সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৩০ মার্চ উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া প্রায় এক দশক পর লন্ডনে বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় ঈদ উদযাপন করেছেন।এর আগে ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়ে ঈদুল আজহা উদযাপন করেছিলেন তিনি।বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, “খালেদা জিয়া বর্তমানে লন্ডনে সুস্থ আছেন এবং পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন। এটি আমাদের জন্য একটি আনন্দের মুহূর্ত।”
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ. জেড. এম. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান,‘ম্যাডাম ওনার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের বাসায় আছেন। ঈদের দিনটি উনি বাসায় আপনজনদের নিয়ে একান্তে কাটিয়েছেন। বাসায় দুই পুত্রবধূ (ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান) আছেন। আছেন তিন নাতনি (ব্যারিস্টার জায়মা রহমান, জাফিয়া রহমান, জাহিয়া রহমান)। ম্যাডামকে ঘিরে ঈদের সব আয়োজন তারাই সাজিয়েছেন। কারণ দীর্ঘ কয়েক বছর পর ম্যাডাম তার আপনজনদের সঙ্গে ঈদ করছেন। বুঝতেই পারছেন এখানে অনেক আবেগ জড়িত।’তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়া এখন আগের চেয়ে অনেকটা ভালো আছেন। তার অবস্থা আগের থেকে মাচ বেটার।
খালেদা জিয়া দেশবাসীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পৌঁছান। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’ এ ভর্তি করা হয়। ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন এই হাসপাতালে অধ্যাপক জন কেনেডির তত্ত্বাবধানে। এরপর লন্ডন ক্লিনিকে তার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় অধ্যাপক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকছেন খালেদা জিয়া।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।কথিত দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালে বিএনপির চেয়ারপারসনকে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি করে তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকার। করোনার সময়কালে সরকার তাকে বিশেষ কারামুক্তি দেয়। কারাবন্দি অবস্থায় চারটি ঈদে কেটেছে কারাগারে ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার পরিবার বারবার আবেদন করলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন খালেদা জিয়া। এরপর তার বিদেশ যাওয়ার দরজা উন্মুক্ত হয়।
আপনার মতামত লিখুন :