প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ডিজিটাল বিপ্লবের পূর্ণ সুবিধা গ্রহণ করে তরুণদের দক্ষ করে তোলার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ফলমুখী সংযোগ গড়ে তোলার এবং সমবায়ী শিক্ষা প্রর্তনের প্রস্তাব করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) মিশরে রাজধানী কায়রোতে ১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন,প্রথমত, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও সমমানের জ্ঞান বিতরণী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কার্যকর ও ফলমুখী সংযোগ তৈরি ও তা গভীর করতে হবে। বিশেষ করে ফলিত বিজ্ঞান শাখার ছেলে-মেয়েদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রস্তুত করায় মনোনিবেশ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ডি-৮ সদস্য দেশগুলোকে উদ্যোক্তা ও উচ্চতর শিক্ষার মধ্যে আজকের দূরত্ব ঘুচিয়ে আরও কাছাকাছি আনতে হবে। তাদের লক্ষ্য হতে হবে এই শিক্ষা থেকে অর্জিত জ্ঞানের ডি-৮ দেশগুলোর নেতাদের বৈশ্বিক ব্যবসা ও শিল্পের তীব্র প্রতিযোগিতার বাজারের টিকে থাকা নিশ্চিত করতে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি এতে ডি-৮ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কাঠামোকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে বলে, তবে আমাদের তা-ই করা উচিত। ব্যবসাকে শুধু সম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যম হিসেবে না দেখে এটি যেন মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে সেভাবে রূপান্তরিত করতে হবে। তারা একটি নতুন সভ্যতা গড়ে তুলতে সামাজিক ব্যবসায় সম্পৃক্ত হবেন।’
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, দ্বিতীয়ত, ডি-৮ দেশগুলোতে তারা বছরের পর বছর ধরে প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে লাখ লাখ লোককে মৌলিক শিক্ষা ও দক্ষতা প্রদানের চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, ‘১.২ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে, এটি প্রায়শই একটি কঠিন কাজ। উদাহরণস্বরূপ ‘মানদন্ডে’ পৌঁছানোর জন্য আমরা দূরশিক্ষণের মাধ্যমে চেষ্টা করেছি। কীভাবে কর্মক্ষেত্রে লাখ লাখ যুবককে দক্ষ করা যায় তা নিয়ে আমাদের আরও গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। কর্মক্ষেত্রেও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ ও নীতি-নৈতিকতাও কঠোর দক্ষতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবং এ ছাড়াও আমরা বিভিন্ন বৃত্তিমূলক ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে লাখ লাখ লোককে পুনরায় দক্ষ করে তোলার চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন।’মৌলিক এআই-ভিত্তিক সরঞ্জাম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলো এখন নাগালের মধ্যে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস ডি-৮ নেতাদের একটি সমবায়ী শিক্ষা এজেন্ডা বিবেচনা করার আহ্বান জানান, যা তাদের জাতীয় অঙ্গীকারের পরিপূরক হতে পারে।
তিনি বলেন, যুব উদ্যোক্তাদের বিশ্বের মতই ‘কাজের বিশ্ব’ও যেভাবে দ্রæত বিকশিত হচ্ছে, ডি-৮ দেশগুলোকে তাদের ছেলে-মেয়েদের অর্থনীতির নেতা হওয়ার উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে নতুন ধরনের ‘শিক্ষা’ উদ্ভাবন করতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের দেশগুলোর মহান ঐতিহ্য, প্রজ্ঞা ও কৃতিত্ব রয়েছে। আমাদের দেখতে হবে যে, কীভাবে আমরা সেগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে নতুন কিছু গড়ে তুলতে পারি। বছরের পর বছর ধরে যে ডিজিটাল বিপ্লব চলছে, আমরা এখনও তার পুরো সুবিধা নিতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন যেহেতু এআই সুলভ হয়েছে, তাই আসুন আমরা আমাদের উদ্যোক্তা ছেলে-মেয়েদের সুবিধার জন্য এক্ষেত্রে বাধাগুলো মোকাবিলা করতে পারি কি না, তা ভেবে দেখি। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে, আমি আমাদের বিবেচনার জন্য দুটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ প্রস্তাব করতে চাই।’
আপনার মতামত লিখুন :