আমেরিকায় থাকা অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে ভারতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে আমেরিকার একটি সামরিক বিমান। পেন্টাগনের সি-১৭ বিমানে তোলা হয়েছে তাঁদের। তবে দিল্লির তরফে এ বিষয়ে এখনও কিছু প্রকাশ্যে জানানো হয়নি।
আমেরিকা থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ভারতে ফেরত পাঠানো শুরু করে দিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আমেরিকার একটি সামরিক বিমানে করে ভারতে পাঠানো হচ্ছে তাঁদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আমেরিকান আধিকারিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রয়টার্সকে। তিনি জানিয়েছেন,একটি সি-১৭ বিমান ইতিমধ্যে অভিবাসীদের নিয়ে ভারতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বিমানটি ফেরার কথা নেই। যদিও নয়াদিল্লির তরফে এ বিষয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই সে দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ শুরু হয়। ধরপাকড়ও শুরু করে আমেরিকার প্রশাসন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু দেশের অবৈধ অভিবাসীদের ফেরতও পাঠিয়েছে আমেরিকা। অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে পেন্টাগনে আমেরিকার সামরিক সদর দফতর থেকেও সাহায্য নিচ্ছে ওয়াশিংটন। রয়টার্স জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে পেন্টাগন থেকে বিমান দেওয়া হচ্ছে। এল পাসো, সান দিয়েগো, টেক্সাস এবং ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ধৃত বিভিন্ন দেশের প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি অবৈধ অভিবাসীকে নিজ নিজ দেশে ফেরাতে আমেরিকার সামরিক বাহিনীর বিমান ব্যবহার করা হচ্ছে। পেরু, গুয়েতেমালা এবং হন্ডুরাসে ইতিমধ্যে ফেরত পাঠানো হয়েছে অবৈধ অভিবাসীদের।
আমেরিকার নির্বাচনের আগে থেকেই অবৈধ অভিবাসন রুখতে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়ে এসেছেন ট্রাম্প। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এ বিষয়ে তৎপর হয়েছেন তিনি। বিনা নথিতে যাঁরা আমেরিকায় রয়েছেন, তাঁদের ধরে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চাইছে ট্রাম্পের প্রশাসন। আমেরিকার পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাস থেকে তিনি বলেন,“অভিবাসনের ক্ষেত্রে আমাদের একটি নীতিগত অবস্থান রয়েছে, যা প্রতিটি দেশের জন্যই প্রযোজ্য। আমরা বৈধ অভিবাসনে সব সময় সমর্থন করি।"
তাঁর বক্তব্য, যদি কোনও দেশে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী থাকেন এবং যদি দিল্লি নিশ্চিত হয় তিনি ভারতীয় নাগরিক,তবে তাঁকে ভারতে ফেরানোর জন্য কেন্দ্র সব সময় প্রস্তুত। এটি কেবল আমেরিকার জন্য নয়, সব দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এর ফলে বৈধ উপায়ে সংশ্লিষ্ট দেশে ভারতীয়দের যাতায়াত আরও সহজ হবে বলে মনে করছেন বিদেশমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “অবৈধ যাতায়াত এবং অভিবাসনের আমরা তীব্র বিরোধিতা করি। কারণ, যখনই কোনও একটি অবৈধ ঘটনা ঘটে, তার সঙ্গে আরও অনেক অবৈধ কার্যকলাপ জুড়ে যায়। এটি (দেশের) সুনামের দিক থেকে কখনওই ভাল নয়।”
গত ২০ জানুয়ারি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতের হয়ে উপস্থিত ছিলেন জয়শঙ্কর। পরে আমেরিকার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কিছু বৈঠকও করেন তিনি। আমেরিকার ভিসা পেতে ভারতীয়দের চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করে থাকার বিষয়টিও সেই সময় ট্রাম্প প্রশাসনের নজরে এনেছেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :