দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন আরামিট গ্রæপভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠান ভিশন ট্রেডিংয়ের নামে ভুয়া ঋণ অনুমোদন করিয়ে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সিনিয়র চট্টগ্রাম মহানগর স্পেশাল জজ (ভারপ্রাপ্ত) আবদুর রহমানের আদালতে দুদকের পক্ষ থেকে এই আবেদন করা হয়। এ বিষয়ে দুদকের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মোকাররম হোসাইন জানান, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি আবেদন করা হয়েছে। আদালত আবেদনটি ২১ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য ধার্য করেছেন।’
এদিকে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে-বেনামে আরও পাঁচ দেশে সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও ক্যাম্বোডিয়ায় সম্পদ অর্জনের রেকর্ডপত্র উদ্ধার করেছে দুদকের নেতৃত্বাধীন টাস্কফোর্স। এর আগে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দুবাই ও সিঙ্গাপুরে ৫৮২টি বাড়ি ও ফ্ল্যাটের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল।
গতকাল (শনিবার) দিবাগত রাত সোয়া ৪টায় দুদকের এক অভিযানে সাইফুজ্জামানের স্ত্রী ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামানের ড্রাইভার মো. ইলিয়াস তালুকদারের বাড়ি থেকে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ সংক্রান্ত ২৩ বস্তা রেকর্ডপত্র উদ্ধার করা হয়। এসব রেকর্ডপত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুদকের জনসংযোগ (উপ-পরিচালক) কর্মকর্তা মো. আক্তারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার দিবাগত রাত ৪টা ১৫ মিনিটে (২১ সেপ্টেম্বর ভোরে) চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন ৩ নং শিকলবাহা ইউনিয়নের ওসমান তালুকদারের বাড়ি থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, পুলিশ ও অন্যান্য সাক্ষীদের উপস্থিতিতে এসব আলামত উদ্ধার করা হয়। দুদকের উপস্থিতি টের পেয়ে এগুলো পাশের বাড়িতে রাখা হয়েছিল।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ১৬ সেপ্টেম্বর কালুরঘাটে অবস্থিত আরামিট গ্রæপের শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে ডকুমেন্টগুলো গোপনে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ইউসিবিএলের চেয়ারম্যান রুকমীলা জামানের ড্রাইভার মো. ইলিয়াস তালুকদার প্রথমে সেগুলো নিজের বাড়িতে রাখলেও পরে ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযান শুরুর আগে পাশের ওসমান তালুকদারের বাড়িতে সরিয়ে রাখেন।
উদ্ধারকৃত আলামত প্রাথমিকভাবে পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ইতোপূর্বে প্রাপ্ত ৪টি দেশের (যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দুবাই ও সিঙ্গাপুর) ৫৮২টি সম্পদ ছাড়াও ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও ক্যাম্বোডিয়ায় সম্পদ অর্জনের তথ্য রয়েছে। এছাড়া দেশে-বিদেশে ক্রয়কৃত বাড়ির মালিকানা,ভাড়ার আয়, মেইনটেনেন্স ব্যয়সহ বিভিন্ন তথ্য ও ডকুমেন্টস এবং সাইফুজ্জামান চৌধুরীর দ্বারা বিদেশে মুদ্রা পাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণও এই ডকুমেন্টে রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :