পবিত্র শবেবরাত। ফারসি শব্দ ‘শব’-এর অর্থ রাত এবং আরবি শব্দ ‘বরাত’-এর অর্থ মুক্তি বা ভাগ্য। অর্থাৎ শবেবরাত হলো ভাগ্যের রাত বা মুক্তির রাত। এ রাতকে লাইলাতুল বরাতও বলা হয়। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা রমজানের রোজা শুরুর দুই সপ্তাহ আগে চাঁদ দেখে শবেবরাত পালন করেন। হিজরি সনের ১৪ শাবান দিবাগত রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে সৌভাগ্যের রাত হিসাবে পরিচিত। এ রাতে বান্দাদের জন্য অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন আল্লাহতায়ালা।
মহিমান্বিত এই রাতে মুসলমানরা পরম করুণাময় আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় নফল নামাজ, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত ও জিকিরে মগ্ন থাকেন। অতীতের পাপ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন। এছাড়া সন্ধ্যার পর অনেকে কবরস্থানে যান এবং আপনজনদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন।
ইসলামি চিন্তাবিদরা বলছেন, মুক্তি কিংবা ভাগ্যের রাত উপলক্ষ্যে বিশ্বনবি (সা.)-এর জীবনী নিয়ে আলোচনা হয়। সুবিধাবঞ্চিত লোকজনের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। কোথাও ধর্মীয় মহফিল হয়। কেউ কেউ বাড়িতে শবেবরাত উপলক্ষ্যে হালুয়া-রুটি তৈরি করে দারদ্রদের মধ্যে বিলি করেন। পূর্ণতা ও মুক্তির আশায় রাতভর মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা এবং বাসাবাড়িতে নামাজ পড়াসহ ইবাদত করা হয়।
পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ওয়াজ, দোয়া মহফিল, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত,হামদ-নাতসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিট থেকে কুরআন ও হাদিসের আলোকে লাইলাতুল বরাতের শিক্ষা ও করণীয়বিষয়ক আলোচনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। রাত ২টা ১৫ মিনিটে নফল ইবাদতের গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে আলোচনা হবে এবং ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে আখেরি মোনাজাত। মোনাজাত পরিচালনা করবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী।
পবিত্র শবেবরাত মুসলমানদের কাছে পবিত্র রমজানের আগমনি বার্তাও নিয়ে আসে। শাবানের পর আসে পবিত্র রমজান মাস। তাই শবেবরাত থেকেই কার্যত রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।এ রাতের বিষয়ে রাসুলে পাক (সা.) বলেছেন,শবেবরাতের রাতটি হলো অর্ধ শাবানের রাত। মহান আল্লাহ এই রাতে তাঁর বান্দার সব প্রার্থনা মনোযোগ সহকারে শোনেন। যারা ক্ষমাপ্রার্থী, তাদের পাপ ক্ষমা করে দেন। আর যারা অনুগ্রহপ্রার্থী, তাদের অনুগ্রহ করেন, বরকত প্রদান করেন।
আপনার মতামত লিখুন :