মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব/দ্বিকক্ষ সংসদ, ও প্রধানমন্ত্রীর ২ মেয়াদের

ডেইলি খবর ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ১২:০১ পিএম

বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব/দ্বিকক্ষ সংসদ, ও প্রধানমন্ত্রীর ২ মেয়াদের

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশনে দলীয় প্রস্তাব অনেকটা চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। তাদের প্রস্তাবে রয়েছে সংবিধান, নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ বিভাগের সংস্কার। বিএনপির প্রস্তাবে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনা। 
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় দলীয় সংস্কার কমিটিগুলোর কাজের অগ্রগতির বিষয় ছাড়াও, অন্তর্র্বতী সরকারের গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর কাজ নিয়েও আলোচনা করা হয়।
বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব কমিটি যে বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়েছে। এর মধ্যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার- এই তিন বিষয়কে সংবিধানের মূলনীতি ঘোষণা করা, আনুপাতিক নির্বাচনপদ্ধতিতে না যাওয়ার প্রস্তাব থাকছে। রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে বিএনপি তাদের ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের আলোকেই সংবিধানসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ করা, এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনা- এসব প্রতিশ্রæতি রয়েছে বিএনপির ৩১ দফায়। তবে এসব বিষয়ে বিএনপির নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেননি।
অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের আলোকে বিএনপিও সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিটি গঠন করে। এর মধ্যে পুলিশ সংস্কার কমিটির প্রধান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ তার প্রতিবেদন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জমা দিয়েছেন। সংবিধান সংস্কার ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির প্রতিবেদনও প্রায় চূড়ান্ত বলে জানা গেছে। যথাক্রমে খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আবদুল মঈন খান দুই কমিটির প্রধান।
বিএনপির নেতারা বলছেন, বিএনপির সংস্কার কমিটিগুলোর তৈরি করা প্রতিবেদন বা প্রস্তাবগুলো সরকারের চাওয়া অনুযায়ী ছয় সংস্কার কমিশনের কাছে দেওয়া হবে। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় স্থানীয় সরকার ও নারীবিষয়ক আরও দুটি সংস্কার কমিটি গঠনের পরামর্শ আসে। এর একটিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস,আরেকটিতে সেলিমা রহমানকে আহ্বায়ক করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
সরকারের সূত্রগুলো বলছে,সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন পাওয়ার পর অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করতে পারেন। অন্তর্র্বতী সরকার গত ১১ সেপ্টেম্বর নির্বাচনব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই এই কমিশনগুলোর প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, নারীবিষয়ক এবং গণমাধ্যম সংস্কারে অন্তর্র্বতী সরকার আরও চারটি কমিশন গঠন করে বৃহস্পতিবার।
সংস্কার প্রশ্নে নানা আলোচনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। সাবেক সচিব এ এস এম মো. নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার সিইসিসহ চার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) শপথ নেবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এই কমিশন গঠনকে নির্বাচনের পথে বড় অগ্রগতি বলে মনে করছেন।
এদিকে বিএনপি ও এর মিত্রদের অনেকেই নির্বাচনব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচন চাইছে। আবার কিছু দল নির্বাচনের আগে সংস্কারকাজ শেষ করার তাগিদ দিচ্ছে। এদিকে সরকারের সূত্রগুলো বলছে, সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন পাওয়ার পর অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করতে পারেন।

 

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!