনিংসে পেসার নাহিদ রানা ছিলেন বড় আতঙ্ক। তিনি নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে সেই আতঙ্ক নিয়ে হাজির হলেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তিনিও নিলেন পাঁচ উইকেট। তার এই বিধ্বংসী বোলিংয়ের সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৮৫ রানে অলআউট। 
২৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫৭ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখান তাইজুল ও তাসকিন আহমেদ। মিকাইল লুইস ৬ ও কাসি কার্টি ১৪ রান করে আউট হন। তবে কেভাম হজ ও ক্রেইগ ব্রাফেটের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই দুই ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান তাইজুল। 
ব্রাফেট ৪৩ ও হজ ৫৫ রান করে আউট হন। তাদের বিদায়ের পর আর কেউ থিতু হতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ১৮৫ রানে অলআউট হয় ক্যারিবিয়ানরা। তাইজুল নেন ৫টি উইকেট। এছাড়া তাসকিন ও হাসান মাহমুদ নেন ২টি করে উইকেট। ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে তাদের আবার হারাতে পারলো বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে সর্বশেষ সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ক্যারিবীয়দের মাটিতে টেস্ট জিতেছিল টাইগাররা। 
সংক্ষিপ্ত স্কোর-বাংলাদেশ: ১৬৪ ও ২৬৮ (জাকের আলী অনিক ৯১, সাদমান ইসলাম ৪৬, মেহেদী হাসান মিরাজ ৪২, শাহাদাত হোসেন দিপু ২৮; কেমার রোচ ৩/৩৬, আলজারি জোসেফ ৩/৭৭)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৪৬ ও ১৮৫ (কাভেম হজ ৫৫, কার্লোস ব্রাথওয়েট ৪৩; তাইজুল ইসলাম ৫/৫০, হাসান মাহমুদ ২/২০, তাসকিন আহমেদ ২/৪৫, নাহিদ রানা ১/৩২)।ফল: বাংলাদেশ ১০১ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তাইজুল ইসলাম।

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!