ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরো ৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৬৫ জন এবং আহত হয়েছেন আরো ১৪০ জন। মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে এ তথ্য। খবর আনাদোলুর।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার ৬টি এলাকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৬৫ জন এবং আহত হয়েছেন আরো ১৪০ জন। তবে নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি। কারণ অনেকেই এখনো ধ্বংস্তুপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। সড়ক যোগাযোগ ধ্বংস হয়ে যাওয়া এবং লোকবল ও সরঞ্জামের অভাব থাকার কারণে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সর্বশেষ এই হামলার পর গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪২ হাজার ৪০৯ জন। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত মোট আহত হয়েছেন ৯৯ হাজার ১৫৩ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখন্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে আসে তারা। এই জিম্মিদের উদ্ধার এবং হামাসকে পুরোপুরি নিস্ক্রিয় করতে সেই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনো চলছে। ভয়াবহ এ অভিযান থামানো এবং হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে সমঝোতার জন্য গত এক বছরে ব্যাপকভাবে চেষ্টা করেছে মধ্যস্থতাকারী ৩ দেশ কাতার, মিসর. যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু সেসব চেষ্টার প্রায় সবই ব্যর্থ হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় করার আগ পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে এবং নিজের ভূখন্ড ও নাগরিকদের নিরাপত্তার প্রশ্নে ইসরায়েল কোনো ছাড় দিতে পস্তুত নয়।
ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্থ বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরায়েলি হামলা গাজাকে ধ্বংস্তুপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।