শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ওকে গুগল, এবার তুমি চুপ করো তো!

প্রকাশিত: ০৫:১৬ এএম, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২১

ওকে গুগল, এবার তুমি চুপ করো তো!

এটা ঠিক, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট বেশ কাজের। শুধু আপনার মুখের কথায়ই অনেক কিছু করে দিতে পারে আপনার ফোনে। কিন্তু অনেক সময় এটা প্রয়োজন না থাকলেও হাজির হতে থাকে আপনার মোবাইল পর্দায়। তখন সেটিকে বিরক্তিকরই মনে হয়। চাইলে আপনি সেটি বন্ধও করে রাখতে পারেন। কিভাবে? বাতলে দিচ্ছেন এস এম তাহমিদ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফিচারসমৃদ্ধ বলা যায় গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টকে। প্রতিটি অ্যানড্রয়েড ফোন, ট্যাবলেট ও গুগল হোম সিরিজের ডিভাইসে এই অ্যাসিস্ট্যান্ট সদা প্রস্তুত ব্যবহারকারীকে দৈনন্দিন কাজে সাহায্যের জন্য। অবশ্য গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট সবাই ব্যবহার করতে চান না, ফলে শুধু শুধু ডিভাইসের র‌্যাম ও প্রসেসরের পেছনে মোবাইলের চার্জ খরচ করার কোনো প্রয়োজন নেই। সে ক্ষেত্রে চাইলে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট বন্ধ করে রাখা যেতে পারে। ফোনে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট বন্ধ করা আর দশটি অ্যাপের মতো নয়। কেননা চাইলেও ফোন থেকে সাধারণত গুগল অ্যাপ আনইনস্টল করা যায় না। আর গুগল সার্চ বন্ধ করার প্রয়োজনও নেই অ্যাসিস্ট্যান্ট বন্ধ করার ক্ষেত্রে। প্রথমে ফোনের গুগল অ্যাপে যেতে হবে। এরপর ওপরের ডান কোনায় থাকা তিন বার সংবলিত বাটনে চেপে যেতে হবে মোর অপশনে। এরপর যেতে হবে সেটিংসে। সেখান থেকে সিলেক্ট করতে হবে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট। এরপর স্ক্রল করে নিচে যেতে হবে, সেখানে জেনারেল অপশনটিতে টাচ করতে হবে। এরপর সেখান থেকে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট অপশনের টিক মার্ক উঠিয়ে দিলেই চলবে। বেশ কিছু ওয়ার্নিং মেসেজ ব্যবহারকারীর সামনে তুলে ধরবে গুগল, সেগুলো এড়িয়ে গেলেও সমস্যা নেই। ব্যস, ফোনে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং সারাক্ষণ ‘ওকে গুগল’ শব্দের জন্য ফোনের মাইক্রোফোন অন থাকা বন্ধ হয়ে যাবে। অবশ্য গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট পুরোপুরি বন্ধ না করে শুধু ‘ওকে গুগল’ ডিটেকশন বা হোম বাটনে চাপ পড়লে গুগলের হাজির হওয়া বন্ধ করা যেতে পারে। কারণ ছাড়াই গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু হতে পারে, যেমন অন্য কোনো শব্দকে ‘ওকে গুগল’ হিসেবে ডিটেকশন বা হোম বাটনে অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ পড়ার ফলে সেটি চালু হয়ে যেতে পারে, যা বিব্রতকর। সে ক্ষেত্রে যেতে হবে ফোনের সেটিংস মেন্যুতে। সেখান থেকে অ্যাপস বা অ্যাপ্লিকেশন অপশনে গিয়ে ডিফল্ট অ্যাপ্লিকেশনস অপশনে যেতে হবে। এরপর ডিভাইস অ্যাসিস্ট্যান্ট অপশন থেকে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট সরিয়ে ‘ঘড়হব’ অপশনটি বেছে নিলেই গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট আর ডাক শুনে বা বাটনের চাপে হাজির হবে না। গুগল হোম ডিভাইসের ক্ষেত্রে কাজটি অবশ্য খুবই সহজ। প্রতিটি ডিভাইসেই আছে একটি মিউট সুইচ, সেটি চালু করে দিলেই আর ডিভাইসগুলো ব্যবহারকারীর ডাক শুনবে না। শুধু প্রয়োজনের সময়ই ডিভাইসগুলো চালু রাখার জন্য এ টগল সুইচ অত্যন্ত কাজের। অ্যাসিস্ট্যান্ট বন্ধ করার উপকার নতুন ডিভাইসের চেয়ে অবশ্য পুরনো ডিভাইসগুলোতেই বেশি পাওয়া যাবে। যাদের ফোনে স্ন্যাপড্রাগন ৪০০ বা ৬০০ সিরিজের প্রসেসর চলছে বা ফোনের বয়স তিন বছরের বেশি, তাদের ডিভাইসগুলো অ্যাসিস্ট্যান্টের কারণে অতিরিক্ত ব্যাটারি খরচ করতে পারে। বিশেষ করে স্ট্যান্ডবাইতে ব্যাটারি কমে যাওয়ার পেছনে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের হাত রয়েছে। ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার প্রয়োজনেও গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট বন্ধ করে রাখা যেতে পারে। ব্যবহারকারীদের কথাবার্তা রেকর্ড করছে গুগল, এমন অভিযোগের অভাব নেই। যদিও সেটি প্রমাণিত নয়। কিন্তু ব্যবহারকারীরা প্রায় সময়ই কোনো পণ্য কেনার কথা উচ্চারণ করার পর সেটার বিজ্ঞাপন ফোনে হাজির হতে দেখেছেন। যেহেতু গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এখন বাংলাও বোঝে, তাই অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাষা বুঝবে না সে আশা করাও ঠিক নয়। দিন শেষে ফোনের ব্যাটারিলাইফ কিছুটা বাড়াতে আর গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট বন্ধ করে রাখাই শ্রেয়।
Link copied!