শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টানা ৪০ বছর তারাবি পড়াচ্ছেন হাফেজ হালিম

প্রকাশিত: ০২:০১ পিএম, এপ্রিল ৮, ২০২২

টানা ৪০ বছর তারাবি পড়াচ্ছেন হাফেজ হালিম

৪০ বছর যাবৎ তারাবির নামাজের ইমামতি করছেন হাফেজ শামসুল আলম ভূঁইয়া ওরফে হালিম হুজুর (৬৩)। ময়মনসিংহের গৌরীপুরের বোকাইনগর ইউনিয়নের গড়পাড়া গ্রামে তার বাড়ি। গৌরীপুর পৌর শহরের কালীপুরস্থ মসজিদুল আমানের ইমাম ও খতিবের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। একই মসজিদে এই রমজানে তারাবি পড়ানোর মধ্য দিয়ে টানা ৪০ বছর তারাবির ইমামতি করার সৌভাগ্য অর্জন করছেন হাফেজ হালিম। এদিকে তার ছেলে হাফেজ মাহমুদুল আলমও (২৩) তারাবি পড়াচ্ছেন ১১ বছর ধরে। মাহমুদুল বোকাইনগর ইউনিয়নের উত্তর গড়পাড়া মসজিদের ইমাম ও খতিব। তিনি সেখানেই এবার তারাবি পড়াচ্ছেন। ৪০ বছর তারাবির ইমামতির দায়িত্ব পালন করতে পেরে নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান মনে করেন শামসুল আলম ওরফে হালিম হুজুর। তার ভাষ্য, আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। তারাবির ফজিলত সম্পর্কে তিনি বলেন, রমজানের চাঁদ দেখা গেলে রোজার আগে আমরা প্রথম যে আমলটি করি, তা হলো তারাবির নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়বে, তার অতীতের সমস্ত গুণাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ হাফেজ হালিম কওমি ও আলিয়া দুই মাদ্রাসাতেই পড়াশোনা করেছেন। হেফজ শেষ করার পর তিনি মাধ্যমিকে ভর্তি হয়ে দাখিল, আলিম ও ফাজিল সম্পন্ন করেন। ১৯৮২ সালে গৌরীপুর ছদরুদ্দিন (র.) হাফিজিয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালীন বড় মসজিদে তারাবির নামাজে হাফেজ ইফসুফের সঙ্গে ইমামতি করেন তিনি। পরের বছর তারাবির ইমামতি করেন মসজিদুল আমানে। এরপর থেকে টানা ৪০ বছর এই মসজিদে তারাবির ইমামতি করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা শামীম আলভী বলেন, অন্যান্য মসজিদে তারাবি পড়ানোর জন্য যুবক বয়সি একাধিক ইমাম থাকলেও বৃদ্ধ হালিম হুজুর একাই তারাবি পড়ান। উনার মিষ্টি কণ্ঠের কেরাত ও কোরআন তেলাওয়াত মনের গভীরে স্পর্শ করে। প্রার্থনা করি আল্লাহপাক ওনার সব নেক স্বপ্ন পূরণ করুক। এদিকে পিতার মতো মাহমুদুল আলমও কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন। ২০১১ সালে তিনি পৌর শহরের মাদরাসাতুল মদিনা থেকে হেফজ সম্পন্ন করে ওই বছর মসজিদুল আমানে তার বাবার সঙ্গে যৌথভাবে তারাবির ইমামতি করেন। পরে মাহমুদুল মসজিদুল আমানে ৪ বছর, কিশোরগঞ্জে একটি মসজিদে ৩ বছর ও উত্তরগড় পাড়া জামে মসজিদে ৪ বছর ধরে তারাবির ইমামতি করেন। মাহমুদুল আলম বলেন, বৃদ্ধ বয়সে বাবা তারাবি পড়াচ্ছেন- এটা আল্লাহপাকের অশেষ নিয়ামত। বাবার অনুপ্রেরণাতে পড়াশোনার পাশাপাশি আমি নিজেও তারাবির ইমামতি করছি এগারো বছর ধরে। এখন গ্রামে একটি মাদ্রাসা করার ইচ্ছা আছে।
Link copied!