শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

বিধ্বস্থ গাজায় কোনো মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেবে না ইসরাইল

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ০৯:৫৫ এএম

বিধ্বস্থ গাজায় কোনো মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেবে না ইসরাইল

যুদ্ধবিধ্বস্থ গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা প্রদান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ। অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ফের বিমান ও স্থল হামলার মধ্যেই এমন তথ্য জানালেন তিনি। বুধবার ইসরাইল জানিয়েছে,গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে বাধা প্রদান অব্যাহত রাখবে।খবর এএফপি, আলজাজিরার।
কাটজ এক বিবৃতিতে বলেছেন,ইসরাইলের নীতি স্পষ্ট। কোনো মানবিক সাহায্য গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। হামাসকে প্রতিহত করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ২ মার্চ থেকে গাজায় কোনো ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরাইল। এতে সেখানে আবার মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।
কাটজ আরও বলেন, বর্তমানে কেউ গাজায় কোনো মানবিক সাহায্য প্রবেশ করতে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে না এবং এই ধরনের সাহায্য শুরু করার জন্য কোনো প্রস্তুতিও নেই।এর আগে মঙ্গলবার ইসরইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সহ দেশটির কর্মকর্তারা গাজায় আটক ৫৮ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার একমাত্র উপায় হিসেবে সামরিক চাপকে উল্লেখ করেছেন।উত্তর গাজায় সেনাদের উদ্দেশ্যে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘হামাস একের পর এক আঘাত ভোগ করতে থাকবে। আমরা জোর দিয়ে বলছি যে, তারা আমাদের জিম্মিদের মুক্তি না দিলে আমরা হামাসের ওপর আরও কঠোর হব।
জাতিসংঘ সোমবার সতর্ক করে জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে গুরুতর মানবিক সংকটের মুখোমুখি গাজা।জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিস জানিয়েছে,গত ১৮ মাসের মধ্যে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে মানবিক পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে খারাপ।এক বিবৃতিতে ওসিএইচএ জানিয়েছে, দেড় মাস ধরে গাজায় কোনো সরবরাহ পৌঁছায়নি। তাছাড়া চিকিৎসা সরঞ্জাম, জ্বালানি, পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রেরও ঘাটতি রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ ১৬ হাজার ৩৪৩ জন।যদিও গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মোট নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০। কারণ যারা ধ্বসংস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে তাদেরও নিহত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা করে হামাস। ওই হামলায় ইসরাইলের ১১৩৯ জন নিহত হয়। সেইসঙ্গে দুই শতাধিক ইসরাইলিকে বন্দি করে হামাস। সম্প্রতি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে বেশ কয়েকজন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ফেরত নেয় তারা। তবে গত ১৮ মার্চ হঠাৎ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরাইল। ফের হামলার শুরু করে গাজায়। নিহত হন অনেক মানুষ। এই পরিস্থিতিতে হামাস জানিয়েছে,যদি গাজায় একটি ‘গুরুতর ও স্থায়ী’ যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়,তবে তারা ইসরাইলের বন্দিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত। হামাসের সিনিয়র নেতা তাহের আল-নুনু বলেন, তারা যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তার বিনিময়ে সমস্ত বন্দি ইসরাইলিকে মুক্তি দিতে রাজি।
এদিকে,হামাসকে যুদ্ধবিরতির একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে ইসরাইল। প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস ১০ জন জীবিত বন্দিকে মুক্তি দেবে আর যুক্তরাষ্ট্র এ প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনায় প্রবেশের জন্য ইসরাইলের পক্ষ থেকে গ্যারান্টি দেবে। এ আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে মিসর ও কাতার, যারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে গাজায় একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!