বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১

মাইক্রোফোন ধরলেন আইনমন্ত্রী, ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে বক্তব্য শেষ করলেন সাত্তার

প্রকাশিত: ১২:১৮ পিএম, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩

মাইক্রোফোন ধরলেন আইনমন্ত্রী, ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে বক্তব্য শেষ করলেন সাত্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ সময় মঞ্চে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের তিন সংসদ সদস্য ও বিএনপির দলছুট নেতা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ সাত্তার মাইক্রোফোন ঠিকমতো ধরতে পারছিলেন না। এ সময় তার শরীরও কাঁপছিল। ফলে তার বক্তব্য শোনা যাচ্ছিল না। এ জন্য ৩০ সেকেন্ড সময় তার মাইক্রোফোন ধরে রাখেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ সময় আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বলেন, উপস্থিত প্রধান অতিথি আইনমন্ত্রীসহ এখানে যারা উপস্থিত হয়েছেন, সবাইকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে আগেও গিয়েছি। আজকে যে অবস্থানে গিয়েছে, আগে তেমন ছিল না। আপনারা যত কিছুই বলেন, আমার দৃষ্টিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব আস্তে আস্তে অনেক উন্নত হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও উন্নত হবে। আমার শত সীমাবদ্ধতার মাঝেও যতটুকু পারি আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করব। তিনি বলেন, ‘আপনাদের দাবি-দাওয়া দেখার মালিক প্রধান অতিথি। ওনার সাথেও থাকব, ওনার পাশে থাকব। যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করব। এই বলে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি। বাংলাদেশে জিন্দাবাদ।’ তবে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলার সময় আইনমন্ত্রীর হাতে মাইক্রোফোন ধরা ছিল না। বক্তব্য শেষ হওয়ার অন্তত ২৫ সেকেন্ড আগেই তিনি মাইক্রোফোন থেকে তার হাত সরিয়ে নিয়েছিলেন। রোববার প্রেস ক্লাবের নতুন অভিযাত্রায় শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রেস ক্লাব। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ফিতা কেটে প্রেস ক্লাবের উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী। দুপুর সোয়া ১২টায় প্রেস ক্লাব সংলগ্ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের স্টাফ নার্স কোয়ার্টার চত্বরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি বয়োবৃদ্ধ। কিন্তু জীবনের শেষে এসে বুঝতে পেরেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন আওয়ামী লীগ দিয়েই হয়। সে জন্যই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। আনিসুল হক বলেন, ‘এখন একটা দাবি উঠেছে, কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট। আমরা একটা কথা বলতে চাই। যৌক্তিক কোনো দাবির ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনারও কোনো সমস্যা নেই। এই দেশে কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের আবির্ভাব হয়েছিল বিএনপির দুঃশাসন ও নির্বাচনে কারচুপি করার জন্য। বিএনপির অপকর্মগুলো ঢাকার জন্যই কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের জন্ম।’ আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘উচ্চ আদালত বলল, কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট সংবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। সেহেতু এটা অবৈধ। এটা বাতিল করে দেওয়া হলো। সুপ্রিম কোর্ট কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছে। সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধান সংশোধন করেছে সংসদ। এই কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা আর নাই। এখন থেকে সংবিধানে যেভাবে বলা আছে, ঠিক সেভাবেই নির্বাচন হবে। বিএনপির সাহেবরা সংবিধান পড়ে না। তারা পড়ে আর্মি অ্যাক্ট।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দেওয়ান মারুফ। এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি রিয়াজউদ্দিন জামি ও সাধরাণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লার নেতৃত্বে ১১ সদস্যের নির্বাচিত কমিটির সদস্যরা স্থানীয় সার্কিট হাউসে মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
Link copied!