শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফসল রাজধানীর সাত কলেজ নিয়ে হচ্ছে ভিন্নধর্মী বিশ্ববিদ্যালয়। সাত কলেজের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে থাকবে বিভিন্ন অনুষদ। তবে চূড়ান্ত রূপ লাভের আগে বর্তমান শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ও ভর্তি চলবে অন্তর্র্বতী প্রশাসনের অধীনে। ভর্তিতে কমবে আসন সংখ্যা, এমন আভাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে দীর্ঘদিনের সংকট দূর হবে বলে আশা
কোনো ধরনের সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই ২০১৭ সালে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। শিক্ষার মানোন্নয়নের কথা বলা হলেও এই প্রক্রিয়ায় সেশনজটসহ ভোগান্তি বাড়ে শিক্ষার্থীদের। সবশেষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও দাবির মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করা হয় সাত কলেজকে। সিদ্ধান্ত হয় ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার।
কেমন হবে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থীর এই বিশ্ববিদ্যালয়? এমন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে সাত কলেজের সব ক্যাম্পাসে সব বিষয় পড়ানো হবে না। যে ক্যাম্পাস যে অনুষদ ও বিভাগ পড়ানোর উপযুক্ত সেখানেই সেই অনুষদ ও বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম চলবে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে মঞ্জুরি কমিশনের টিম ক্যাম্পাসগুলো পরিদর্শন করেছে।বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘প্রতি শিক্ষাবর্ষে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হবে না। দুই-তিনটি কলেজের অবকাঠামো অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে; যা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কাজ করার মতো অবস্থায় নেই। সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই কাজ করা হবে।’
পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত ইউজিসির তত্ত্বাবধানে অন্তর্র্বতীকালীন কাঠামোর অধীনে চলবে সাত কলেজের কার্যক্রম। সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন সাত কলেজের যেকোনো একজন অধ্যক্ষ। থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর, ভর্তি দফতর, রেজিস্ট্রার দফতর ও হিসাব দফতরে প্রতিনিধিরাও।
ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাত কলেজকে নিজেদের অন্তর্ভুক্তি থেকে ছেড়ে দিয়েছে। তবে চলমান শিক্ষা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিষয়ে তারা আশ্বাস দিয়েছেন।অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, বর্তমানে সাত কলেজের আওতাধীন যেসব শিক্ষার্থী রয়েছে,তাদের সার্টিফিকেট দিতে হবে। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
নতুন এই সিদ্ধান্তে আশার আলো দেখছেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, আসন সংখ্যা কমিয়ে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় নেগেটিভ মার্কিং যুক্ত করতে হবে। আসবাবপত্র, ক্লাসরুম-ল্যাব সংকট দূর করতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং যেসব কলেজে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যমান সে বিষয়ে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়ার পরামর্শ শিক্ষাবিদদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, কোনো একটি বিভাগ চালু করার ক্ষেত্রে ন্যূনতম যে শিক্ষক,লাইব্রেরি ও গবেষণাগার প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করতে হবে।তবে নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ন্তভুক্ত না হয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি করে আসছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।
আপনার মতামত লিখুন :