বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১

সুইজারল্যান্ডসহ তিন দেশে বাড়ি! টাকাও কাড়িকাড়ি

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম

সুইজারল্যান্ডসহ তিন দেশে বাড়ি! টাকাও কাড়িকাড়ি

সুইজারল্যান্ডসহ তিন দেশে বাড়ি। আছে  কাড়িকাড়ি টাকাও। সবই যেনো আলাদিনের চেরাগবাতি। সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের ছেলে সাদাত মান্নান অভির এই অস্বাভাবিক সম্পদের তথ্য মিলেছে। কর নথিতে ২১৩ কোটি টাকার সম্পদ দেখালেও আয়ের উৎস দেখাননি সাবেক এ উপজেলা চেয়ারম্যান। 
যুক্তরাজ্যের বার্কলে ব্যাংকে চাকরি করা সাদাতের আছে লন্ডনে চার বাড়ি, সুইজারল্যান্ডে একটি ও ঢাকায় একটি। অবশ্য কর পরিহারের দায়ে তাকে লন্ডনে চাকরিও হারাতে হয়েছিল।  বনানীর এ বøকের ছয়তলা ভবনের সাতটি ফ্ল্যাট ও সাতটি গ্যারেজের মালিক সাদাত মান্নান। আয়কর নথিতে প্রায় ১৭ হাজার স্কয়ার ফিটের এ সম্পদের মূল্য দেখানো হয়েছে মাত্র সাড়ে ছয় কোটি টাকা। 
যদিও বাজারমূল্য কয়েকগুন। একটি ফ্ল্যাটে নিজেই থাকেন সাদাত। বাকিগুলো ভাড়া দেয়া। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই সাদাতের ফ্ল্যাটে ঝুলছে তালা। সৎ লোকের মুখোশ পড়া মান্নান তার ছেলেকে অঢেল সম্পদের মালিক করে তাক লাগিয়ে দিযেছেন। যেহেতু অর্থপ্রতিমন্ত্রী পরে পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্বপালন করেছেনএই মুখোশধারী মান্নান।
বিদেশে ছেলে সাদাত মান্নানের সম্পদ সম্পর্কে জানা গেছে যা অবিশ্বাস্য। যুক্তরাজ্যের সারি শহরের কোবহামের ফেয়ারমিলে ২০১৬ সালে একটি বাড়ি কেনেন তিনি। তখন দাম ছিলো প্রায় ৪৮ কোটি টাকার সমান। একই শহরের এশার ড্রাকেসক্লোজে আরো একটি বাড়ি আছে তার। দাম ২০ কোটি টাকা প্রায়। সাদাত এটি কেনেন ২০১৩ সালে। 
লন্ডনের ওয়েস্টফেরি সার্কাসে ২০১২ সালে একটি এপার্টমেন্ট কেনেন তিনি। দাম পড়ে ১৭ কোটি টাকা প্রায়। একই শহরের হার্টসমেয়ার রোডেও একটি এপার্টমেন্ট আছে তার। 
২০০৭ সালে সাদাত সেটি ক্রয় করেন সাড়ে ছয় কোটি টাকায়। আর,সুইজারল্যান্ডের ভো রাজ্যে সিগনি এভেনেক্সে সাদাত বাড়ি কেনেন ২০০৮ সালে। তখন এটির দাম ছিল ২৫ কোটি টাকা প্রায়।   
সুনামগঞ্জে দুই একরের বেশি জমির মালিক সাদাত মান্নান। ঢাকাসহ একাধিক স্থানে আছে আবাসিক প্লটের ভাগ। তার নগদ আছে প্রায় ৮ কোটি টাকা।
২০২৩-২৪ করবর্ষে সাদাত নিট সম্পদ দেখিয়েছেন একশ’ ৩৯ কোটি টাকা। কিন্তু আয়ের উৎস দেখাননি। আয়কর নথিতে সম্পদ বন্ধকবাবদ ৭৩ কোটি টাকার দায় দেখান সাদাত মান্নান। এরও বিস্তারিত বিবরণ নেই নথিতে। 
সাদাত মান্নানের এসব সম্পদে কর ফাঁকি তদন্ত করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্পদ, বিনিয়োগ ও ঋণের উৎস দেখানো না হলে তা আয় হয়ে যায়।১৯৮০ সালে জন্ম নেয়া এই মন্ত্রীপুত্র লেখাপড়া করেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে। তারপর লন্ডনে বার্কলে ব্যাংকে প্রায় ২০ বছর চাকরি করেন। বার্কলে ব্যাংকে চাকরির সময় আইন ফাঁকফোকর বের করে কোম্পানির মুনাফা বাড়ানোর অভিযোগে চাকরিও যায় তার। পরে যোগ দেন অন্য একটি কোম্পানিতে। এ নিয়ে অনুসন্ধানি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বøুমবার্গও।
দুই বছর আগে দেশে ফিরে এমপি পদে নমিনেশন না পেলেও সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয় পান তিনি।কর ফাঁকির অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে সাদাতের মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও সাড়া মেলেনি। এদিকে মুখোশপড়া মান্নানের সুন্দর গল্পও আছে,তিনি খুব কৌশলে শাটের বোতাম উপড়েরটা নিচে আর নিচেরটা উপরে লাগিয়ে স্বৈরাচারের ক্যাবিনেট মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনে গেলে তার এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতে পড়েছিল প্রধানমন্ত্রী তাকে শাটের বোতাম ঠিক করতে বলেন। কারন প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করার জন্যই নাকি এ কাজটি করেছিলেন। আজ তার ছেলের এমন তাক লাগানো সম্পদের বিবরণী দেখে মানুষের গায়ের লোম দাড়ায়। রক্ত আর জীবন দেয় গরীব কর্মিরা আর লুটে নিয়ে যাচ্ছে মান্নান পুত্ররা। তাদের কঠোর শাস্তি আর অবৈধ সমস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!