করোনার দিনগুলো কেমন কাটছে?
অন্যদের সঙ্গে আমার প্রতিদিনের রুটিনে বেশ পার্থক্য। সকাল থেকে জয়ের পেছনে লেগে থাকতে হয়। চার মাস ধরে স্কুলে যাচ্ছে না ও। সারাক্ষণ স্কুলকে মিস করে। বাসায়ই আমি ওকে পড়াচ্ছি। এর মধ্যে দু-একবার যে বের হতে হয় না তা নয়। তবে সচেতনতার সঙ্গে চলছি। শোবিজের অনেকেরই করোনা হয়েছে। তাই নিজেকে আরো বেশি সতর্ক রাখতে হচ্ছে। বাসায় মেহমান পর্যন্ত নিষেধ।
করোনা গেলে কী করবেন ভেবে রেখেছেন?
জানি না করোনা থেকে কবে মুক্তি পাব! শিগগিরই করোনা আমাদের মুক্তি দেবে মনে হচ্ছে না। শুরুর দিকে বেশ কিছু পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম। এই যেমন—পরিবার নিয়ে দেশের বাইরে ঘুরতে যাব, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ মুক্তি পেলে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া বুঝে ফের ক্যারিয়ার গোছাব, নতুন ব্যবসা চালু করব। কিন্তু এখন আর এসব ভাবতে ভালো লাগে না। সময় হলে দেখা যাবে।
দেবের সঙ্গে নাকি ছবি করার প্রস্তাব পেয়েছেন?
হ্যাঁ। শাপলা মিডিয়ার ছবি। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সেলিম খান আমাকে ফোন দিয়ে ছবির গল্প শুনিয়েছেন। দেব নিজেই নাকি আমার সঙ্গে অভিনয়ের আগ্রহ প্রকাশ করেছে! সেলিম ভাই দু-এক দিনের মধ্যে আমাকে চুক্তিবদ্ধ করাতে চান বলে জানিয়েছেন। কিন্তু আগস্ট থেকে ছবির শুটিং হবে শুনে সিদ্ধান্ত নিতে একটু ভয় পাচ্ছি। কারণ তত দিনে করোনার কী পরিস্থিতি দাঁড়ায় কে জানে! পরিস্থিতি এমনই থাকলে আমার জন্য শুটিং করা সহজ হবে না। আর যা-ই হোক, পরিবারকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারব না। তাই কিছুদিন অপেক্ষা করতে চেয়েছি।
ছবির গল্প কেমন?
সামাজিক ঘরানার। স্বামী-স্ত্রী ও তাদের একমাত্র সন্তান নিয়ে গল্প। আমি সারাংশটুকু জেনেছি। মনে হয়েছে, আমার চরিত্রে আরেকটু পরিবর্তন দরকার। প্রযোজক সেটা মেনেও নিয়েছেন। দেখা যাক সময় কী বলে।
এ সপ্তাহে শাকিব খানের চেয়ে আপনার ফেসবুক পেজের ফলোয়ার বেড়েছে। আপনার জনপ্রিয়তা হঠাৎ বাড়ার কারণ কী?
করোনা আসার কিছুদিন আগে ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ ছবির দুটি গান ইউটিউবে প্রকাশ পেয়েছে। কোনো প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই গান দুটি বেশ সাড়া ফেলেছে। বিশেষ করে আপনি যদি মন্তব্যের ঘরে চোখ রাখেন দেখবেন, সবাই আমার ফিরে আসাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে দেখার অপেক্ষায় আছেন তাঁরা। আমি আশা করিনি, এত দিন পর পর্দায় ফিরে সবার এমন ভালোবাসা পাব। আমার বিশ্বাস, দর্শক বেড়েছে।
বাবা দিবস গেল। জয়কে দেখতে এসেছিলেন শাকিব খান?
এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না। নিজেদের কথা নিজেদের মধ্যেই থাকুক। জয় তার বাবাকে অনেক পছন্দ করে, সেটাই আসল কথা।
শাবানাকে ঘিরে ফেসবুকে আপনার পোস্ট ও মন্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে...
শাবানা ম্যাডামকে কষ্ট দিতে চাইনি। সেদিনকার ব্যবহারে খুব অসহায় লেগেছিল। নিজেকে মানিয়ে নিতে পারিনি। আমার চোখে-মুখে তখন অন্ধকার। ছোট্ট জয়কে নিয়ে তাঁর বাসায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি, শুধু একটিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করব বলে। আমার বিশ্বাস ছিল, তিনি পারবেন আমাকে আলোর পথ দেখাতে। আমাদের সাংসারিক জটিলতা নিরসনে তিনি এগিয়ে আসবেন। কিন্তু দুই ঘণ্টা পর কেয়ারটেকার জানালেন, তিনি বাসায় নেই। খুব আশাহত হয়েছিলাম সেদিন।
কিন্তু ঘটনা তো তিন বছর আগের। এত দিন পর কেন প্রকাশ করলেন?
কেন জানি হঠাৎ দিনটার কথা মনে পড়ল। আর আমি আবেগপ্রবণ। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরেই স্ট্যাটাসটি লিখেছিলাম। বিশ্বাস করেন, তাঁকে কষ্ট দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে স্ট্যাটাসেই তাঁর নাম মেনশন করতাম। শাবানা ম্যাডামকে আগেও যেভাবে সম্মান করতাম, এখনো করি। তিন বছর আগের পরিস্থিতিতে আমি একজন নারী হিসেবে তাঁর কাছে গিয়েছিলাম। তিনি হাজারো বাঙালি নারীর আদর্শ। মনে হয়েছিল, আমাকে সাহায্য করার জন্য তিনিই সবার আগে হাত বাড়িয়ে দেবেন।
এই চার মাসে কাদের সঙ্গে আপনার সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ হয়েছে?
প্রায় সব সহশিল্পীর সঙ্গেই যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করি। সুখ-দুঃখের খবর নিই। তবে আলাদা করে বলব নিপুণ আপুর কথা। দুজনের মধ্যে অন্য রকম একটা টান তৈরি হয়েছে। আমার দুঃসময়ের প্রতিটি মুহূর্তে তাঁকে কাছে পেয়েছি। আমাকে সাহস দিয়েছেন সামনে থেকে।