শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১

বাইডেন যা বলে গেলেন

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৫, ১২:২৮ পিএম

বাইডেন যা বলে গেলেন

বিদায় নেওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট স্থানীয় সময় বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে শেষ বারের মতো ভাষণ দেন বাইডেন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে গোষ্ঠীশাসন গণতন্ত্রের বিপদের কারণ হয়ে উঠছে।  আর সেই ভাষণে অনেক কথার ভিড়ে তিনি মার্কিনিদের সতর্ক করে দিয়েছেন ধনকুবের বা অলিগার্কদের নিয়ে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বিপদের মুখে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৬জানুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এবং এনডিটিভি।
বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অতি ধনী ‘অলিগার্ক’ শ্রেণীরা শিকড় গাড়ছে। তারা দেশটির রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করছে। সেই সঙ্গে এসব প্রযুক্তি শিল্প কমপ্লেক্সের মালিকরা আমেরিকানদের অধিকার এবং গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ লঙ্ঘন করছে। আর এই কতিপয় মানুষের হাতে সম্পদ এবং ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়ার বিষয় নিয়ে মার্কিনিদের সতর্ক করেন বাইডেন।
বাইডেন বলেন, ‘আজ, আমেরিকায় একটি ব্যাপক সম্পদ, ক্ষমতা এবং প্রভাবের অধিকারী অলিগার্ক আবির্ভূত হচ্ছে। যেটা আক্ষরিক অর্থে আমাদের গোটা গণতন্ত্র, আমাদের মৌলিক অধিকার, আমাদের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।’একই ভাষণে এই অতি ধনী মানুষের হাতে ক্ষমতা কতটা বিপজ্জনক এবং তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার যদি না থামানো হয়; তাহলে এর পরিণতি কতটা বিপজ্জনক হবে সে দিকেও জোর দেন বাইডেন।
এ ব্যাপারে অতীতে সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স সম্পর্কে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ডয়াইট আইজেনহাওারের হুঁশিয়ারির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বাইডেন বলেন, ‘আমি সমানভাবে প্রযুক্তি-শিল্প কমপ্লেক্সের সম্ভাব্য উত্থান সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, যেটা আমাদের দেশের জন্য প্রকৃত হুমকি হতে পারে।’
বাইডেন বলেছেন,আমি পরিবেশকে বাঁচিয়ে দেশকে আর্থিক অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা পরিবেশ বাঁচাতে যে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম,ক্ষমতাশালীরা তাদের বিপুল ও অনিয়ন্ত্রিত প্রভাব খাটিয়ে তা নষ্ট করতে চায়।
বাইডেন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ ভুল তথ্যের নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছেন। এই মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও বিপদের মুখে। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের ধারণা ভেঙে পড়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ফ্যাক্ট চেক হচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন,তিনি সংবিধানের সংশোধন চান। তিনি চান, কোনো প্রেসিডেন্ট যদি তার কার্যকালে কোনো অপরাধ করেন, তবে তার বিচার হবে।বাইডেন সারা বছরে যে অগ্রগতি করতে পারেননি, সেটি এক বৈঠকেই করে দেখিয়েছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
ইসরায়েলের গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফের কঠিন চাপের মুখে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আগের কিছু অনঢ় অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত শনিবার ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর জেরুজালেম কার্যালয়ে তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন উইটকফ। সেখানেই তিনি চুক্তির জন্য নেতানিয়াহুকে প্রয়োজনীয় আপোস করার আহ্বান জানান বলে জানিয়েছেন দুই আরব কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার ‘টাইমস অব ইসরায়েল’কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তারা বলেন, আলোচনার অগ্রগতিতে এ বৈঠক অনেকটাই সফল হয়েছে। বিশেষ করে জিম্মি মুক্তি নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে। তবে উইটকফ বা নেতানিয়াহুর কার্যালয় কোনও পক্ষই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় থাকার এই শেষ সপ্তাহে একটি চুক্তির জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে এসেছে। তাদের সঙ্গে এ কাজে সমন্বয় করেন ভাবি প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত নতুন প্রশাসনিক টিম।
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত উইটকফ আলোচনার মূল মঞ্চ ইসরায়েল এবং কাতার দুই জায়গাতেই ভ্রমণ করেছেন।
ট্রাম্পের দূত জিম্মি মুক্তির আলোচনায় অংশ নিতে গত এক সপ্তাহ দোহায় ছিলেন। শনিবার তিনি ইসরায়েলে যান। মূলত, তার চাপেই মধ্যস্থতাকারীরা ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের অভিষেকের আগেই গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করেন।
জেরুজালেমে নেতানিয়াহু ও উইটকফের বৈঠকের দুই দিন পর সোমবার রাতে ইসরায়েল ও হামাসের আলোচনাকারী দলগুলো মধ্যস্থতাকারীদের জানায়,তারা জিম্মি চুক্তির প্রস্তাব নীতিগতভাবে গ্রহণ করেছে।
মূলত ট্রাম্পের এ দূতের কল্যাণেই বুধবার (১৫জানুয়ারি) যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে দুই পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছায়। আগামী ররিবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি।বুধবার রাতে দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কাতারের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির যে চুক্তি হয়েছে তা ১৯ জানুয়ারি রবিবার থেকে কার্যকর হবে।

 

ডেইলি খবর টুয়েন্টিফোর

Link copied!