শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১

ঢাকা-দিল্লি আবারো কূটনৈতিক উত্তেজনা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫, ১২:২৫ পিএম

ঢাকা-দিল্লি আবারো কূটনৈতিক উত্তেজনা

আবারো ঢাকা-দিল্লির মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন বুধবার(৫ফেব্রæয়ারি)। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই উত্তেজনা। শেখ হাসিনার বক্তব্যকে বৃহস্পতিবার ‘বানোয়াট ও উস্কানিমূলক’ অভিহিত করে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ জন্য ঢাকায় তলব করা হয় সেখানে ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার পবন  বাধে’কে।  এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া। 
এতে বলা হয়, গত বছর আগস্টে ব্যাপক সহিংসতার পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে চলে যান হাসিনা। তিনি ফেসবুক লাইভে একটি বক্তব্য দেন। তাতে তিনি মৃতদেহের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখলের জন্য অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিযুক্ত করেন। 
ওদিকে তার বক্তব্য প্রচারের সময়ে একজন মানুষ একসময়ের সম্মানের প্রতীক বাসভবন কাম স্মৃতিবহনকারী বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ভাঙচুর চালায়। এই বাড়িটি দেশটির প্রতিষ্ঠাতা ও শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছিল।  ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার বাধে’র কাছে প্রতিবাদে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শেখ হাসিনার ‘শত্রুতামূলক’ বিবৃতিকে ‘গভীর উদ্বেগের,হতাশাজনক ও গুরুতর আপত্তিকর’ আখ্যায়িত করেছে। বলা হয়েছে,এটা ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ককে সুস্থ করতে সহায়ক হবে না। 
ওদিকে শেখ মুজিবের বাড়ি ভেঙে ফেলাকে ‘অ্যাক্ট অব ভ্যানডালিজম’ আখ্যায়িত করে এর কড়া নিন্দা জানিয়েছে ভারত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্রিফিংয়ে বলেছে- যারা স্বাধীনতা যুদ্ধকে মূল্যায়ন করে, বাংলা পরিচয়কে লালন করে, তারা এই বাড়ির গর্বিত গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত।
ভারতে অবস্থানকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোনো চ্যানেলের মাধ্যমে শেখ হাসিনার ‘মিথ্যা ও উস্কানিমুলক’ বিবৃতি বন্ধ করতে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমঝোতার ভিত্তিতে ভারতকে অবিলম্বে ও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।  
ঢাকা আরও বলেছে,শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেছেন- তারা একটি ভবনকে ধ্বংস করতে পারে। কিন্তু ইতিহাসকে নয়। কিন্তু তাদের স্মরণ রাখতে হবে, ইতিহাস তার বদলা নেয়। এটাকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শত্রুতাপূর্ণ আচরণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে উস্কানি দেয়ার অভিযোগ আনা হচ্ছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন-ভারত কী পদক্ষেপ নেয়, আমরা সেটা পর্যবেক্ষণ করবো।
বুধবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে মুজিবের বাসভবনের সামনে সমবেত হন বিক্ষোভকারীরা। এই বাড়িতেই ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান, তার স্ত্রী ও অন্যদের হত্যা করা হয়। ভারতে নির্বাসনে থাকা শেখ হাসিনা আগেই ভার্চ্যুয়াল বক্তব্য রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার সেই ঘোষণাকে সামনে রেখে ‘বুলডোজার প্রসেশন’ আহ্বান করেন বিক্ষোভকারীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই আহ্বান জানানোর পর সমবেত জনতা ওই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সারাদেশে একই রকমভাবে অগ্নিসংযোগ করা হয। ওই বাড়িটি সংলগ্ন অন্য প্লটগুলো, যেখানে আওয়ামী লীগের কিছু অফিস ছিল, তাও ভেঙে দেয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা শেখ মুজিবের ম্যুরালও ভাঙচুর করেছে। 
অন্যদিকে শেখ হাসিনার প্রয়াত স্বামী ওয়াজেদ মিয়ার ধানমন্ডির বাসভবনেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। 
ওদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি অস্বাভাবিক ঐক্য প্রদর্শন করেছে। তারা এই ধ্বংসযজ্ঞের নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, এসব কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা। এতে বিশৃংখলা বাড়তে পারে। ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে দেশে ভবিষ্যত গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!