বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১

নগদের ২৩০০ কোটি টাকা দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক

আইন-অপরাধ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫, ০৯:১০ এএম

নগদের ২৩০০ কোটি টাকা দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক

ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা দুর্নীতি ও পাচারের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।বুধবার (১২ ফেব্রæয়ারি) নগদের বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই করতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে দুদকের সহকারী পরিচালক রুহুল হক ও তানজির আহমেদের নেতৃত্বে একটি টিম। অভিযান শেষে এ অনিয়মের তথ্য সাংবাদিকদের জানান তারা।নগদের প্রশাসক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ১৭০০ কোটি টাকার পাচার ও ৬০০ কোটি টাকার ই-মানি সংক্রান্ত অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। দুদক টিম এ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করেছে। তারা যাচাই-বাছাই করে দেখবে।
জানা গেছে,ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা ডাক বিভাগকে ব্যবহার করে বিধিবহির্ভূতভাবে ডিজিটাল অর্থ লেনদেন প্ল্যাটফর্ম নগদ চালু করে। শুরুতে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন, সাবেক এমপি নাহিম রাজ্জাক, রাজি মোহাম্মদ ফকরুলসহ প্রভাবশালী চক্র এ প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন। খোকন তার স্ত্রী নূপুরের নামে ৫০০ শেয়ার নিয়েছিলেন। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে তখন আইন বহির্ভূতভাবে নগদ প্রতিষ্ঠা নিয়ে সংবাদ প্রচার করলে তোলপাড় শুরু হয়। কিন্তু প্রভাবশালী চক্রটি শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছত্রছায়ায় এ ব্যবসা চালিয়ে যায়। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ও তার দোসররা পালানোর পর নগদের দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অভিযানে অংশ নেওয়া দুদক কর্মকর্তা তানজির আহমেদ বলেন, আমরা নথিপত্র সংগ্রহ করেছি। যাচাই-বাছাই করে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করবো।
অভিযোগসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (এমএফএস) প্রায় পাঁচ হাজার অবৈধ এজেন্ট রয়েছে। এসব এজেন্টের মাধ্যমে গত এক বছরে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এজেন্টরা হুন্ডির মাধ্যমে ওই টাকা পাচার করেছে। এসব বিষয় সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতেই নগদে অভিযান চালানো হয়।
অভিযান সংশ্লিষ্টরা জানান,নগদ বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত ই-মানি তৈরি করে বেশকিছু বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে অর্থপাচার করেছে। অভিযানকালে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, নগদ প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বেশি অনিয়মিত ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন করেছে। এছাড়া ট্রাস্ট অ্যাকাউন্টের সঙ্গে নগদের মূল অ্যাকাউন্টের হিসাবের গরমিল পাওয়া গেছে। অভিযোগের বিষয়গুলো বিশদভাবে যাচাইয়ের নিমিত্ত টিম সংশ্লিষ্ট সব নথি সংগ্রহ করে। সংগৃহীত সব রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!