আইন ও বিচার,সংসদ, নির্বাচন ব্যবস্থা,আইন-শৃঙ্খলা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি, সংবিধান, পররাষ্ট্র, ধর্ম, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ ১০টি খাতে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার দুপুরে রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
এর আগে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এসময় গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি। নিহত এবং আহতদের জন্য দোয়া কামনা করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ।
সংস্কারের প্রস্তাবনা তুলে ধরে ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজন। বিচার বিভাগ সংস্কার করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের অধীনে আইন কমিশন গঠন করতে হবে। সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ গঠন করতে হবে। সর্বোচ্চ পাঁচ ও তিন বছরের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। সংসদে বিরোধীদলের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংবিধানে স্থায়ীভাবে তত্ত্বাধায়ক ব্যবস্থা যুক্ত করতে হবে। একদিনেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। কোনো সরকারি চাকরিজীবী অবসরের তিন বছরের আগে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে। পুলিশে ধর্মীয় শিক্ষা চালু করতে হবে। রিমান্ডে নেয়ার সময় পরিবারের প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। র্যাব সংস্কার করতে হবে। যাতে বাহিনীর প্রতি আস্থা ফিরে আসে। এক্ষেত্রে যারা আগে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের বাহিনীতে রাখা যাবে না।
ডা. তাহের বলেন, জনপ্রশাসনে যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততাকে প্রাধান্য দিতে হবে। সরকারি চাকরিতে আবেদন বিনামূল্যে করতে হবে। কোনো ফি রাখা যাবে না। আগামী ২ বছরের জন্য চাকরিতে ৩৫ বছর, পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে ৩৩ বছর এবং অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর করার প্রস্তাবনা করছি। চাকরিতে বিরাজমান আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে হবে। যারা চাকরিতে থেকে দুর্নীতি ও অন্যায় করেছেন তাদেরকে বহিষ্কার করতে হবে। দুদকে যোগ্য, দক্ষ এবং সৎ ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে। এক ব্যক্তি পর পর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। সকল শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের ইতিহাস এবং মহানবী (সা.) এর জীবনী অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সংস্কৃতির সংস্কার করতে হবে। প্রাণীর মূর্তি নির্মাণ না করে দেশি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে। পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। বিগত সরকারের আমলে সম্পাদিত চুক্তি রিভিউ করতে হবে। এজন্য একটি রিভিউ কমিশন গঠন করা যেতে পারে। বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :