বন্দর নগরী চট্টগ্রামে অবৈধভাবে চলাচল করা ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।গত দুই দিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে প্রধান সড়কে এসব রিকশা চলাচল করছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
নগরীর মনসুরাবাদ এলাকায় পুলিশের ডাম্পিং স্টেশনে জব্দ করা রিকশাগুলো রাখা হচ্ছে। নগরজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য চলছিল। কোনো ধরনের ব্রেকিং সিস্টেম ছাড়াই অদক্ষ চালকেরা এসব যান নিয়ে রাস্তায় নামছে। এমনকি শিশুরাও ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে দেখা যাচ্ছে, ফলে দুর্ঘটনা নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত শুক্রবার নগরীর কাপাসগোলা নবাব হোটেলের পাশে হিজড়া খালসংলগ্ন ড্রেনে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা পড়ে গেলে ছয় মাস বয়সি এক শিশু মারা যায়। এ ঘটনার পর থেকেই নগরজুড়ে অভিযান শুাং করে সিএমপি।সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ জানায়, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, বায়েজিদ,খুলশী, কোতোয়ালী, পাহাড়তলী, হালিশহর ও আকবরশাহ থানা এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করে। চান্দগাঁও থানাধীন মৌলভীবাজার থেকে কালুরঘাট ব্রিজ,ওয়াসা রোড, পাঠাইন্না গোদা, হামিদচর, ওসমানিয়াপুল, সিএন্ডবি এলাকা মিলিয়ে প্রায় ১০-১২ হাজার রিকশা চলে।
বাকলিয়া থানা এলাকার এক্সেস রোড, চকবাজার, ধনিয়ারপুল, সৈয়দ শাহ রোড, বড় কবরস্থান, পুলিশ বিট, আব্দুল লতিফ হাট, চেয়ারম্যান ঘাট, আন্দরকিল্লা ও টেরিবাজার এলাকা মিলিয়ে চলে প্রায় ৫ হাজার রিকশা।
এছাড়া খুলশী,বায়েজিদ ও পাঁচলাইশ থানার আওতাধীন বিভিন্ন সড়ক ও আবাসিক এলাকায়ও কয়েক হাজার ব্যাটারি রিকশা চলাচল করে। পুরো নগরজুড়ে বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজার ব্যাটারি রিকশা চলাচল করছে বলে জানা গেছে।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাহমুদা বেগম বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। কাজেই এগুলোর চলাচল অবৈধ। তবে জব্দ করা গাড়িগুলো সংরক্ষণের জন্য আমাদের পর্যাপ্ত জায়গা নেই। ফলে জরিমানা করেই ছেড়ে দিতে হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, যেদিন ধরা হয়, সেদিনই অনেক সময় ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ফলে চালকেরা মনে করছেন, আইন না মানলেও সমস্যা নেই। এ অবস্থায় নিয়ম করে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দেয়ার দাবি উঠেছে চালকদের পক্ষ থেকেও।’
আপনার মতামত লিখুন :